1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুখ্যাত বার্লিন প্রাচীর নির্মাণের ৫০ বছর পূর্তি পালন

১৩ আগস্ট ২০১১

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বার্লিন প্রাচীরের শোক ও সুখময় স্মৃতি স্মরণ করছে জার্মানির মানুষ৷ ১৯৬১ সালের এই দিনে পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মাঝে বিভক্তির দেওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/12G4F
বার্লিন প্রাচীরছবি: privat

৫০ বছর আগের সেই ঘটনা আজ নতুন করে জাগিয়ে তুলছে জার্মানদের৷

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আয়োজন করা হয় এক মিনিট নীরবতা পালনের কর্মসূচি৷ এছাড়া ১৯৬১ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত সময়ে বার্লিন প্রাচীর পাড়ি দিতে গিয়ে নিহতদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়৷ দীর্ঘ ২৮ বছরে এই প্রাচীর পেরোতে গিয়ে ১৩৬ জন ব্যক্তি প্রাণ হারান বলে সরকারি হিসাবে ধরা হয়৷ তবে ঐ সময়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম জার্মানিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে অন্তত ৬০০ থেকে ৭০০ মানুষ মারা গিয়েছে বলে মনে করা হয়৷ এই ঐতিহাসিক দিবসে জার্মান সংসদে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়৷ বার্লিন প্রাচীরের স্থানে নির্মিত উপাসনালয়ে আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনা৷ এছাড়া অন্যান্য গির্জাসমূহে বাজানো হয় শোকের ঘণ্টা৷

NO FLASH Mauer Mauerbau 50 Jahre Gedenktag Gedenken Berlin
নিহতদের প্রতি সম্মান জানাচ্ছেন চ্যান্সেলর ম্যার্কেলছবি: picture alliance/dpa

এসব অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে হাজির ছিলেন জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং বার্লিনের মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইট৷ প্রেসিডেন্ট ভুল্ফ তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘এই প্রাচীর পাড়ি দিতে গিয়ে এবং জার্মানির কেন্দ্রস্থলের সীমান্তে আরো নানাভাবে যারা প্রাণ দিয়েছে আমরা তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই৷ শ্রদ্ধা জানাই তাদের প্রতি যারা আহত হয়েছিল, যাদের কারাবন্দিত্ব বরণ করতে হয়েছিল এবং আরো সহস্রাধিক মানুষ যাদেরকে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল এই প্রাচীরের কারণে৷'' তবে শুধু তাই নয়, এমন অসংখ্য মানুষকে তাদের জীবনস্বপ্নের বলি দিতে হয়েছিল এই প্রাচীরের প্রেক্ষিতে, বলে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট ভুল্ফ৷

চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, এই ঘটনা বিশ্বের সকল জাতির স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের প্রতি সমর্থন জানানোর উপর গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে৷ জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ'কে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘১৯৬১ সালে আমি সাত বছরের শিশু ছিলাম, তবে আমি এখনও স্মরণ করতে পারি যে, এই প্রাচীর নির্মাণের ঘটনা কতটা ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল আমার পরিবারের মাঝে৷ আমরাও আমাদের চাচা-চাচি, মামা-মামি এবং দাদা-নানাদের থেকে পৃথক হয়ে পড়েছিলাম৷'' উল্লেখ্য, চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের জন্ম তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে হলেও তাঁর বয়স যখন অল্প তখনই ম্যার্কেলের পরিবার পূর্ব জার্মানিতে চলে গিয়েছিল৷ তাই এই প্রাচীরের ফলে তাঁর আত্মীয়-স্বজনরা দুই দিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন৷

ম্যার্কেল বলেন, ‘‘এই প্রাচীর নির্মাণের মাধ্যমে যে অবিচার করা হয়েছিল তা আজও আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় দেশে এবং দেশের বাইরে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং নাগরিক অধিকারের পাশে দাঁড়ানোর কথা৷'' ‘‘১৯৮৯ সালে এই ভয়ংকর স্থাপনার পতন আমাদেরকে জার্মান হিসেবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল এবং এই ঘটনায় আমরা কতটা উল্লসিত হয়েছিলাম তা কখনও ভোলার নয়,'' বলে মন্তব্য করেন ম্যার্কেল৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: জাহিদুল হক