জাপানে গণকবরে ১৯ শতকের মহামারির আলামত
জাপানের প্রত্নতত্ত্ববিদেরা উনবিংশ শতকের একটি গণকবরের সন্ধান পেয়েছেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, কোনো এক মহামারির কারণে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের এখানে কবর দেয়া হয়েছে৷ এসব কবরে নানা বাসনকোসন, মুদ্রা এবং প্রাণীর মরদেহও পাওয়া গেছে৷
দেড় হাজার মৃতদেহ
ওসাকা শহর পুনর্নিমাণের উদ্যোগ নিতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করে শহর কর্তৃপক্ষ৷ তখনই মাটির তলা থেকে একে একে বের হয়ে আসে ১,৫০০ মরদেহ৷ ওসাকা সিটি কালচারাল প্রোপার্টিজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, এসব মরদেহ অন্তত ১৬০ বছর আগের৷ ওসাকা শহরে এমন গণকবরের সন্ধান এবারই প্রথম৷ সন্ধান পাওয়া মরদেহের মধ্যে অনেকগুলোই শিশুদের বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি৷
সাত কবরস্থানের একটি
১৮৫০ এবং ১৮৬০ এর দশকে এদো ও মেইজি শাসনামলে ওসাকার আশেপাশে সাতটি ঐতিহাসিক কবরস্থান ছিল বলে ধারণা করা হয়৷ এর মধ্যে একটি ছিল উমেদা কবরস্থান৷ ওসাকা কেন্দ্রীয় রেলস্টেশনের পাশে একটি কৃষি জমিতে খননকাজ চালাতে গিয়ে আবিষ্কার হওয়া এই গণকবরটিই সেই উমেদা কবরস্থান বলে প্রাথমিক ধারণা গবেষকদের৷
মহামারির আভাস
অনেক মরদেহই পাওয়া গেছে ছোট ছোট গর্তে৷ অনেকের অঙ্গে রোগের চিহ্ন পাওয়া গেছে৷ প্রত্নতাত্ত্বিকেরা একই কফিনের মধ্যে একাধিক মরদেহও পেয়েছেন৷ তাদের ধারণা কোনো এক মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ ফলে জীবাণু ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেই দেয়া হয়েছে এমন গণকবর৷
কবরে প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু
কেবল মরদেহই নয়, এই গণকবরে কঙ্কালের পাশাপাশি নানা ধরনের মুদ্রা, প্রার্থনার জিনিস, চিরুনি, বাসনকোসন এমনকি মাটির পুতুলও পাওয়া গেছে৷ গবেষকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, যারা মারা গিয়েছেন তাদের বিভিন্ন প্রিয় জিনিস তাদের সঙ্গে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া কবরে ৩৫০ কলস, শূকর, ঘোড়া এবং বেড়ালের মরদেহেরও সন্ধান মিলেছে৷
আরো গবেষণা
এরই মধ্যে মরদেহগুলো নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে৷ কিছু গবেষক জানিয়েছেন, মরদেহগুলো যে সময়কার বলে ধারণা করা হচ্ছে, সে সময় ওসাকা শহরে সিফিলিসের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল৷ ফলে এই মরদেহগুলোও সিফিলিসে মারা যাওয়া রোগীদের হতে পারে৷ আগামী বছরের শেষের দিকে এ বিষয়ে গবেষণার পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ করা যেতে পারে বলে আশা করছেন গবেষকেরা৷