1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

ক্যান্সার প্রতিরোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

৯ অক্টোবর ২০২৩

মানুষের শরীরে প্রায় নয় হাজার জেনেটিক মিউটেশন হয়৷ এই মিউটেশনগুলির বেশিরভাগই শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়৷

https://p.dw.com/p/4XILL
USA | Tragbarer Ultraschall-BH zu Erkennung von Brustkrebs
ছবি: Canan Dagdeviren/MIT

কিন্তু ভবিষ্যতে এর থেকে বিপজ্জনক কোনো রোগ হতে পারে কি না, তার ধারণা দিতে কি পারবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই?

মানুষের শরীরের বেশিরভাগ জেনেটিক মিউটেশন বা জিনগত রূপান্তর আসে পূর্বপুরুষদের থেকে৷ কিন্তু ৬৪টি রূপান্তর ঘটে আমাদের জীবদ্দশাতেই৷ এর মধ্যে কিছু আমরা পরের প্রজন্মকেও দিয়ে থাকি৷

এর মধ্যে বেশিরভাগ রূপান্তরের কোনো প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্যে না পড়লেও কিছু কিছু রূপান্তর শরীরে প্রোটিনের কার্যকারিতা কমাতে পারে, যা থেকে ক্যান্সার, ডায়বেটিস সহ হৃদরোগ দেখা যেতে পারে৷

বিজ্ঞানীরা এখন জিনগত পরীক্ষার মাধ্যমে কিছু বিশেষ রোগের সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে পারেন৷ এই কাজে মূল সাহায্য করবে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত অ্যালগরিদম৷

হয়তো আন্ড্রেয়া ডাওনিং এর জীবনও এই প্রযুক্তিই বাঁচিয়েছে৷ বয়স বিশের কোঠায় থাকার সময়েই ডাওনিং এর শরীরে বিআরসিএ১ নামের মিউটেশন পাওয়া যায়৷ বিআরসিএ১ ও বিআরসিএ২ শরীরে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে রূপান্তরিত জিনে স্তন ক্যান্সার বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার দেখা যায়৷

ডয়চে ভেলেকে ডাওনিং বলেন, ‘‘আমার পরিবারে নারীদের মধ্যে ক্যান্সারের ধারা রয়েছে৷ আমি যখন খুব ছোট, তখন আমার মায়ের শরীরে ক্যান্সার পাওয়া যায়, যা আমার শৈশবকে প্রভাবিত করেছিল৷''

স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে স্তন বাদ দেবার সিদ্ধান্ত নেন তিনি, যার পোশাকি নাম ম্যাসেকটমি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই সিদ্ধান্তগুলিই আমার জীবন বদলেছে৷ আমি জানতে চাই না এমনটা না করলে আমার জীবন কেমন হতো৷''

এআই-এর যা ভূমিকা

ডাওনিং এর অভিজ্ঞতা চিকিৎসার জগতে প্রেডিকটিভ মেডিসিন বা ভবিষ্যতমুখী চিকিৎসার অংশ, যার কেন্দ্রে রয়েছে এআই৷ এআই ব্যবহার করে ডিএনএ সিক্যুয়েন্স, মিউটেশনের প্রাণকেন্দ্র খোঁজা যায়, যাতে করে কোন মিউটেশনের কারণে শরীরে কোন রোগের ঝুঁকি রয়েছে, তা বোঝা যায়৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় জিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ক্রিস্টোফার মেসন এই গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন৷ তার মতে, এই প্রযুক্তি চিকিৎসা বিজ্ঞানের দুনিয়া আগাগোড়া বদলে দেবে ৷

তিনি বলেন, ‘‘ক্যান্সারের চিকিৎসা এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উদাহরণ৷ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা দেখতে পারি কোন ধরনের ক্যান্সারকে সবচেয়ে ভালো ঠেকানো যায়৷ কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যে আমরা ডিএনএ সিক্যুয়েন্স পেয়ে যাব, যা দিয়ে সঠিক চিকিৎসা পন্থা নির্ধারণ করা যাবে৷''

কিন্তু মেসন এও বলেন যে চিকিৎসা দুনিয়া থেকে চিকিৎসকেরা চলে যাবেন, এমনটা নয়, কিন্তু কো-পাইলটের মতো সাহায্য করতে অবশ্যই প্রয়োজন পড়বে এআই, যা ডাক্তারদের ওপর চাপও কমাবে৷

এতটা সরল নয় বাস্তবায়ন

আগের চেয়ে এখন চল বেড়েছে ‘২৩অ্যান্ডমি' বা ‘অ্যান্সেস্ট্রি'-র মতো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের পুর্বপুরুষদের খোঁজ করে৷ এতে করে জানা যায় যে কোন ধরনের রোগের চল রয়েছে আপনার পরিবারে, কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা লাভজনক নাও হতে পারে৷

ডাওনিং জানান যে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকায় তিনি ম্যাসেকটমির মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন৷ কিন্তু অন্যান্য রোগ, যেমন হৃদরোগ বা আলঝাইমার্স বা স্কিৎজোফ্রেনিয়ার ক্ষেত্রে এমন সমাধান সম্ভব নয়৷

চিকিৎসাবিজ্ঞানের নানা দিক ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই গবেষণা থেকে উঠছে তথ্য নিরাপত্তাজনিত নানা সমালোচনা৷

ফ্রেড শোয়ালার/এসএস