1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যইউরোপ

কিডনি রোগের আদ্যোপান্ত

২৬ জুলাই ২০২২

কিডনি রোগ হলে সাধারণত ব্যথা হয় না এবং এটা নির্ণয় করাও কঠিন৷ তবে হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি তৈরি করে৷ ডাক্তারের কাছে নিয়মিত চেক-আপ খুব গুরুত্বপূর্ণ৷

https://p.dw.com/p/4Eec8
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি: Ben Schonewille/Zoonar/picture alliance

ফাইলে বন্দি থাকা? রেনে কাউফ কখনোই অফিস কেরানি হতে চাননি৷ তাই নার্স ছিলেন ২০ বছর৷ তবে তার কিডনিতে সমস্যা আছে৷ তাই কাজ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে তার জন্য৷

কিডনি রোগীরেনে কাউফ বলেন, ‘‘নার্সের কাজ করতে হলে আপনাকে শারীরিকভাবে সক্ষম ও সবসময় মনোযোগী থাকতে হবে৷ কিডনির কর্মক্ষমতা কমতে থাকলে সেগুলোও আর করা যায় না৷ কাজে দক্ষতা আর থাকে না৷ সহকর্মীদের আমাকে অনেক কাজে সাহায্য করতে হত৷''

ছয় বছর বয়সে কিডনিতে সিস্ট ধরা পড়ে রেনে কাউফের৷ তখন থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছেন নিয়মিত৷ তবে অনেক বছর তিনি খেলাধুলা করতে পেরেছেন৷

কিডনি রোগের অনেক কারণ আছে৷ তবে কারণগুলো সবসময় ধরা পড়ে না৷

কাউফের মতো সিস্ট পাওয়া যায় মাত্র ৭ ভাগ কিডনি রোগীর৷ ১২ ভাগের কিডনি রোগ হয় অতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে৷ প্রদাহের কারণেও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ তবে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের কারণ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস৷

মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের সফল পরীক্ষা

কিডনি আক্রান্ত হয়েছেএটা বোঝা সহজ নয়, কারণ সাধারণত এতে ব্যাথা হয় না৷ মাইনৎস ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান ইউলিয়া ভাইনমান-মেনকে একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ৷

প্রফেসর ইউলিয়া বলেন, ‘‘কিডনি রোগের এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা৷ প্রাথমিক অবস্থায় কোন লক্ষণ ধরা পড়ে না৷ যখন ধরা পড়ে, ততক্ষণে সমস্যা অনেক গভীর হয়ে যায়৷ যেমন, ক্লান্তি, অবসাদ, কিংবা চুলকানি হতে পারে৷ হয়ত আপনার মূত্রের পরিমাণ কমে গেছে কিংবা রঙ বদলে গেছে৷ কিন্তু এমন কোনো লক্ষণ চোখে পড়বে না যে আপনার মনে হবে, আমার কিডনি রোগ হয়েছে৷''

নমুনা পরীক্ষায় সম্ভাব্য কিডনি রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে৷ মূত্রে প্রোটিনের উপস্থিতি একটি লক্ষণ হতে পারে৷ কিংবা মূত্র বা রক্ত পরীক্ষা করে ডায়বেটিস আছে কি না দেখা যেতে পারে, যা কিডনির ঝুঁকির কারণ৷ 

ইউলিয়া বলেন, ‘‘আমরা ঝুঁকি ফ্যাক্টরগুলো দেখি৷ রোগীর উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা, রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি কিনা, কিংবা রোগী এমন কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কিনা, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর৷ কিংবা অটোইমিউন ডিজিজের মতো কোনো বংশগত রোগ আছে কি না, যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে৷ এরপর আপনি এই রোগের চিকিৎসা করতে পারেন এবং কিডনির ক্ষতিরোধ করতে পারেন অথবা অন্তত এর ক্ষতি হবার গতি একেবারে শ্লথ করে দিতে পারেন৷ 

যদি কিডনি কর্মক্ষমতা একেবারে কমে যায় অথবা হারিয়ে যায়, তখন কেবল ডায়লাইসিস কাজ করে৷ রক্ত পরিষ্কার করতে হয়৷

রেনে কাউফের ক্ষেত্রে স্থায়ী উচ্চ রক্তচাপ এই রোগের প্রথম লক্ষণ৷ প্রথমে নেফ্রোলজিস্টের কাছে বাৎসরিক চেকআপ এবং এরপর ৩০ বছর বয়সে ডায়লাইসিস শুরু৷ এখন তো সপ্তাহে তিনবার করতে হয়৷

বংশগতভাবে পাওয়া রোগটি রেনে কাউফ হয়তো কোনভাবেই ঠেকাতে পারতেন না৷ কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি রোগ ঠেকানো যায়৷ সঙ্গে প্রয়োজন  ডাক্তারের নিয়মিত চেকআপ৷ এই রোগনির্ণয়ের এটাই একমাত্র উপায়৷ এমনকি অল্প বয়সে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ নির্ণয় করা গেলে সঠিক উপায়ে চিকিৎসা সম্ভব৷

ক্রিস্টিন কাথ-লাউটারবাখ/জেডএ