চাঁদাবাজি সমস্যা
২০ জুলাই ২০১২চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা আসছে আম বোঝাই একটি ট্রাক৷ এই ট্রাকের পিছু নেন অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন৷ এরপর তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়ে মহাসড়কে পুলিশ এবং শ্রমিক নেতাদের জোর করে অর্থ আদায়ের বিভিন্ন দৃশ্য৷ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাক থামিয়ে অর্থ আদায় যেন এক স্বাভাবিক ঘটনা৷ কিন্তু ক্যামেরা দেখে ভরকে যায় অনেক পুলিশ সদস্য৷ শুরু হয় তাদের দৌড়াদৌড়ি৷ একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত এই প্রতিবেদনটি ব্যাপক আলোড়ন তোলে বাংলাদেশে৷
নাদিয়া শারমিন মনে করেন, মহাসড়কে এই চাঁদাবাজির প্রভাব পড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের উপর৷ কেননা, চাঁদা দেওয়ায় পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে যায় এবং ব্যবসায়ীরা সেই খরচ তোলেন তাদের ক্রেতাদের কাছ থেকে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ট্রাক ভাড়া বিভিন্ন কারণে এমনিতেই বেশি৷ তারমধ্যে মহাসড়কে বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে৷ টাকার অঙ্কে একেকবার হয়ত খুব বেশি টাকা নেওয়া হয় না, দু'শো বা চারশো টাকা নেওয়া হয়৷ কিন্তু এতবার এভাবে টাকা আদায় করা হয় যে সামগ্রিকভাবে অঙ্কটি বড় হয়ে যায়৷ এই টাকাটি পরিবহন খরচের সঙ্গে যোগ হয় এবং শেষ পর্যন্ত তা বহন করতে হয় সাধারণ ক্রেতাকে৷''
রোজার সময় পুলিশ এবং শ্রমিক নেতারা পণ্যবাহী ট্রাক থেকে আরো বেশি টাকা আদায় করবে, মনে করেন নাদিয়া শারমিন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতি বছর যেটা খেয়াল করি যে, রমজানকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি বেড়ে যায়৷ যেহেতু ঈদ করার জন্য পুলিশের চাহিদা একটু বেড়ে যায়, তাই এই সময়ে চাঁদাবাজিও বেড়ে যায়৷ এবং চাঁদাবাজি তারা খুব ‘ডেসপারেটলি' করে৷''
বলা বাহুল্য, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে গেছে৷ ঢাকা এবং যশোরে একাধিক সাংবাদিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে গত কয়েকমাসে৷ এরকম একটি পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতা বাংলাদেশে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ? এই প্রশ্নের জবাবে শারমিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতা এখন অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ৷ কারণ এখন সবাই জানে যে, সাংবাদিককে মারা যায় এবং মারার পরেও নিরাপদে থাকা যায়, বিচার হয় না৷ এই বিচার হয় না অবস্থাটা যতদিন পর্যন্ত চলতে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত একজন সাংবাদিক কোনো অবস্থাতেই নিরাপদ নয়৷''
সাক্ষাৎকার: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ