জার্মানিতে পড়াশোনায় ভিসার প্রশ্ন
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ভিসার ক্ষেত্রে সবার আগে যে প্রশ্ন আসবে তা হল আপনি কোন দেশের৷ জার্মানি বা ইউরোপে প্রবেশ করতে আপনার ভিসার আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা৷ এর পাশাপাশি আরেকটি প্রশ্ন হল জার্মানিতে আপনি কেন আসবেন, কী করবেন এখানে৷
অ্যামেরিকাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কিছু দেশের মানুষ যদি জার্মানিতে আসতে চায় তাহলে ভিসার প্রয়োজন হয় না৷ তবে দীর্ঘসময় থাকতে হলে যে কারো ভিসার প্রয়োজন৷ সেটা কাজ, পড়াশোনা বা স্থায়ীভাবে থাকা হোক না কেন৷
দু ধরণের ভিসা দিয়ে থাকে জার্মান দূতাবাস৷ শেঙেন ভিসা এবং ন্যাশনাল ভিসা৷ শেঙেন ভিসা সাধারণত দেওয়া হয় অল্প সময়ে ইউরোপে থাকার জন্য৷ সেটা ইউরোপের যে কোন দেশ হতে পারে৷ তবে তার মেয়াদ কখনোই তিন মাসের বেশি হয় না৷ অর্থাৎ আপনি যদি ভিসার মেয়াদ ইউরোপে এসে বাড়াতে না পারেন তাহলে তিন মাসের মধ্যে আপনাকে ইউরোপ ত্যাগ করতে হবে৷ নয়তো আপনাকে অবৈধ অভিবাসী বলে ধরে নেওয়া হবে৷ যে কারণে শেঙেন ভিসা নিয়ে পড়াশোনা করতে আসা খুব একটা যৌক্তিক হবে না৷ শেঙেন ভিসা সাধারণত তাদের দেওয়া হয় যারা এক মাস বা ছয় সপ্তাহের বিভিন্ন কোর্সে জার্মানিতে আসেন৷ কোন কোন সময় সেই কোর্সের মেয়াদ দুই মাসও হতে পারে৷ কিন্তু কোন অবস্থাতেই কোর্স বা ট্রেনিং তিন মাসের বেশি হবে না৷ তিন মাসের বেশি হলে শেঙেন ভিসা নয়, আবেদন করতে হবে ন্যাশনাল ভিসার জন্য৷
ন্যাশনাল ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব৷ এই ভিসার সাহায্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা সম্ভব৷ কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার্ড স্টুডেন্ট হলে ভিসা অফিস ভিসা বাড়াতে বাধ্য৷ আপনি যদি পড়াশোনার জন্য আসতে চান জার্মান দূতাবাস বলে দেবে কোন ধরণের ভিসা আপনার প্রয়োজন৷ তবে আপনার পড়াশোনা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র আপনাকে দেখাতে হবে৷
আপনি যদি পিএইচডি করতে চান সেক্ষেত্রেও আপনাকে ন্যাশনাল ভিসা নিতে হবে৷ শেঙেন ভিসা আপনাকে সাহায্য করবে না৷ তবে ভিসার জন্য আবেদন করার আগে অনুগ্রহ করে জার্মান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ নির্দিষ্ট করে শুধুমাত্র দূতাবাসই বলতে পারবে কোন ধরণের কাগজপত্র দেখাতে হবে৷ ভিসা ফর্ম পূরণেও দূতাবাস সাহায্য করবে৷
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য তৃতীয় বিশ্বের দেশের বাসিন্দাদের অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন৷ তবে যে সব কাগজ পত্র অবশ্যই দূতাবাসে দেখাতে হবে তা হল:
- জার্মানির কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন তার প্রমাণ
- হেল্থ ইন্সুরেন্স পলিসির কপি৷ এই ইন্সুরেন্স হতে হবে জার্মানির
- নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট, মার্কশিটসহ
- আপনি জার্মান ভাষা জানেন তার প্রমাণ৷ এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন, শুধু গ্যোয়েটে ইন্সটিটিউ এবং মাক্স মুলার ভবনের সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য হবে৷
- যদি বৃত্তি না পেয়ে থাকেন কীভাবে খরচ বহন করবেন তা বিস্তারিত দেখাতে হবে৷ দূতাবাস অনেক ধরণের কাগজ পত্রের দাবি করতে পারে৷ তার প্রতিটিই আপনাকে দেখাতে হবে৷ আপনি যদি দু'বছর জার্মানিতে পড়াশোনা করেন তাহলে – পুরো দুই বছরের খরচ একসঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন তা দেখতে চাইতে পারে দূতাবাস৷ সেই অর্থের পরিমাণ হতে পারে কুড়ি লক্ষ টাকা বা তারও বেশি৷
তবে ভিসা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল বৃত্তি পাওয়া৷ আপনি যদি বৃত্তি পান তাহলে অনেক কাগজপত্রই আপনাকে হয়ত দেখাতে হবে না৷ এমনকি দূতাবাসে আপনার ইন্টারভিউও অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে৷ তাই চেষ্টা করুন বৃত্তিসহ জার্মানিতে আসতে৷
আরেক ধরণের ভিসা দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের তাহল ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স ভিসা৷ তবে এই ভিসা নেওয়ার আগে জার্মানির যে কোন ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনাকে ভর্তি হতে হবে৷ এই ভিসার মেয়াদ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সের মোয়াদের সমতুল্য হবে৷ যেমন - আপনার কোর্স দুই মাসের৷ ১লা আগষ্ট থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর৷ আপনার ভিসার সময়সীমা হবে ২৮শে জুলাই থেকে ২রা অক্টোবর৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক