1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাজের ঠিকানা ‘জাইকা’

২২ জুলাই ২০১২

দীর্ঘ সময় কাজ করে এবং স্বল্প পরিমাণ ছুটি ভোগ করে কর্মব্যস্ত পেশাগত জীবন কাটাতে হয় জাপানিদের৷ তাই অবসর জীবনটা তাদের ন্যায্য পাওনাই বলা চলে৷ তবুও কর্মঠ জাপানিরা এখন অবসর জীবনে বেছে নিচ্ছেন ভিনদেশে কোন আকর্ষণীয় কাজ৷

https://p.dw.com/p/15cph
A job seeker,seated, receives advice Monday, April 26, 1999 from a staffer at Hello Work Job Information Plaza in Tokyo, a newly opened government-run job placement center equipped with computers to cope with increasing unemployment rate. The government announced Friday, April 30, 1999 Japan's jobless rate shot up to yet another record high of 4.8 percent in March, as corporate restructuring efforts force more people out of work. (AP Photo/Shizuo Kambayashi)
ছবি: AP

জীবনের বয়স ষাট বছরের কাছাকাছি আসতেই তোশিও হিরুচি ভাবতে শুরু করেন অবসর জীবনের কথা৷ তথ্য প্রযুক্তির নামকরা প্রতিষ্ঠান ফুজিৎসু'তে প্রায় তিন দশক কাজ করেছেন হিরুচি৷ ১৯৭৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন তিনি৷ সেসময় বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশালাকারের কম্পিউটার ব্যবহার করা হতো৷ এসব বহুমুখী কাজ করার ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার তৈরির প্রোগ্রামিং কাজে যোগ দিয়েছিলেন হিরুচি৷

‘‘কিন্তু ব্যক্তিগত কম্পিউটার তথা পিসি'র আত্মপ্রকাশ ঘটায় ফুজিৎসু পিসি তৈরির দিকে মন দেয়৷ আর সেজন্য তরুণ প্রযুক্তবিদদের নিয়োগ দেওয়া হয়৷ ফলে আমাদের প্রজন্মের কর্মীদের অনেকটা জোর করেই উদ্ভাবনী কাজ থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক শাখায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়'', বলেন হিরুচি৷ বর্তমানে ৬৬ বছর বয়সি হিরুচি জানান, ‘‘প্রতিষ্ঠানে এই পরিবর্তন আমাকে অবসর জীবনে নতুন কোন কাজ করার কথা ভাবতে শেখায়৷''

হিরুচি'র সেই ভাবনার উত্তর মিলেছে জাপান সরকারের আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি - জাইকা'র কাছ থেকে৷ জাইকা ৪০ থেকে ৬৯ বছর বয়সি বিভিন্ন পেশার মানুষকে বিভিন্ন দেশে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে৷ জাইকা'র এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রতি বছর এশিয়া, ল্যাটিন অ্যামেরিকা, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ৬০টি দেশে ৪৭০ জন দক্ষ জাপানিকে পাঠানো হয়৷ জাইকা'র ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, এসব স্বেচ্ছাসেবক ‘বিভিন্ন দেশের সাথে জাপানের পারস্পরিক বন্ধুত্ব এবং সমঝোতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করেন৷' এছাড়া তাঁদের অনেকে সেসব দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করেন৷ উল্লেখ্য, ল্যাটিন অ্যামেরিকার দেশগুলোতে কর্মরত জাইকা'র স্বেচ্ছাসেবকদের মাসে এক হাজার ডলার করে সম্মানি দেওয়া হয়৷ এছাড়া তাদের জন্য বিমানের টিকেট এবং যাতায়াত খরচও প্রদান করা হয়৷

হিরুচির ক্ষেত্রেও ঘুরে গেছে নিজের জীবন আলেখ্য৷ ৫৮ বছর বয়সে পৌঁছে তিনি আবারও বইয়ের তাকের ধুলো সরিয়ে ইংরেজি এবং স্প্যানিশ ভাষা শেখা শুরু করেন৷ সাক্ষাৎকার গ্রহণ, প্রতিবেদন লেখা এবং ছাপাখানা প্রতিষ্ঠানের সাথে দরকষাকষি করা - এসবকিছুই তাঁর কাছে সম্পূর্ণ নতুন বিষয় ছিল৷ তারপরেও এগুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই গ্রহণ করেন হিরুচি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি কাজ করতে গিয়ে বুঝলাম, স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজের জগতটি এমন যে, সেখানে তোমার দৃঢ় ইচ্ছা এবং আগ্রহ এক নতুন দিগন্ত খুলে দেয়৷''

জাপানের বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী মানুষদের কর্মসংস্থান বিষয়ক সংস্থা জেইইডি'র প্রধান গবেষক টেটসুও কাওয়াউচি বলেন, ‘‘জাইকা'তে যেসব বয়স্ক মানুষ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজের জন্য আবেদন করে তাদের অধিকাংশই দক্ষ কর্মী, ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ করে আসা এবং মোটা অঙ্কের অবসরভাতা ভোগকারী৷ ফলে তারা অর্থ উপার্জনের চেয়ে বরং জীবনে নতুন কিছু করার আনন্দ পাওয়ার জন্যই কাজ করে৷''

তবে কাওয়াউচি'র মতে, জাইকা এবং জাপান সরকারকে এখন ভাবতে হবে যে, এসব বয়স্ক মানুষের কাজের মধ্য দিয়ে কীভাবে জাপান আরো বেশি উপকৃত হতে পারে৷ তিনি জানান, ‘‘বর্তমানে ৬০ বছর বয়সের অনেক অবসরপ্রাপ্ত জাপানিই অর্থনৈতিক কারণে কাজ চালিয়ে যেতে চান৷ কারণ সেখানে অবসর ভাতা কমে যাওয়ায় নিজেদের চিকিৎসা খরচ এবং তাদের পিতা-মাতার যত্ন নেওয়ার খরচ চালানো নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়ছে৷'' এছাড়া জাইকা ৬৯ বছর পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে গ্রহণ করে কিন্তু এর চেয়ে বেশি বয়স্কদের জন্য কোন কাজ নেই বললেই চলে৷ তাই ৭০ কিংবা ৮০'র ঘরে থাকা মানুষদের জন্যও কাজের সুবিধা সৃষ্টি করা দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷

এএইচ / এআই (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য