1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা-মৃত্যু: চীনকে ছাড়ালো অ্যামেরিকা

১ এপ্রিল ২০২০

গত ২৪ ঘণ্টায় সব চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল অ্যামেরিকা। স্পেন, ফ্রান্সেও একই পরিস্থিতি। আপাতত হজযাত্রা নয়, জানালো সৌদি আরব।

https://p.dw.com/p/3aHMf
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/U.S. Navy/M. Dimestico

মৃত্যুর পরিসংখ্যানেও চীনকে অতিক্রম করল অ্যামেরিকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সব চেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল মার্কিন মুলুকে। মারা গিয়েছেন ৮৬৫ জন। যার জেরে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল তিন হাজার ৮৭৩। যা চীনের চেয়েও বেশি। বস্তুত, এই মুহূর্তে মৃত্যুর নিরিখে তিন নম্বরে রয়েছে অ্যামেরিকা, ইটালি এবং স্পেনের পরেই। তবে আক্রান্তের পরিসংখ্যানে প্রথম স্থানে মার্কিন বিশ্ব। এক লাখ ৭৫ হাজার মানুষ এখনও পর্যন্ত সংক্রমিত। প্রতিদিনই সংখ্যাটি লাফিয়ে বাড়ছে।

পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক, এত দিনে তা অনুধাবন করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার তিনি দেশবাসীকে জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কী কী করণীয় তা নিয়ে একটি টুইটও করেছেন ট্রাম্প।

অ্যামেরিকায় নিউ ইয়র্কের পরিস্থিতি সব চেয়ে ভয়াবহ। দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ সেখানে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন। আক্রান্ত প্রায় ৭৬ হাজার। তারই মধ্যে মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের বন্দর অঞ্চলে ইউএসএনএস অর্থাৎ অ্যামেরিকার নৌসেনার জাহাজ হাসপাতাল দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু মানুষ। যা দেখে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক প্রশাসন। বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এ ধরনের আচরণ করলে নিজেকেও রক্ষা করা যাবে না, সহনাগরিকদেরও নিরাপদে থাকতে দেওয়া যাবে না। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, নিউ ইয়র্ক সহ গোটা দেশ জুড়েই করোনা আক্রান্তদের জন্য একাধিক চিকিৎসাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে হাসপাতালের বেড। তবে চিকিৎসাকর্মীদের অভিযোগ, এরই মধ্যে গ্লাভস, মাস্ক সহ বিভিন্ন চিকিৎসার প্রয়োজনীয় জিনিস ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

জার্মানিতে দ্রুত করোনা শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন

শুধু অ্যামেরিকা নয়, প্রায় গোটা বিশ্বেই গত কয়েক দিনে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়ছে আরব বিশ্বে। যার জেরে মঙ্গলবার সৌদি আরবের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, ''আপাতত কেউ যেন হজযাত্রার পরিকল্পনা না করেন।'' অর্থাৎ, আপাতত হজযাত্রায় এক প্রকার স্থগিতাদেশই ঘোষণা করেছেন তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত সকলকে অপেক্ষা করতে বলেছেন।

মঙ্গলবার করোনার ভয়াবহতা দেখেছে ইউরোপও। গত কয়েক দিন ইটালিতে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ফের তা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্পেনেও মারা গিয়েছেন বহু। ফ্রান্সে এখনও পর্যন্ত এক দিনে সব চেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটল এ দিন। ফরাসি প্রশাসন জানিয়েছে গত ২৪ গণ্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৪৯৯ জনের। মোট মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৫২৩। বুধবার পর্যন্ত স্পেনে মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ২৬৯ জনের। আর ইটালিতে সংখ্যাটি প্রায় সাড়ে ১২ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। এরই মধ্য়ে বুধবার সকালে যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল স্টার ওয়ার্সের অভিনেতা অ্যানড্রিউ জ্যাকের। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সব দেশ মিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৪২ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। আক্রান্ত আট লাখ ২০ হাজার মানুষ। তার মধ্যে মাত্র এক লাখ ৭৪ জন এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ঘোষণা করেন, করোনা পরিস্থিতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। এবং এখনও পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং প্রতিদিন আশঙ্কা আরও বাড়ছে। ক্রমশ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস। সেখান থেকেও মৃত্যুর খবর আসছে।

ভারত এবং পাকিস্তানেও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দুই গুণেরও বেশি বেড়েছে। পাকিস্তানের পরিস্থিতিও একই রকম। বাংলাদেশেও নতুন করে সংক্রমণের খবর মিলেছে। সব মিলিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতিও ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)