1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র ‘বন্ধ করছে' উত্তর কোরিয়া

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

উত্তর কোরিয়া প্রধান প্রধান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র ধ্বংস এবং তার মুখ্য পারমাণবিক স্থাপনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে৷ কিম জং উন শিগগিরই সিউল সফরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা হবে ১৯৪৫ সালের পর উত্তরের কোনো নেতার প্রথম সফর৷

https://p.dw.com/p/359Dh
Nordkorea - Korea-Gipfel in Pjöngjang: Kim Jong Un trifft Moon Jae-In
ছবি: Getty Images/Pyeongyang Press Corps

উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে কিম ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ের বৈঠকে প্রতিবেশী দুই দেশের বিবদমান অনেকগুলো বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে৷ 

তিনদিনের সফরে পিয়ংইয়ংয়ে আছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন৷ চলতি বছরে কিমের সঙ্গে তৃতীয় দফায় হচ্ছে তাঁর এই বৈঠক৷ গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং উনের বৈঠকের পর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বৈরিতা অবসানের চেষ্টা চলছে৷

বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে দুই কোরিয়ার নেতারা বেশ কয়েকটি বিষয়ে মতৈক্যের কথা তুলে ধরেন:

কোরীয় উপদ্বীপকে ‘পরমাণু অস্ত্র ও পরমাণু হুমকিমুক্ত একটি শান্তির জনপদে' রূপান্তরে একমত হয়েছেন তাঁরা৷

দুই দেশের প্রতিরক্ষা প্রধানরা জানিয়েছেন, একটি বাফার জোন এবং উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা প্রতিষ্ঠা করা হবে৷ পাশাপাশি দুই দেশের বেসামরিক এলাকা পানমুনজোম গ্রামে তল্লাশি চৌকি প্রত্যাহার এবং স্থল মাইন তুলে নেওয়া হবে৷

‘নিকট ভবিষ্যতেই' সিউল সফরের অঙ্গীকার করেছেন কিম৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে দুই কোরিয়া বিভক্ত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে উত্তরের কোনো নেতার এটাই হবে প্রথম সফর৷

Nordkorea - Korea-Gipfel in Pjöngjang: Kim Jong Un trifft Moon Jae-In
রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে কিম ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন ছবি: Getty Images/Pyeongyang Press Corps

মুন বলেছেন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা ‘স্থায়ীভাবে' নষ্ট করতে রাজি হয়েছে উত্তর কোরিয়া৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার শর্তে দেশটির প্রধান নিয়ংবিয়ন পরমাণু কমপ্লেক্স বন্ধ করতে রাজি হয়েছে তারা৷ তবে শর্তগুলো স্পষ্ট করা হয়নি৷

উভয় পক্ষই ২০৩২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সহ-আয়োজক হতে রাজি হয়েছে৷

১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলা  যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের দেহাবশেষ খুঁজে পেতে যৌথভাবে অনুসন্ধান চালানো হবে বলে দুই দেশের প্রতিরক্ষা প্রধানরা জানিয়েছেন৷

সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিমের বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যে আলোচনার সূচনা হয়েছিল, তা এগিয়েছে বুধবারের এই বৈঠকে৷

গত বছর জাতিসংঘের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার ওপর যে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তার থেকে মুক্তি এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০-১৯৫৩ কোরীয় যুদ্ধের অবসানের মধ্য দিয়ে একটি শান্তি চুক্তি চাইছে পিয়ংইয়ং৷ অপরদিকে উত্তর কোরিয়ায় ‘চূড়ান্তভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ' চায় ওয়াশিংটন৷

উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে ফিরতে মত দেওয়ার ত্রয়োদর্শ বর্ষপূর্তি ছিল বুধবার৷ এর মধ্যে ছয় দফায় পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে তারা৷

প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া

নিউ ইয়র্কভিত্তিক রাজনৈতিক ঝুঁকি বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউরেসিয়া গ্রুপ বলেছে, বুধবারের এই বৈঠক ‘চমকপ্রদ শিরোনাম উপহার দেবে, কিন্তু উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ পদক্ষেপ এগিয়ে নিতে করবে সামান্যই'৷ 

মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার রক্ষণশীল ধারার পত্রিকা চোজান ইলবোর সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘‘নেতাদের মধ্যকার চমক জাগানিয়া ঘটনাবলীতে অনেক মানুষই এখন হতাশ৷''

উত্তর কোরিয়া নিয়ে সংকটের সমাধানে এই অগ্রগতিকে ‘খুব আকর্ষণীয়' বলে অভিহিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ তবে তিনি বলছেন, ‘চূড়ান্ত সমঝোতার' জন্য উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস এবং বিদেশিদের পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়ার অঙ্গীকার করতে হবে৷

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরবেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন৷

জাপান সফররত ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ পেলেই তারা দেশটির ওপর জারি করা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে প্রস্তুত৷উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন ওই বৈঠক শুরুর আগে বলেছে, নিরাপত্তা পরিষদের ‘যথা সময়ে' উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷

‘‘সংঘাত এখন শেষ প্রান্তে,'' বলেন জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত মা ঝেআক্সু৷

এএইচ/এসিবি  (এপি/এএফপি)