কিছু পণ্য মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে
ভোক্তাদের কেনাকাটার সময় খুব সতর্ক হতে বলছে ইউরোপীয় কমিশন৷ কমিশন দেখেছে, খেলনা থেকে প্রসাধনী পর্যন্ত বাজারচলতি প্রায় সব পণ্যইে আছে বিপদের ঝুঁকি৷
ইউরোপে বিপজ্জনক পণ্য বাড়ছে
ইউরোপের দেশগুলো বিপজ্জনক পণ্যের হাত থেকে ক্রেতাদের বাঁচাতে গড়ে তুলেছে, ব়্যাপিড অ্যালার্ট সিস্টেম ফর ডেঞ্জারাস নন-ফুড কনজিউমার প্রডাক্টস বা ব়্যাপেক্স৷ ব়্যাপেক্সের কাজই হলো, খাদ্যদ্রব্য ছাড়া বাজারের সব বিপজ্জনক পণ্য চিহ্নিত করে সেগুলো সম্পর্কে ক্রেতাদের অবহিত করা৷ গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ইন্সপেক্টররা ২,৪৩৫টি ক্ষতিকর পণ্য ‘নিষিদ্ধ’ করেছে৷ ২০১৪ সালে ২,৩৬৪টি পণ্য নিষিদ্ধ হয়েছিল৷
তবু আতঙ্ক কমছেনা
ক্রেতারা সরল বিশ্বাসে পণ্য করেন বলে কখন যে তাঁদের কী ক্ষতি হচ্ছে তা অনেকে খেয়াল করেননা, বোঝেনওনা৷ তাই ক্রেতাদের সতর্ক করতে প্রতি বছর বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইউরোপীয় কমিশন৷ তারপরও অবশ্য কিছু বিপজ্জনক পণ্য বাজারে থেকেই যায়৷
সবচেয়ে বেশি বিপদের ঝুঁকি শিশুদের
শিশুদের কিছু খেলনার প্রতি ক্রেতার আকর্ষণ কমছেইনা৷ বিপজ্জনক খেলনার তালিকায় সবচেয়ে ওপরে রয়েছে আলো জ্বালানো যায় এমন কিছু খেলনা৷ ক্যানসারে আক্রান্ত করতে পারে এমন কিছু খেলনাও শিশুদের খুব প্রিয়৷ এছাড়া যেসব খেলনার যন্ত্রাংশ ছোট এবং যেসবের কোনো প্রান্ত ধারালো বা সুঁচালো সেগুলোও খুব বিপজ্জনক৷ ২০১৪ সালে বাজার থেকে প্রচুর খেলনা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে৷ প্রত্যাহৃত পণ্যের শতকরা ২৮ ভাগই ছিল খেলনা৷
বিষাক্ত কাপড় এবং জুতা
কাপড়-চোপড় এবং অন্যান্য ফ্যাশন দ্রব্য তৈরিতে নাকি খুব বিপজ্জনক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়৷ গত বছর ইন্সপেক্টররা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষণা করার মতো পণ্যের শতকরা ২৩ ভাগই কাপড়, নয়তো কোনো ফ্যাশন দ্রব্য৷ জুতাও নাকি খুব বিপজ্জনক৷ আজকাল জুতা বা জুতার মতো অন্যান্য চামড়াজাত দ্রব্যেও থাকে বিপজ্জনক উপাদান৷
আগুন নিয়ে খেলা
গত বছর নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং লিশটেনস্টাইনসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশে যে পণ্যগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার শতকরা ৯ ভাগই ছিল ঘরবাড়িতে নিত্য ব্যবহার্য পণ্য৷ ইউরোপীয় কমিশন কিছু পণ্য ব্যবহারে সবসময়ই সতর্কতা অবলম্বন করতে বলছে৷ সেই তালিকার শীর্ষে আছে ইলেকট্রিক্যাল বা বৈদ্যুতিক পণ্য, এসবে কোনো সমস্যা থাকলে ঘরে আগুনও লেগে যেতে পারে৷
সবচেয়ে বিপজ্জনক চীন
বাজারে নিষিদ্ধ করার উপযুক্ত মোট পণ্যের তিন ভাগের দুই ভাগই চীনের তৈরি৷ চীনের পণ্য সস্তা কিন্তু খুব ভালো নয় – ইউরোপে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হতে বোধহয় বেশি সময় লাগবে না৷
ব়্যাপেক্স আছে বলে রক্ষা
ক্রেতাদের সমূহ বিপদ থেকে বাঁচাতে ২০০৩ সালে ব়্যাপেক্স গঠন করেছিল ইউরোপীয় কমিশন৷ সেই থেকে এ পর্যন্ত ১৯ হাজারেরও বেশি পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য করেছে ব়্যাপেক্স৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিচারপতি এবং ভোক্তা সুরক্ষা কমিশনার ভেরা জোরোভা মনে করেন, গত কয়েক বছরে ক্রেতাদের নিরাপত্তা দিতে অনেকটাই যথেষ্ট সাফল্য দেখিয়েছে ব়্যাপেক্স৷