কারজাইয়ের শান্তি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল তালেবান
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০জানুয়ারি মাসে লন্ডনে আয়োজিত আফগানিস্তান সম্মেলনে সেদেশের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই তালেবানদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরিয়ে আনার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক মহল তাকে সমর্থন জানায়৷ দেশে ফিরে সংসদের সম্মতিক্রমে তালেবানদের কাছে সেই প্রস্তাব পাঠান কারজাই৷ বলা হয়, অস্ত্র সমর্পণ করলে অর্থ, জমি এবং চাকরি সবকিছুই পেতে পারে তালেবান জঙ্গিরা৷ বিপুল ব্যয়ের যে পরিকল্পনার জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেই তহবিল পরিচালনা করবে আফগান সরকার৷
কিন্তু, রবিবার আফগানিস্তানের তালেবান গোষ্ঠীর মুখপাত্র কারি মহম্মদ কারজাইয়ের এই প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে বিবৃতি দেয়৷ জানানো হয়, আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসা তখনই সম্ভব হতে পারবে যখন আফগানিস্তান থেকে যাবতীয় বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করা যাবে৷ তার আগে এ ধরণের কোন প্রস্তাবে সায় দিতে রাজি নয় তালেবান৷
শুধুমাত্র কারজাইয়ের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েই থেমে যায়নি তালেবান মুখপাত্র কারি মহম্মদের বিবৃতি৷ কারজাইয়ের সমালোচনা করে মহম্মদ আরও বলেছে, তাঁকে ঘিরে থাকা ওয়ারলর্ডদের মঝখানে প্রেসিডেন্ট কারজাই একজন দুর্নীতিপরায়ণ পুতুল প্রেসিডেন্ট ব্যতীত আর কিছুই নন৷ দেশ ও জাতি কিংবা আফগানিস্তানের সরকার পরিচালনা করার মত কোন যোগ্যতাই কারজাইয়ের নেই৷
কারজাইয়ের প্রত্যাশা ছিল, ন্যাটো বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে দুর্বল হয়ে পড়া তালেবান হয়তো এই শান্তি প্রস্তাবে ঘাড় পাতবে৷ সম্প্রতি তালেবান শীর্ষনেতাদের একজন ন্যাটো বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরও কিন্তু দেখা যাচ্ছে তালেবান মনোবলে সেভাবে চিড় ধরাতে ব্যর্থ ন্যাটো অভিযান৷ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তারা বরং আরও একবগ্গা মানসিকতাই দেখিয়েছে৷
এদিকে, আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর উপস্থিতিকে ঘিরে বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে মূলত ইউরোপে৷ নেদারল্যান্ডসের জোট সরকার এই ইস্যুতেই পদত্যাগ করেছে শনিবার৷ সরকারের প্রধান জোটসঙ্গীদের বক্তব্য, আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন রাখায় রাজি নয় তারা৷ একই ইস্যুতে বার্লিনে শনিবার দেখা গেছে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ৷ জার্মানির বামপন্থী দলগুলির এক মস্তবড়ো মিছিল এদিন রাজধানীতে আয়োজন করা হয়েছিল৷ দাবি ওঠে, আফগানিস্তান থেকে জার্মান বাহিনী ফিরিয়ে নেওয়া হোক৷ কিন্তু জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলের মতে, সেরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য তা হয়ে উঠবে হুমকিস্বরূপ৷
প্রতিবেদনঃ সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনাঃ জাহিদুল হক