1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতেও বেতন বৈষম্যের শিকার শিক্ষকেরা, তবে ধর্মঘটে বাধা

ডয়চে ভেলের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম মূলত রাজনীতি, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, শরণার্থী এবং অভিবাসন সম্পর্কিত ইস্যু কভার করেন৷ পাশাপাশি জার্মানি ও ইউরোপে জীবনযাপনের নানা দিকও তুলে ধরেন তিনি৷
আরাফাতুল ইসলাম
২৮ জুলাই ২০২৩

জার্মানিতে শিক্ষকরা মূলত দুই শ্রেণীতে বিভক্ত৷ আর এই দুই শ্রেণীর মধ্যে বেতন এবং অন্যান্য সুবিধায় তারতম্য রয়েছে৷ এদের একটি শ্রেণীর আবার ধর্মঘটের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ারও সুযোগ নেই৷

https://p.dw.com/p/4UVgK
Bangladesch Bildung l Lehrer streiken in Dhaka
ছবি: Mortuza Rashed/DW

জার্মানিতে শিক্ষকদের চাহিদা অনেক৷ যেসময় এই মতামত লিখছি, তখনও অন্তত হাজার ত্রিশেক পদ শূণ্য পড়ে রয়েছে৷ এসব পদ পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না৷ এরকম অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ ৭০ হাজার শিক্ষকের ঘাটতি তৈরি হতে পারে ইউরোপের কেন্দ্রের দেশটিতে৷

জার্মানিতে শিক্ষকদের অভাবের বিষয়টি ছাড়াও আরো একটি বিষয় নিয়ে মাঝেমাঝেই আলোচনা হয়৷ সেটা হচ্ছে বেতন বৈষম্য৷ জার্মানির ষোলটি রাজ্য মূলত নিজেরা নিজেদের মতো করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে৷ ফলে রাজ্যভেদে নিয়োগের ধরন আলাদা হতে পারে, বেতনও আলাদা হতে পারে৷

শিক্ষকদের যোগ্যতা একইরকম হলেও মূলত দুই ধরনের মর্যাদা দেয়া হয় তাদের৷ একটি হচ্ছে, ‘বেয়ামটে' বা পূর্ণাঙ্গ সরকারি কর্মচারী৷ অন্যটি, ‘আনগেস্টেলটে' বা নিয়মিত কর্মচারী৷

জার্মানির আটলাখের বেশি শিক্ষকের চারভাগের তিনভাগই পূর্ণাঙ্গ সরকারি কর্মচারী৷ তাদের চাকুরি হারানোর শঙ্কা নেই, পারফর্মেন্স নিয়ে তেমন ভাবতে হয় না৷ বরং অপেক্ষাকৃত ভালো বেতন এবং শেষ বয়সে অবসর ভাতাও ভালোই পাওয়া যায়৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: Ayse Tasci/DW

তবে, বাকি অংশ যারা একই ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পূর্ণাঙ্গ সরকারি কর্মচারী নয়, বরং নিয়মিত কর্মচারী হিসেবে পরিচিত, তাদেরক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা৷ এই অংশের বেতন অপেক্ষাকৃত কম এবং অবসর ভাতা ও স্বাস্থ্যবীমার ধরনও আলাদা৷

জার্মানিতে শিক্ষকদের দুই ধরনের চুক্তির মধ্যকার ব্যবধান কমাতে কখনো কখনো আন্দোলনও হয়৷ এরকম এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া এক শিক্ষক জানিয়েছিলেন, ত্রিশ বছর চাকুরি করে তিনি যে বেতন পেয়েছেন, একই সময় একই চাকুরি করে তারচেয়ে প্রায় দুই লাখ ইউরো বা দুই কোটি টাকা বেশি পেয়েছেন সরকারি কর্মচারি হিসেবে স্বীকৃত শিক্ষকটি৷

এই ব্যবধান অবশ্য কমিয়ে আনার চেষ্টাও করছে জার্মান সরকার৷ বিভিন্ন সময়ে বেতন, ভাতা বাড়ানো হয়েছে৷

নিয়মিত কর্মচারী হিসেবে যারা চাকুরি করছেন তাদের অবশ্য একটি অধিকার রয়েছে৷ সেটা হচ্ছে, ধর্মঘট করার অধিকার৷ এই অংশ নিজেদের বেতন ভাতা বাড়াতে বা বৈষম্যের শিকার হওয়ার বিষয় নিয়ে চাইলেই ধর্মঘটের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন৷ কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সরকারি কর্মচারী মর্যাদা পাওয়া অংশটি তা পারে না৷

জার্মান আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীরা ধর্মঘট করতে পারেন না৷ চার শিক্ষক প্রতিবাদের এই অধিকারের দাবিতে ২০১৮ সালে সাংবিধানিক আদালতে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু জার্মানির সর্বোচ্চ এই আদালত রায় দিয়েছেন যে সরকারি কর্মচারীরা ধর্মঘটে অংশ নিতে পারবেন না৷ এবং এই নিষেধাজ্ঞা জার্মানির ‘বেসিক ল' এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়!