চেরনোবিল দুর্ঘটনার ৩০ বছর
২৬ এপ্রিল ২০১৬চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে চারটি পারমাণবিক চুল্লি ছিল৷ এর মধ্যে তিনটি থেকে ১৯৮৬ সালের দুর্ঘটনার ১৬ বছর পরও ব্যবহৃত পরমাণু জ্বালানি নির্গত হয়েছে৷ চতুর্থ চুল্লিতে এখনও ২০০ টন ইউরেনিয়াম আছে৷ ঐ চুল্লিকে ঘিরে থাকা কাঠামো অনেক পুরনো হওয়ায় যে কোনো সময় ভেঙে পড়ে আরেকটি দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে৷ ফলে চুল্লিটিকে চারদিক থেকে ইস্পাতের তৈরি গম্বুজাকৃতির একটি কাঠামো দিয়ে ঘিরে দেয়ার কাজ চলছে৷ ২০১০ সালে শুরু হওয়া এই কাজ শেষ করতে ২৫ হাজার টন ইস্পাত ব্যবহৃত হবে৷
এছাড়া চারটি চুল্লিতে থাকা ব্যবহৃত পরমাণু জ্বালানি নিরাপদে রাখতে নতুন একটি সংরক্ষণ কাঠামো তৈরি করা হবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই কাজে ৮৭.৫ মিলিয়ন ইউরো দেয়ার অঙ্গীকার করেছে৷ কাজটি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘ইউরোপিয়ান ব্যাংক ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট' (ইবিআরডি)৷ সংস্থার প্রধান সুমা চক্রবর্তী জানান, ‘‘এটি ইউক্রেন তথা বিশ্বের নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প৷''
তবে ভূগর্ভে লোহার বাক্সে করে বিষাক্ত পদার্থ সংরক্ষণ করে রাখতে ইউক্রেনের এখনও ১৫ মিলিয়ন ইউরো প্রয়োজন৷
চেরনোবিল দুর্ঘটনায় ঠিক কতজন প্রাণ হারিয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ ২০০৫ সালে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা চার হাজার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে৷ তবে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের দাবি, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা কম বলা হয়েছে৷
সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক নেতা মিখাইল গর্বাচেভ একসময় বলেছিলেন, তাঁর মনে হয় সোভিয়েত ইউনিয়নের কফিনে অন্যতম মূল পেরেক ছিল চেরনোবিল৷ উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়৷
চেরনোবিল দুর্ঘটনার কারণে সোভিয়েত ব্যবস্থার দূর্বলতাগুলো বিশ্বের সামনে উন্মুক্ত হয়েছিল৷ বিশেষ করে ঐ সরকারের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও তথ্য গোপন করে রাখার সংস্কৃতি বিশ্ববাসী জানতে পেরেছিল৷ যেমন চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর ঐ এলাকা খালি করার নির্দেশ আসতে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা লেগেছিল৷ সোভিয়েত প্রচারমাধ্যমেও সেই সময় নিয়ন্ত্রিতভাবে দুর্ঘটনার খবর প্রচারিত হয়েছিল৷
দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে আজ ইউক্রেনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)