1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু সম্মেলনে আজ শুরু হচ্ছে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক

১৪ ডিসেম্বর ২০০৯

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একটি কার্যকরি উদ্যোগের দাবিতে পরিবেশবাদীদের বিক্ষোভ আর বিশ্বের প্রায় ১৯০টি দেশের প্রতিনিধিদের উত্তপ্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে ঘটনাবহুল একটি সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে জলবায়ু সম্মেলনের৷

https://p.dw.com/p/L1eA
জলবায়ু সম্মেলনে ইভো দ্য বুয়ার এবং কনি হেডেগার্ডছবি: DW

খসড়া ড্যানিশ প্রস্তাব ও ইইউ-এর অভিযোজন তহবিল

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল একটি খসড়া ড্যানিশ প্রস্তাব ফাঁস হয়ে যাওয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবিত অভিযোজন তহবিল৷ তবে এই দুটোর কোনটিই সন্তোষজনক ছিল না পরিবেশবাদী প্রতিনিধিদের কাছে৷ বিশেষ করে ইইউ ঘোষিত ৭.২ বিলিয়ন ইউরোর তহবিলকে অপর্যাপ্ত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রতিনিধিরা৷ প্রশ্ন উঠেছে, ধনী দেশগুলো যদি ইইউ এর মতো দায়সারা গোছের মাত্র তিন বছরের জন্য অর্থ সহায়তার কথা বলে, তবে তিন বছর পর এই হতভাগা মানুষগুলো কোথায় যাবে? অবশ্য, সম্মেলনের আয়োজকদের চোখে মুখে আশার রেখা এই ভেবে যে, ইইউ যেমন প্রস্তাব করেছে, তেমনি অন্যান্য ধনী গোষ্ঠীগুলোও তাদের সুস্পষ্ট প্রস্তাব নিয়ে হাজির হবে আলোচনার টেবিলে৷ রবিবার মূল সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা বন্ধ থাকলেও শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও ছোট ছোট সম্মেলন কেন্দ্রে এসব নিয়েই আলোচনা অব্যাহত ছিল৷

৪৮টি দেশের পরিবেশ মন্ত্রীরা পৌঁছলেন কোপেনহেগেনে

Proteste Klimagipfel Kopenhagen
শনিবারের বিক্ষোভকারীদের একাংশছবি: dpa

রবিবার কোপেনহেগেনে ৪৮টি দেশের পরিবেশ মন্ত্রীরা একত্রিত হন, তাঁদের মধ্যে জার্মান পরিবেশমন্ত্রী নর্বের্ট রোয়েটগেন এবং ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশও ছিলেন৷ জলবায়ু সম্মেলনের সভাপতি ডেনমার্কের কনি হেডেগার্ড রবিবার বলেন যে, ''এখনও বহু সমস্যার সমাধান করা বাকি আছে৷ তবে মন্ত্রীদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ইতিবাচক আগ্রহও প্রকাশ পেয়েছে৷'' ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ আশা ব্যক্ত করেন যে, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব হবে৷ এছাড়া জার্মান পরিবেশ মন্ত্রী নর্বের্ট রোয়েটগেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে একটি উন্নততর প্রস্তাব পেশ করার আহ্বান জানান৷ রোয়েটগেন একটি জার্মান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, মার্কিনিদের তাদের প্রস্তাব আরো বাড়াতে হবে, যেমন গ্যাস নির্গমনের লক্ষ্যের ক্ষেত্রে, তেমনই দরিদ্র দেশগুলির প্রতি আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে৷ এছাড়া তিনি নিজ দেশে আরো কয়লা-নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুল্লী নির্মাণের সপক্ষে মতপ্রকাশ করেন৷ আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক৷

পরিণত হয়েছে বিক্ষোভের নগরীতে

এদিকে, কোপেনহেগেন এখন পরিণত হয়েছে বিক্ষোভের নগরীতে৷ জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের একটি চুক্তিতে আসতে বাধ্য করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে রবিবারও কোপেনহেগেনের পথে পথে বিক্ষোভ হয়েছে৷ বিক্ষোভকারীরা কোপেনহেগেন বন্দর অবরোধ করে৷ শনিবার বেলা সেন্টার অভিমুখে যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হওয়া ৯৬৮ বিক্ষোভকারীকে রবিবার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে ডেনমার্ক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে৷ তবে রবিবার আবারও আড়াই শ' বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ৷ ডেনমার্ক ভিত্তিক 'ক্লিমা ফোরাম' রবিবার সারাদিন প্রতিবাদী কনসার্ট আয়োজন অব্যাহত রাখে৷ শহরের কেন্দ্রস্থল সিটি সেন্টারের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা বিশপ ডেসমন্ড টুটু৷ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বরের আগেই বিশ্বনেতাদের একটি চুক্তিতে পৌঁছতে হবে৷

Dänemark Flash-Galerie Kopenhagen Panorama
বর্তমানে বিক্ষোভ আর সম্মেলনের কোপেনহেগেনছবি: picture alliance / dpa

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচণ্ড শীতের মধ্যে তাদের অনেককে সারা রাত খোলা আকাশের নিচে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়৷ অনেকের ওপর চলে পুলিশি নির্যাতন৷ পুলিশ শীতের কাপড় কেড়ে নেওয়ায় অনেকের হাত-পা অবশ হয়ে যায় এবং বেশ কিছুসংখ্যক কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে৷ বিক্ষোভের সময় পুলিশ পথচারীসহ শিশু-কিশোরদের ওপরও হামলা চালিয়েছে বলে 'ক্লাইমেট চেঞ্জ মার্চ' নামের একটি সংগঠন থেকে অভিযোগ করা হয়েছে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী