জামাকাপড়ে টুনি বাল্ব?
১৩ মার্চ ২০১৫ইলেকট্রিক বাল্ব এতো বিদ্যুৎ খায় যে, বিশ্বের বহু দেশে তার বিক্রি নিষিদ্ধ৷ এছাড়া ভবিষ্যতে আলোর জন্য ইলেকট্রিক বাল্বের প্রয়োজন পড়বে বলে রোগির ফান ডের হাইডে মনে করেন না৷ নেদারল্যান্ডসের মানুষ রোগির ‘লাইটোপিয়া' নামের একটি ভ্রাম্যমান প্রদর্শনীর সহ-উদ্যোক্তা৷ প্রদর্শনীর উপজীব্য: আলোকবাতির ভবিষ্যৎ৷ রোগির বলেন: ‘‘আলোর মূল কথা হল, তা সব কিছু ছুঁয়ে যায়৷ আলোই আমাদের জীবন এবং সব আলোর উৎস সূর্যই পৃথিবীতে শক্তি জোগায়৷''
রাতে আলো জ্বালানো, রাতকে দিন করা, এটা চিরকালই মানবজাতির স্বপ্ন এবং তা থেকেই আমরা একটির পর একটি নতুন ধরনের বাতি তৈরি করে চলেছি৷ ঊনবিংশ শতকে আসে ইলেকট্রিক বাতি, এক যুগান্তকারী আবিষ্কার৷ মানুষ সত্যিই রাতকে দিন করার ক্ষমতা হাতে পায়৷ তারপর এক'শো বছরের বেশি সময় ধরে ঐ ইলেকট্রিক বাতিই ছিল সম্বল৷ তবে লোকের খেয়াল হয় যে, ইলেকট্রিক বাল্ব বড় বেশি কারেন্ট খায়৷ রোগির বলেন:‘‘আপাতত একটি বড় রকমের বিপ্লব চলেছে, কেননা আলোকবাতিও এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে – যেমন ফটোগ্রাফি ডিজিটাল হয়ে যায়, মিউজিক ডিজিটাল হয়ে যায়, গোটা শিল্পকেই বদলে দেয়, আমরা কী ভাবে ছবি তুলি আর গান শুনি, তা বদলে দেয়৷ আলোর ক্ষেত্রেও তাই ঘটছে৷ আমরা আলো নিয়ে আরো অনেক কিছু করতে পারি, আরো অনেক বেশি মানুষ আলো নিয়ে আরো অনেক কিছু করতে পারেন৷''
আলো-ছায়া
আলো আর ছায়ার সংজ্ঞাই বদলে যাচ্ছে৷ নতুন ধরনের আলোতে আরো কম বিদ্যুৎ লাগে, এবং তা ডিজিটাল প্রণালীতে বাড়ানো-কমানো যায়৷ সেটা আমাদের জীবনযাত্রার ধরন বদলে দেবে – যেমন বাইরে, তেমনই ভিতরে৷
আর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হলো এলইডি বা লাইট এমিটিং ডায়োড৷ অরগ্যানিক লাইট এমিটিং ডায়োড নিয়েও কাজ চলেছে৷ রোগির ফান ডের হাইডে ও তাঁর সহযোগীরা আমস্টারডামের রাইক্স মিউজিয়ামে রক্ষিত সুবিখ্যাত ‘নাইটওয়াচ' ছবিটিতে এলইডি আলো ফেলে সম্পূর্ণ অন্য আলোকসজ্জা প্রদান করেছেন৷ তার ফলে রেমব্রান্ট-এর সুবিশাল চিত্রটির কোনো রঙ বদলে যায়নি কিংবা অন্যরকম দেখায়নি৷ রোগির উচ্ছ্বসিত:
‘‘একটি এলইডি আলো যে কোনোদিন রেমব্রান্ট ফান রাইন-এর ‘নিশীথ প্রহরা'-র মতো একটি অমূল্য এবং অসাধারণ চিত্রকে অলঙ্কৃত করবে, তা কোনোদিন ভাবা যায়নি৷''
‘লাইটোপিয়া'
ফ্যাশনদুরস্ত মানুষদের জন্য আসছে: আলোকোজ্জ্বল পরিধেয়৷ ‘লাইটোপিয়া' প্রদর্শনীর পরিচালিকা ইওলান্টে কুগলার বলেন: ,
‘‘সাধারণ কাপড় বোনার যন্ত্রেই আজকাল এমন সব কাপড় তৈরি করা যায়, যা আগের মতোই নরম, নমনীয়, ঠিক আসল বস্ত্রের মতো – কিন্তু সেই কাপড়ের মধ্যে এলইডি আলো বসানো কিংবা লুকনো আছে৷ তা এলইডি না হয়ে সোলার সেল হয়ে পারে, সেন্সর হতে পারে: একবার হাত বোলালেই আলো জ্বলে উঠবে, এমন কিছু৷ কাপড় বোনার সময় তার মধ্যে ক্লোজড সার্কিট বসানো যায় কী করে, সে সমস্যা সমাধান হবার পর এখন সব কিছুই সম্ভব৷....যেমন এলইডি যুক্ত কাপড় দেখতে খুব মনোহারী না হতে পারে, কিন্তু তা ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যায়৷''
এই আলোকবস্ত্রের নাম ‘এলুমিনো': ভবিষ্যতের পরিধেয়৷