জার্মানদের কিছু সনাতন ভদ্রতা যা এখনো প্রাসঙ্গিক
অষ্টাদশ শতকের লেখক এডল্ফ ফ্রাইহের ফন ক্নিগেকে জার্মানির ভদ্রতাজ্ঞান বিষয়ক গুরু ভাবা হয়৷ ভদ্রতা বিষয়ক তাঁর তৈরি নিয়মগুলো জানা থাকলে আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন৷
জার্মানির ভদ্রতাজ্ঞান বিষয়ক কর্তৃপক্ষ: দ্য ক্নিগে
১৭৮৮ সালে ‘প্রাক্টিক্যাল ফিলোসফি অফ সোশ্যাল লাইফ’ লেখেন এডল্ফ ফ্রাইহের ফন ক্নিগে৷ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেয়া৷ তিনি তখন সম্ভবত ভাবেননি যে এটা ভদ্রতা জ্ঞানের উৎস হয়ে উঠবে৷ বর্তমানে জার্মানিতে ভদ্রতা জ্ঞানের সমার্থক শব্দই ‘ক্নিগে’৷
উপযুক্ত পোশাক পরুন
কোন ইভেন্টে কী ধরনের পোশাক পরা উচিত সেটা নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকেন অনেকে৷ এক্ষেত্রে ক্নিগের পরামর্শ হচ্ছে, এমন পোশাক পরতে হবে যেটা পরিস্থিতির চেয়ে বেশি উঁচু বা বেশি নীচু নয়৷ মোট কথা, বাড়াবাড়ি পর্যায়ের কিছু না করাই উত্তম৷
আলাপচারিতার সময় স্বকামী না হলেই ভালো
কোনো উৎসবে অন্যের সঙ্গে খুচরা আলাপের সময় স্বকামী বা নিজের প্রশংসা নিজেই বাড়াবাড়ি রকম না করাই ভালো, পরামর্শ দিয়েছেন ক্নিগে৷ বরং যার সঙ্গে কথা বলছেন তাঁর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং নিজের কাজ বা এ ধরনের বিষয় নিয়ে কথা বলুন৷
চাটুকারিতা নয়
ক্নিগে মনে করেন, চাটুকারিতা স্বকামিতার মতোই একটি ব্যাপার৷ অকারণে শুধু প্রশংসা জার্মানরা পছন্দ করে না৷ কারো কিছু ভালো না লাগলে সেটা ভদ্রভাবে বলে দিতে সমস্যা নেই৷
মজার হোন
আপনার সঙ্গীদের আনন্দ দিতে কৌতুক মুখস্ত করার প্রয়োজন নেই৷ ক্নিগে মনে করেন, যারা শুরুতে অনেক কৌতুক বলেন, তারা আসলে সঙ্গীদের মধ্যে একটি ক্ষণস্থায়ী প্রভাব তৈরি করেন এবং খুব অল্প মানুষই এতে আগ্রহ বোধ করে৷ বরং প্রাকৃতিকভাবে বা সময় অনুযায়ী মজার কিছু পেলে সেটা ভালো৷
গসিপ নয়
কোনো ইভেন্টে উপস্থিত থাকা কারো সম্পর্কে আপনার বন্ধুর সঙ্গে গসিপ না করাই ভালো৷ আর একান্ত যদি করতেই হয়, সেটা বিচক্ষণতার সঙ্গে করলে ভালো৷ সামাজিক ইভেন্টে কারো কারো কানের কাছে ফিসফিস করে কথা বলা ঠিক শোভন নয়, মোটের উপর যাকে নিয়ে গসিপ করছেন তার দিকে তাকিয়ে সেটা না করাই ভালো বলে মনে করেন ক্নিগে৷
উদীয়মান প্রতিভাদের বাড়াবাড়ি প্রশংসা নয়
উদীয়মান প্রতিভাদের প্রশংসা করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ক্নিগে৷ তিনি মনে করেন, উদীয়মানদের উৎসাহ দিতে বিনয়ী সাধুবাদই যথেষ্ট৷ বাড়াবাড়ি রকমের প্রশংসা বা চাটুকারিতা হিতে বিপরীত হতে পারে৷ উল্লেখ্য, ‘জার্মান প্রেস বলকে’ কেন্দ্র করে পরামর্শগুলো দেয়া হলেও বাস্তব জীবনেও তা বেশ প্রযোজ্য৷