1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় পশ্চিমা বিশ্ব আর চীনের দূরত্ব

২৬ জুলাই ২০২৩

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছা আবারো পুনর্ব্যক্ত করেছে চীন।

https://p.dw.com/p/4UQ2G
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি: Florence Lo/REUTERS

দেশটি অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হলেও, জনগণের উপর নজরদারির বেলায় সবসময়ই তারা উপরের দিকে থাকছে।

এআই চ্যাটবট তৈরিতে চাইনিজ টেক জায়ান্টরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে তাল মেলাতে দ্রুত গতিতে কাজ করে যাচ্ছে। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি এ বছর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স খাতে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট করেছে। যা বিগত বছরের থেকে ৫০ শতাংশ বেশি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উচ্চতর গবেষণাগারগুলোর বেশিরভাগ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে হওয়ার পরেও মাইক্রোসফট চ্যাট জিপিটি আসার পূর্ব পর্যন্ত প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করতে পারেনি যে পশ্চিমা বিশ্ব এআই গবেষণায় প্রভাব বিস্তার করবে।

তাইওয়ানের কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট কাই-ফু লি ২০১৮ সালে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে চীন দ্রুত এআই পরাশক্তি হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে। সে জোর দিয়ে বলেছিলো যে প্রযুক্তিটি ইতিমধ্যে প্রাথমিক পর্যায় অতিক্রম করেছে।

লি যুক্তি দিয়েছিলেন, যে বিশ্ব এখন এআই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্রীয় নজরদারির কারণে চীন এগিয়ে রয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে চীনা জনগণের উপর নজরদারির অনুমতি বিপুল পরিমাণে তথ্য সংগ্রহের সুযোগ করে দিয়েছে।  যা এআই প্ল্যাটফর্মগুলি তাদের সিস্টেমকে সমৃদ্ধ জন্য ব্যবহার করে থাকে।

সামনে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি

পুরো পৃথিবী জুড়ে স্থাপিত অর্ধ বিলিয়নেরও বেশি সিসিটিভি ক্যমেরার অর্ধেকই চীনে স্থাপিত রয়েছে । কিন্তু লি'র সমালোচকরা বলছেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মূল চাবি এখনো পশ্চিমাদের হাতে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পল জি অ্যালেন স্কুল অফ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এ্যামিরিটাস অধ্যাপক পেড্রো ডোমিঙ্গোস ডয়চে ভেলেকে  জানিয়েছেন, "কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বড় উদ্ভাবন এখনও ঘটেনি এবং বর্তমান অবস্থান এর থেকে অনেক দূরে । সেই ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছে।

বেইজিংয়ের প্রযুক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষায়, বিশেষভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে চীনকে বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্লেয়ারে পরিণত করার রাষ্ট্রীয় নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে স্পষ্টতই সমস্যায় ফেলেছে। 

চিপ সংকটে বেইজিংয়ের লক্ষ্য অর্জন বিলম্বিত

ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণে গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনে সবচেয়ে ভালো মেমরি চিপগুলো রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যা চীনা সংস্থাগুলোর তাদের নিজস্ব উন্নত এআই ভাষার মডেললিংয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো।

সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট পল শার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘সবচেয়ে অত্যাধুনিক এআই ব্যবস্থার জন্য প্রচুর পরিমাণে হার্ডওয়্যার প্রয়োজন। যার মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার বিশেষায়িত চিপ, যেগুলো টানা কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে।‘

তিনি আরও বলেন, "চীনের উপর এই নিষেধাজ্ঞা তাদের এআই তৈরি করার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করবে এবং সেই সাথে পশ্চিমের অগ্রগতি অব্যাহত থাকায় সময়ের সাথে সাথে এই ব্যবধানটি আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"

অবশ্য চীনা প্রযুক্তি সংস্থাগুলো বিকল্প ব্যবস্থার সন্ধান করছে। স্থানীয় উৎপাদকেরা তাদের নিজস্ব চিপ উন্নত করার জন্য দেশীয় সেমিকন্ডাক্টর বাজারে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

মেধাপাচার অবশ্যম্ভাবী

বেইজিংয়ের লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে।

চীনের কর্তৃত্ববাদী আচরণ দেশটির মেধাবী কর্মীদের বিদেশে চলে যেতে উৎসাহিত করছে।  চীনের শীর্ষ এআই বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। গণতান্ত্রিক জীবনধারা পছন্দ করায় তাদের অধিকাংশই পড়াশোনা এবং গবেষণা শেষ করে কাজ করার জন্য সেখানেই থেকে যাচ্ছেন।

এতো সমস্যার পরেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন চীনের এআই গবেষণাগারগুলো পশ্চিমের বর্তমান শীর্ষস্থানীয় গবেষণাগারগুলো থেকে মাত্র ১৮ মাস পিছিয়ে রয়েছে এবং দেশব্যাপি এআই প্রযুক্তি ব্যাবহারের ক্ষেত্রে দেশটি ইতিমধ্যে এগিয়ে রয়েছে।

নিক মার্টিন /এসএইচ