গোলাগুলির প্রভাব সীমান্তের বাজারে
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের একটি গ্রাম তুমব্রু৷ প্রতিবেশী দেশের গৃহযুদ্ধের প্রভাবে গ্রামটি প্রায় জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল কয়েকদিন আগে৷ এখন ফিরেছেন অনেকে৷ তবে বাজার জমছে না৷
তুমব্রুতে সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম তুমব্রু৷ ব্রিটিশরা এই গ্রামটিকে দুইভাগে ভাগ করে দিয়েছিল দেশভাগের সময়৷ ফলে এখন এপার ওপার দুই পাড়েই রয়েছে একই নামে গ্রাম৷ শুক্রবার সেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে৷
গোলাগুলিতে পোল্ট্রি ব্যবসায় ধস
চলতি মাসের শুরুতে মিয়ানমারে গোলাগুলির প্রভাব পড়েছে এই গ্রামে৷ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধ চলাকালে গুলিগোলা পড়েছিল এখানে৷ সেই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন গ্রামের চার বাসিন্দা৷ পোল্ট্রি ফুড ব্যবসায়ী আলী আহমেদ জানালেন, গুলিগোলার শব্দে অনেক মুরগির ছানা মারা গেছে৷ আবারো সংঘাতের আশঙ্কায় আপাতত পোল্ট্রি ব্যবসায় গুটিয়ে রেখেছেন অনেকে৷
গ্রাম ছাড়েননি নূর আলম
তুমব্রু বাজারে পান বিক্রি করেন নূর আলম৷ গত কয়েকবছর ধরে এই ব্যবসা করছেন তিনি৷ জানালেন, গোলাগুলির সময় অনেকে পালালেও তিনি যাননি৷ ভবিষ্যতে একই দশা হলেও গ্রামেই থাকবেন তিনি৷
আরো সংঘাতের আশঙ্কা
তুমব্রু বাজারের এক কোনায় রানা ধরের চুল কাটার দোকান৷ সর্বশেষ গোলাগুলির পর দোকানপাট বন্ধ ছিল৷ এখন আবার কাজ শুরু করতে পেরে খুশি তিনি৷ কিন্তু আশঙ্কায় আছেন যে মিয়ানমারের সেনারা আরাকান আর্মিকে হটাতে অভিযান শুরু করলে পালাতে হতে পারে আবার।
মাছ আছে, ক্রেতা নেই
মাছের ব্যবসায়ী নবী হোসেন (বামে) তাজা মাছ নিয়ে বসেছিলেন৷ জানালেন, সাগর থেকে তুলে আনা মাছ পাওয়া গেলেও ক্রেতা তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না৷ মাছ বিক্রি করে পেট চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে তার জন্য৷ গোলাগুলির পর শুধু ক্রেতা নয়, বিক্রেতার সংখ্যাও কমে গেছে৷
সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার পাশে কৃষিকাজ
তুমব্রুর বাসিন্দারা মূলত কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে নানা শঙ্কা থাকলেও সেখানকার স্থানীয়রা আবারও ক্ষেতে ফিরেছেন৷ কাঁটাতারের বেড়ার কাছে দুই নারীকে দেখা গেল কৃষি কাজ করতে৷ কয়েকদিন আগে ঢাকার এক সাংবাদিক সীমান্তের ফাঁক গলিয়ে মিয়ানমারে প্রবেশের ঘটনা পর সাংবাদিকদের আর সীমান্তের কাছে ভিড়তে দিচ্ছে না বিজিবি৷
সীমান্তে বেড়া সত্ত্বেও থেমে নেই পাচার
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে৷ এরমধ্যে অন্তত ২১০ কিলোমিটার কাঁটাতারে ঘেরা৷ তাসত্ত্বেও এই সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান এবং রাতের আধারে বিদ্রোহীদের যাতায়াতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷