ছাত্র রাজনীতির প্রতি বুয়েট শিক্ষার্থীদের অনীহার কারণ কী?
৫ এপ্রিল ২০২৪এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক৷ এই পর্বে আলোচনার মূল প্রশ্ন ছিল যে, বুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অধিকাংশ আসলে কী চায়?
এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে সঞ্চালক প্রশ্ন করেন সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা বুয়েটের শিক্ষার্থীদের একটি জরিপ বিষয়ে৷ খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, ‘‘বুয়েটের শিক্ষার্থীরা জনমত নিরীক্ষণের জন্য দুইদিনব্যাপী সমীক্ষা প্রচার করেছেন, সর্বমোট ৫৮৩৪ জন বুয়েট শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৮৩ জন, অর্থাৎ ৯৭%৷''
সঞ্চালক প্রশ্ন করেন যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকা রাজনীতির প্রতি এই প্রবল অনীহার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘‘জরিপে যারা অংশ নিয়েছে, তারা রাজনীতিকে বর্তমানে যেভাবে দেখছেন, তার ভিত্তিতে মতামত দিচ্ছেন৷ ৯৭% শিক্ষার্থী মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত৷ তারা রাজনীতির বিরুদ্ধে নয়, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে৷ এই অপরাজনীতিটিকেই মনে হচ্ছে রাজনীতি৷ এই অপরাজনীতি এখন এতটা ছড়িয়ে গেছে, প্রতিদিন পত্রপত্রিকায় তা দেখতে পাচ্ছি৷ ফলে, জনমনে এমন একটা ধারণা তৈরি হয়ে গেছে যে এটাই রাজনীতি৷ সুষ্ঠু রাজনীতি, সঠিক রাজনীতি যদি আনা যায়, তাহলে এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যাবে৷ আর তারা এখন যেভাবে আন্দোলন করছে, সেটাও তো রাজনীতির অংশ৷''
একই প্রসঙ্গে অধ্যাপক আইনুন নিশাত তুলে ধরেন বিকল্প রাজনীতি চর্চার প্রয়োজনীয়তার দিকটি৷ এমন ব্যবস্থা বাংলাদেশে সম্ভব কি না সেই প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, ‘‘সম্ভব হতে হবে, অন্য কোনো উপায় নেই৷ শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হলে করতে হবে৷ হ্যাঁ, অনেক বাধা আছে, রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র সংগঠনকে তাদের শক্তি নয়, অপশক্তি হিসাবে ব্যবহার করে৷ শক্তি হিসাবে ব্যবহার করেনা৷ অল্প দিন এই শক্তির পুরস্কার পায় বলেই সমাজের অধঃপতন হয়৷ বুয়েটে আমি মনে করি এখনও সুযোগ আছে৷''
অনুষ্ঠানের আজকের পর্বে এছাড়াও আলোচিত হয় শিক্ষার্থীদের দলীয় রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ, বিকল্প রাজনীতির পর্যাপ্ত উদাহরণ বাস্তবে না থাকা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার প্রসঙ্গও৷
এসএস/এআই