1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজগাম্বিয়া

পরিবেশ পুনরুদ্ধারে সাহায্য করছে ম্যানগ্রোভ

৩০ মার্চ ২০২২

সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ মানুষ ও প্রাণিজগতের জন্য কতটা উপকারী, সে বিষয়ে কতটা সচেতনতা রয়েছে? আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় চাষবাসসহ একাধিক জীবিকা সুরক্ষায় ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধারের অভিনব উদ্যোগ চলছে৷

https://p.dw.com/p/49Ca9
DW Eco Africa # 304
ছবি: DW

প্রত্যেক সুপ্তাহে কাডিয়াতু কুইয়াটে ও আডেসিনা ডেভিড গাম্বিয়া নদীর ছয়টি জায়গায় পানির উপর ও নীচের ইকোসিস্টেম থেকে পরিবেশ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেন৷ প্রত্যেকটি পরিবর্তন নিখুঁতভাবে নথিভুক্ত করা হয়৷ কাডিয়াতু বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমি এখানকার তথ্য সংগ্রহ করছি, যা হলো তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বাতাসের গতি, বায়ুর শীতের মাত্রা, উচ্চতা, শিশির বিন্দু এবং বাতাসের দিক৷''

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নদীতীরের অনেক মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন করে তুলছে৷ বহু শতাব্দী ধরে তারা ছোট আকারে মাছ ধরে ও চাষবাস করে জীবনযাপন করতো৷ ম্যানগ্রোভ পানি থেকে লবণ দূর করে তা সম্ভব করতো৷ কিন্তু সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে চলায় ও আরও ঘনঘন খরার কারণে নদীর মধ্যে লবণের মাত্রা এত বেড়ে গেছে, যে তীরের অনেক গাছ মরে গেছে৷ ফলে ফাতুমাতা ব্যারোর মতো অনেক চাষীর জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে৷ চাষি হিসেবে ফাতুমাতা ব্যারো বলেন, ‘‘আমরা আগে এখানে ধান চাষ করতাম, কিন্তু এখন ফলন কমে গেছে৷ ম্যানগ্রোভ যখন সতেজ ছিল, তখন কোনো সমস্যা হয় নি৷ কিন্তু সেগুলি এখন মরে যাবার ফলে ভালো ফসল হচ্ছে না৷''

গাম্বিয়ার জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নিয়ে বেশি গবেষণা চালানো হয় নি৷ ফলে স্থানীয় ইকোসিস্টেমের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাবের পূর্বাভাস দেওয়া আরও কঠিন৷ সেই অবস্থা বদলাতে দশ জন তরুণ বিজ্ঞানী ‘জেমস' নামের উদ্যোগের প্রেরণা পেয়েছিলেন৷ ‘গ্রেট' ইনস্টিটিউটের বেটি জাহাতে বলেন, ‘‘গাম্বিয়ার পরিবেশ মনিটরিং প্রণালীর সংক্ষিপ্ত নাম ‘জেমস'৷ এটি একটি গবেষণা প্রকল্প যেখানে আমরা গাম্বিয়া নদী বরাবর পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছি৷ ঋতু ও বছর অনুযায়ী তারতম্য আমরা বোঝার চেষ্টা করছি৷''

গাম্বিয়ায় পরিবেশ রক্ষায় ম্যানগ্রোভ

কিন্তু জলপথ প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ হওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানটিকে কমিউনিটি-ভিত্তিক গোষ্ঠী ও স্থানীয় মানুষের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷ যেমন সিডি ডার্বো পেশায় সাংবাদিক হলেও রাজধানী বানজুল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে নাগরিক বিজ্ঞানী হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন৷ সিডি বলেন, ‘‘সিটিজেন ডেটা কালেক্টর হিসেবে তথ্য সংগ্রহ করা এবং প্রতি সপ্তাহে তাদের কাছে সেগুলি  পাঠানোই আমার দায়িত্ব৷ সেইসঙ্গে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকেও তথ্য সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দিতে হয়৷ আমি এই প্রকল্পে অংশ নিতে চেয়েছিলাম, কারণ, এই জায়গাটি দেখলে ইতোমধ্যে মৃত বলে মনে হবে৷''

নদীর নীচের অংশে সেই ব্যাপক ক্ষতির চিহ্ন দেখা যায়৷ প্রায় খালি প্রান্তরে ম্যানগ্রোভের ডগা মাথা উঁচু করে রয়েছে৷ ফলে উপকূল আর সুরক্ষিত নেই৷ নদীর জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে খেতে সেচের সুযোগও আর নেই৷ ম্যানগ্রোভ হারিয়ে যাবার ফলে মাছ ও পানির অন্যান্য প্রাণীর বাসভূমি ও বংশবৃদ্ধির জায়গাও লোপ পেয়েছে৷ মিঠা পানির মাছ নদীর উৎসের দিকে চলে গেছে৷

আন্তর্জাতিক এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবীদের সাহায্যে আনসুমানা ডার্বো ম্যানগ্রোভ অরণ্য পুনরুদ্ধারের আশা করছেন৷ তবে এবার ভিন্ন ও শক্তসমর্থ ম্যানগ্রোভ প্রজাতি কাজে লাগাতে চান তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রেট ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মিলে সংগৃহীত তথ্যের মাধ্যমে পানির মধ্যে লবণের মাত্রা নির্ণয় করতে পারি৷ দ্বিতীয়ত, আমরা আমাদের ইকোসিস্টেমের মধ্যের ম্যানগ্রোভের প্রজাতি চিহ্নিত করতে পেরেছি৷ সেগুলি অনেক লবণ শুষে নেয়৷ আগে যখন কোনো গাছপালা ছিল না, তখন অনেক বেশি লবণ প্রবেশ করতো৷ এখন ম্যানগ্রোভ লবণ নিয়ন্ত্রণ ও শুষে নেবার ফলে ধানের খেতে লবণের মাত্রা অনেক কমে গেছে৷''

২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে গাম্বিয়া নদী অববাহিকায় ইকোসিস্টেম সংরক্ষণের লক্ষ্যে দেড় লাখেরও বেশি ম্যানগ্রোভ চারা বপন করা হয়েছে৷ বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও স্থানীয় উদ্যোগের মেলবন্ধনে সুফল পাওয়া যাচ্ছে৷

রাই/মাসা/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য