কোলন বিশ্ববিদ্যালয়
২৪ ডিসেম্বর ২০১২জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব কোলন তাদের গবেষণার জন্য বেশ সুনাম কুড়িয়েছে৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের একটি অংশ বিদেশি৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের শতকরা ১২ ভাগ এবং শিক্ষকদের শতকরা ছয় ভাগ বিদেশ থেকে আসা৷ প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বাড়ছে৷ যেমন ২০১১-১২ শীতকালীন সেমেস্টারে ভর্তি হয় ৪,৫৪১ জন বিদেশি শিক্ষার্থী৷ এই বছরের শীতকালীন সেমেস্টারে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৬২৪ জনে৷ শিক্ষাদানের পদ্ধতি ও মানের কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াটা ছাত্রছাত্রীদের অন্যতম লক্ষ্য হয়ে থাকে৷
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ছয়টি ফ্যাকাল্টি যার অধীনে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স করার সুযোগ রয়েছে৷ এই ফ্যাকাল্টিগুলো হলো: ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান, আইন, ওষুধ, কলা ও মানবিক, গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং মানবিক বিজ্ঞান৷ বিদেশি শিক্ষার্থীদের অনেকে এখানে ডাবল প্রোগ্রামেও অংশ নিয়ে থাকে৷ অর্থাৎ মাস্টার্স কোর্সের অর্ধেক নিজ দেশে এবং বাকিটুকু কোলন ইউনিভার্সিটিতে করার সুযোগ রয়েছে৷
শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বৃত্তির সুযোগ সুবিধা৷ চলতি বছর মোট ২৯৫ জন ছাত্রছাত্রীকে নানা ধরণের বৃত্তি দেওয়া হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি৷ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে জব পোর্টাল, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা নানা ধরণের পার্টটাইম জব এর জন্য আবেদন করতে পারে৷ কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের সুযোগ সুবিধার দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়৷ ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্ষেত্রে সমান অধিকার পায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে৷
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন বাংলাদেশের ছাত্র জয় ভৌমিক৷ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে অনার্স শেষ করার পর কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন মাস্টার্স করার জন্য৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার ব্যাচেলর্স যেহেতু উদ্ভিদ বিজ্ঞানে তাই আমার আগে থেকেই লক্ষ্য ছিল বিদেশে পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার৷ যাতে দেশে ফিরে গিয়ে পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে পারি৷ আমি নেটে সার্চ করে দেখলাম কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগটি বেশ পরিচিত৷ তাই আমি এখানে ভর্তির আবেদন করি৷''
আবেদন করার পর ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যায় ৷ জয় ভৌমিক জানান, ভর্তির ফরম জমা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জবাব আসতে আর ভর্তি হতে তার দুই মাস লেগেছে৷
কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিষয়ে ইংরেজিতে পড়ার সুযোগ রয়েছে৷ আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিজ্ঞান তার মধ্যে একটি৷ বাংলাদেশি ছাত্র জয় এই বিষয়ে বলেন, ‘‘কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে পড়ার সুযোগ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কিছুটা কম৷ তবে কিছু বিষয় যেমন পরিবেশ বিজ্ঞান, কালচার ইন আফ্রিকা বলে আরও একটি বিভাগ আছে এসব জায়গাতে ইংরেজিতে পড়ার সুযোগ আছে৷ এইসব বিভাগের সামনে আন্তর্জাতিক শব্দটি লাগানো থাকে৷''
বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্মান ভাষা শেখার কোর্স আছে৷ যারা বৃত্তি নিয়ে আসে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই এইসব কোর্সে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়৷ তবে যাদের বৃত্তি নেই তাদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে জার্মান ভাষা শেখানোর কোর্সের ব্যবস্থা করা হয়, বলে জানালেন জয় ভৌমিক৷