1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনায় শরণার্থীরা বেকায়দায়

২৮ জানুয়ারি ২০২১

জার্মানিতে সবই যেন চলছে করোনাকে ঘিরে৷ দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন শিশুদের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, ব্যবসা, শিল্প-সাহিত্যে এর প্রভাব কতটা খারাপ হতে পারে- এসব নিয়ে চলছে বিতর্ক৷ শরণার্থীরা পড়ে গেছেন আড়ালে৷

https://p.dw.com/p/3oWar
Deutschland Fachkommission Integrationsfähigkeit | Annette Widmann-Mauz und Angela Merkel
ছবি: Fabrizio Bensch/REUTERS

সামির আল জুবোরি ইরাক থেকে জার্মানিতেএসেছেন ২০২০ সালের জানুয়ারিতে৷ সেই থেকে বন শহরের শরণার্থী শিবির তার ঠিকানা৷ ৩৯ বছর বয়সি সামির করোনাকালে জার্মানির স্বাস্থ্যসেবা দেখে অভিভূত, ‘‘বিশেষ করে করোনার সময়ে জার্মানিতে থাকতে পেরে আমি খুশি, কারণ, ইরাকে স্বাস্থ্যসেবা জঘন্য৷’’

দু'দুবার করোনা-পরীক্ষা হয়েছে তার৷ ফলাফল দুবারই নেগেটিভ৷ অবশ্য শরণার্থী শিবিরের সবাই তার মতো ভাগ্যবান নয়৷ গত কয়েক মাসে এই শিবিরের ৫০ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে৷ বেশিরভাগই বয়সে তরুণ বলে ইতিমধ্যে সেরেও উঠেছেন তারা৷

তবে শিবিরের ২০০ মানুষের জীবনে নানাভাবেই খুব খারাপ প্রভাব ফেলেছে কোভিড-১৯৷ স্বাস্থ্যবিধির কঠোর প্রয়োগের কারণে খেলাধুলা বন্ধ, নেই লাইব্রেরিতে বই পত্রিকা পড়ে সময় কাটানোর সুযোগ, এক সঙ্গে বসে গল্প করা নিষেধ, যারা কাজ করতেন তাদের কর্মস্থলও বন্ধ৷

রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠছিলেন আইটি-তে পড়াশোনা করা সামির আল জুবোরি৷ ভালো লাগছিল না কর্মহীন জীবন৷ অনলাইনে কয়েক জায়গায় কাজের সুযোগ চেয়ে সাড়া পাননি৷ শেষ পর্যন্ত নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন রান্না ঘরে৷ জানালেন, ‘‘রান্নাঘরে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছি আমি৷ হেড কুকের সঙ্গে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেছি৷’’

করোনাকালে অভিবাসনপ্রত্যাশিরা অবহেলিত?

জার্মান কাউন্সিল অন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ইন্টি্গ্রেশন (বিজেডআই)-এর মেমেত কিলিচ মনে করেন করোনায় গ্রাস করা চলতি সময়ে জার্মানিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা নিঃসন্দেহে অবহেলিত৷ অনেকের মনেই ভয়,  যে-কোনোদিন হয়ত তাদের ফেরত পাঠানো হবে দেশে৷ অভিবাসনের আবেদন করে বসে আছেন অনেকেই৷ কাজ এগোচ্ছে না৷

আইনজীবি মেমেত কিলিচ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যেই বিজেডআই গড়েছিলেন ১৯৯৮ সালে৷ করোনাকালে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দুরবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তুরস্ক থেকে পালিয়ে আসা এক পুলিশ কর্মকর্তার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করলেন, ‘‘আমরা তার রাজনৈতিকি আশ্রয়ের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি৷ কিন্তু এখনো শুনানির তারিখই পাইনি৷’’ মেমেত কিলিচের মতে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্কট এখন অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ- একদিকে জার্মানিতে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ভয়, অন্যদিকে হঠাৎ কর্তৃপক্ষ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে, সেই ভয়৷

কাজ হারাচ্ছেন তারা

কিলিচ মনে করেন, মোটামুটি স্বস্তিতে জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য অভিবাসনপ্রত্যাশীদের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ বহাল থাকা উচিত৷ কিন্তু মিউনিখকেন্দ্রিক গবেষণা সংস্থা ইভোনে গিসিংয়ের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, করোনাকালেঅন্য দেশ থেকে আসা মানুষ, অর্থাৎ অভিবাসনপ্রত্যাশীরাই বেশি চাকরি হারিয়েছেন৷

চলছে দেশে ফেরানো

বেসরকারি সংস্থা প্রো আজিল-এর আইনজীবী ভিবকে জুডিথ মনে করেন, করোনা সঙ্কটের এই পর্যায়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জীবনে অতীতের একটা স্বাভাবিক অবস্থা পুরোপুরি ফিরে এসেছে৷ তার ভাষায়, ‘‘প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে এখানে যেন স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে৷ এখন আবার একেকটা গ্রুপে ভাগ করে করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে৷’’ এ প্রসঙ্গে একটু বিদ্রুপ করতেও ছাড়েননি জুডিথ, ‘‘কর্তৃপক্ষ একদিকে সবাইকে বলছে ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে, অন্যদিকে চালিয়ে যাচ্ছে জোর করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠানো৷ কী অদ্ভুত!’’

অলিভার পিপার/এসিবি