খেলাধুলায় তালেবানি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আফগান নারীরা
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে খেলাধুলায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের বাধানিষেধের সম্মুখীন হতে হচ্ছে আফগান নারীদের৷ পরিচয় প্রকাশ না করে কিছু আফগান নারী খেলায় অংশ নেয়ার ছবি তুলে জানাচ্ছেন এর প্রতিবাদ৷
অফসাইড, অনসাইড
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে নারীদের ওপর একের পর এক বিধিনিষেধের জাল বিস্তার করে চলেছে তালেবান সরকার৷ এর মধ্যে রয়েছে খেলাধুলায় অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞাও৷ কিন্তু নারীরা এর প্রতিবাদও করছেন৷ বার্তাসংস্থা এপি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দেশটির রাজধানী কাবুলে এই ছবিটি তোলে৷ নিরাপত্তাজনিত কারণে ছবির নারীদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে৷ এরা সবাই আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক সদস্য৷
খেলার দায়ে হুমকিতে
এই তরুণ স্কেটবোর্ডার স্কেটিং করেন বোরকা পরে৷ নারী এবং মেয়েদের কেবল খেলাধুলাই নিষিদ্ধ করা হয়নি, তালেবান সরকার তাদের পার্ক এবং ব্যয়ামাগারে প্রবেশও নিষিদ্ধ করেছে৷ যেসব নারীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছেন, তাদের ফোনে বা বাসা দিয়ে হুমকি দেয়া ও নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে৷
বক্সিং থেকে নকআউট
তালেবান যখন কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়, সে সময়টির কথা মনে রেখেছেন ২০ বছর বয়সি নূরা৷ সেদিনই কাবুলের এক ক্রীড়া কমপ্লেক্সে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছিলেন তিনি৷ দর্শকেরা যখন জানতে পারলো যে তালেবান সদস্যরা কাবুলের পাশে চলে এসেছে, নারী এবং মেয়েরা কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে যায়৷ এটিই ছিল নূরার শেষ টুর্নামেন্ট৷
পলাতক জীবন
নূরা একজন যোদ্ধা৷ কাবুলের একটি দরিদ্র্য এলাকায় বড় হওয়ার সুবাদে জীবনের প্রায় পুরোটাই তার কেটেছে নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে৷ কিন্তু তালেবান যখন তাকে এবং তার পরিবারকে হুমকি দেয়া শুরু করলো, তখন তারা কাবুল থেকে পালিয়ে দূরের এক প্রদেশে পৈতৃক আবাসস্থলে আশ্রয় নেন৷ এপিকে তিনি বলেন, ‘‘তালেবান আসার পর থেকে আমার নিজেকে মৃত বলেই মনে হয়৷’’
কোণঠাসা নারীরা
ছবির নারী রেসারের মতো অনেক আফগান নারীই তালেবানের কৌশলগত বিচ্ছিন্নকরণের শিকারে পরিণত হয়েছেন৷ স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে, জনসমক্ষে তাদের পুরো শরীর ঢেকে চলাফেরা করতে হয় এবং বাড়ির বাইরে কাজ করার সুযোগও একেবারেই সীমিত করে দেয়া হয়েছে৷
গেম ওভার?
কাবুলের এই নারীরা এখন বাস্কেটবল খেলার কথা চিন্তাও করতে পারেন না৷ তালেবান সরকারের ন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা নারীদের খেলার জন্য নতুন স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির কথা চিন্তা করছে৷ কিন্তু নারীদের স্কুলে পড়াশোনার ব্যাপারেও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান সরকার৷ সেই ঘোষণাও এখনও বাস্তবায়ন হয়নি৷