গ্রিসের জন্য ‘আইএমএফ-ইইউ’ যৌথ সহায়তার পক্ষে নেতারা
২৫ মার্চ ২০১০বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে দুই দিনের ইইউ অর্থনৈতিক সম্মেলনের প্রাক্কালে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছে ইইউ প্রেসিডেন্ট দেশ স্পেন৷ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও অনেকটা স্পষ্টভাবেই সেকথা বলেছেন৷
দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা মতানৈক্য দূর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা৷ গ্রিসকে সহায়তা করার বিষয়ে সব দেশই একমত হলেও দ্বন্দ্ব ছিল কিভাবে তা করা হবে তা নিয়ে৷ ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি নিঃসন্দেহে এই দরকষাকষির অন্যতম প্রধান নিয়ামক৷ জার্মানি বলে আসছে গ্রিসকে সরাসরি ঋণ দেওয়ার পক্ষে নয় তারা৷ কিন্তু, ফ্রান্স সহ অন্য কয়েকটি দেশ প্রয়োজনে সেটাই করতে চাইছে৷ এ অবস্থায় বিকল্প হিসেবে সামনে এসেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি যৌথ উদ্ধার পরিকল্পনার প্রস্তাবনা৷
ইইউর বর্তমান সভাপতি দেশ স্পেনের প্রধানমন্ত্রী হোসে লুইস রদ্রিগেজ সাপাতেরো বলেছেন, গ্রিক সংকট কাটাতে ‘আইএমএফ' এর একটি ভূমিকা হয়তো গ্রহণযোগ্য হতে পারে৷ তিনি বেশ প্রত্যয়ের সঙ্গেই বলেন, ‘‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা এটা পারবো৷ আমাদের পারতেই হবে৷ আমি বিশ্বাস করি ইউরোর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে একটা সমাধান খুঁজে পাবো আমরা৷''
ওদিকে, উদ্ধার পরিকল্পনা সম্পর্কে ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট হোসে মানুয়েল বারোসো বলেন, ‘‘এই পথের দুইটি দিক আছে৷ গ্রিস একটা অর্থনৈতিক প্রচেষ্টা নিয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে ওই প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার মধ্য দিয়ে আমরা কেবল গ্রিসকেই সহায়তা করছি না৷ আমরা ইউরোজোনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করছি৷''
বৈঠকে যোগ দিতে ব্রাসেলস-এ রওনা দেওয়ার আগে পার্লামেন্টে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বেশ স্পষ্ট ভাষাতেই বলে দিয়েছেন, অবশ্যই জার্মানির শর্তগুলো মেনেই উদ্ধার পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে হবে এবং তাতে ‘আইএমএফ' এর অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে৷
ম্যার্কেল বলেন, ‘‘যিনি দ্রুত সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন তিনিই একজন ভাল ইউরোপীয় নন৷ একজন ভাল ইউরোপীয় তিনিই যিনি ইউরোপের বিভিন্ন চুক্তি এবং দেশের জাতীয় আইনের প্রতি লক্ষ্য রাখেন এবং এমনভাবে সাহায্য করেন যাতে ইউরোজোনের স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়৷''
গ্রিসের নজিরবিহীন ঋণ সংকট এবং সংশ্লিষ্ট জটিলতায় নড়বড়ে হয়ে গেছে ইউরোপীয় দেশগুলোর একক মুদ্রা ইউরোর বাজার৷ ১৬ জাতি ইউরোজোনের স্থিতিশীলতা ধরে রেখে ইউরোর দরপতন ঠেকাতে মরিয়া ইইউ৷ ওদিকে, মেয়াদ শেষের আগেই ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা পূরণে আগামী ২৩ মে'র মধ্যে অন্ততপক্ষে ১৬ বিলিয়ন ইউরো যোগাড় করতে হবে এথেন্সকে৷ এই পরিস্থিতিতে গ্রিসকে উদ্ধারের বিষয়ে একটা কিছু সমঝোতায় পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি৷ বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস বৈঠকের অন্যতম লক্ষ্যই তাই৷
প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক