করোনাকালে জীবাণুর সঙ্গে ‘বসবাস’
ময়লার পাহাড় ঘেঁটে প্লাস্টিক এবং অন্যান্য জিনিস খুঁজে নেন মনসুর আর লতিফা৷তিন সন্তান নিয়ে বাঁচার তাগিদে করোনাকালেও জীবাণু ঘাঁটছেন প্রতিদিন৷করোনাকে ভয় পান না তারা? লতিফ বলেন, ‘‘ভয় পেলে তো পেট ভরবে না!’’
২০ বছর ধরে...
দিল্লির উপকণ্ঠে ৫২ একর জমিজুড়ে ৬০ মিটার উঁচু ময়লার স্তূপ ঘেঁটে বিক্রয়যোগ্য প্লাস্টিক এবং অন্যান্য জিনিস খুঁজে নেয়ার কাজটা ২০ বছর আগে শুরু করেছিলেন মনসুর খান আর তার স্ত্রী লতিফা বিবি৷এভাবে দিনে ৩৬৫ রূপির মতো পান আর তা দিয়েই সংসার চলে তাদের৷
জীবাণুর সঙ্গে প্রতিদিন
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে জায়গাটা একেবারে করোনা ভাইরাসের ঘাঁটি৷প্রতিদিন হাসপাতাল, নার্সিংহোম থেকে এনে প্রচুর পিপিই, করোনা টেস্ট কিট, রক্তমাখা তুলা, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ ইত্যাদি ফেলা হয় সেখানে৷মনসুর-লতিফাদের মতো কিছু দরিদ্র মানুষকে এসব ঘেঁটে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই বাঁচতে হয়৷
‘ভয় আমাদের পেট ভরাবে না’
করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আছে জেনেও ভারতের রাজধানী দিল্লিতে জীবিকা নির্বাহের জন্য এই কাজ করে যাচ্ছেন অনেকে৷ ঝুঁকির বিষয়টি মনে করিয়ে দেয়ায় ৪৪ বছর বয়সি মনসুর বলেন, ‘‘ভয় পেলে চলবে? ভয় তো আমাদের পেট ভরাবে না৷ তাই এই কাজ করতেই হবে আমাদের৷’’
সব দুর্ভাবনা সন্তানদের নিয়ে
মনসুর-লতিফা দম্পতির তিন সন্তান৷ ১৬, ১৪ আর ১১ বছর বয়সি সন্তানদের নিয়েই লতিফার যত ভয়! বললেন, ‘‘ওখান থেকে এসে বাড়িতে ঢুকতে খুব ভয় করে আমার, কারণ, বাড়িতে তো সন্তানরা থাকে!আসলে রোগটা (কোভিড-১৯) নিয়ে আমরা খুব ভয়ে আছি৷’’
দেখার কেউ নেই
সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়র্নমেন্ট-এর বায়োমেডিকেল বর্জ্য বিশেষজ্ঞ দিনেশ রাজ বান্ডেলা জানালেন, বায়োমেডিকেল বর্জ্য কোথায়, কীভাবে ফেলতে হবে এ বিষয়ে ভারতে সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে৷ তবে পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক জাতীয় কমিশনের করা সেই প্রটোকল অনেকেই মানেন না৷ তিনি বলেন, এভাবে বায়োমেডিকেল বর্জ্য ফেলে রাখার ফলে অনেকের শুধু কোভিড-১৯ নয়, হেপাটাইটিস, এইডস ইত্যাদিও হতে পারে৷