‘মণি’ মিথ্যা বলে না
২৪ মার্চ ২০১৪চোখের মণির আকার সমসময় পরিবর্তিত হয়৷ এটা নির্ভর করে আলোর গভীরতার ওপর৷ অন্ধকার পরিবেশে যতটা সম্ভব আলো প্রবেশ করানোর জন্য চোখের তারা বড় হয়ে যায়৷ আবার প্রখর সূর্যের আলোয় রেটিনাকে তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য ছোট হয়ে যায় মণি৷ চোখের তারার রঙিন অংশ বা কনীনিকা আলো আঁধারের এই নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী৷ তবে চোখের মণির আকারে প্রভাব পড়ার শুধু এটাই একমাত্র কারণ নয়৷
আনন্দ বা ভীতিতেও বড় হয়
আনন্দ বা ভীতিতেও চোখের তারা বড় হয়ে ওঠে৷ স্নায়ুতন্ত্রের এক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে৷ সেই প্রাচীন আমলেই যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বিপদে-আপদে বন্য জীবজন্তুর আক্রমণের সম্ভাবনা থাকলে মস্তিষ্ক কিছু বোঝার আগেই স্নায়ুতন্ত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়া হয়৷ এখন অবশ্য বন্য জন্তুর হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য পালাতে হয় না আমাদের৷ কিন্তু সহজাত প্রতিক্রিয়া এখনও অত্যাবশ্যকীয়, যেমন রাস্তায় ট্রাফিক চলাচলের ক্ষেত্রে বা দুর্ঘটনা ঘটলে৷ চোখের মণি বিস্তৃত হয়ে ভেতরের অস্থিরতা প্রকাশ করে৷ আর এটা হয় আনন্দ বা আতঙ্কে কোনো শব্দ উচ্চারণ করার আগেই৷ তবে ঘৃণা, ভয় বা আনন্দ, ঠিক কোন অনুভূতিটা চোখের তারায় ফুটে তা বোঝা যায় না৷
গবেষণায় নতুন বিষয় জানা গিয়েছে
আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ভিলেম ডে জি ও টোবিয়াস ডোনার চোখের মণি নিয়ে গবেষণা করে নতুন একটি বিষয় উদঘাটন করেছেন৷ তাঁদের এই গবেষণা অনুযায়ী চোখের মণির আকার দেখে মানুষের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানা যায়৷ অর্থাৎ মানুষ কোনো সিদ্ধান্ত হ্যাঁ বা না সূচক নেবে কিনা, তা চোখের মণি বোঝা যায়৷ সিদ্ধান্ত হ্যাঁ হলে চোখের তারা প্রসারিত হয়৷
এক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন মতও রয়েছে
চক্ষু চিকিত্সা বিজ্ঞান বা অপথ্যালমোলজি সোসাইটির হেলমুট ভিলহেল্ম অবশ্য এই তত্ত্ব মেনে নিতে নারাজ৷ তাঁর মতে, চোখের বিস্তৃত মণি শুধু এটাই প্রকাশ করে যে মানুষটি উত্তেজিত কিনা৷ কিন্তু কী ধরনের উত্তেজনা সেটা প্রকাশ করে না৷
‘‘কোনো মানুষ যদি মিথ্যা বলে এবং এই মিথ্যা ধরা পড়তে পারে বলে ভীত হয়, তাহলে তার চোখের মণি প্রসারিত হতে পারে৷'' তবে বিস্তৃত চোখের মণি আনন্দ ও স্বস্তির প্রকাশও হতে পারে৷ চোখের মণি মিথ্যা বলে না৷ তারা সত্যি বলে৷ কিন্তু ঠিক কোন সত্যিটি, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷