1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কংগ্রেসের পর সমাজবাদী পার্টিও ভাঙলো বিজেপি

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

কংগ্রেসের পর এবার আরেক বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি থেকেও নেতা-বিধায়কদের ভাঙাতে শুরু করলো বিজেপি।

https://p.dw.com/p/4cvc6
দলের নেতাদের সঙ্গে অখিলেশ যাদব।
সমাজবাদী পার্টি ভাঙিয়ে অখিলেশ যাদবকে ধাক্কা দিলো বিজেপি। ছবি: IANS

মঙ্গলবার সমাজবাদী পার্টি থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন বিধানসভায় অখিলেশ যাদবের দলের চিফ হুইপ মনোজ কুমার পাণ্ডে। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং হিমাচল প্রদেশে রাজ্যসভা আসনের জন্য নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের দিন চিফ হুইপকে ভাঙিয়ে নিয়ে বিজেপি অখিলেশকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।

কারণ, বিধানসভায় ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে হুইপ দেন দলের চিফ হুইপ। সেই চিফ হুইপকেই সমাজবাদী থেকে নিজেদের দিকে নিয়ে এসেছে যোগী আদিত্যনাথের দল। শুধু তাই নয়, বিধায়ক সংখ্যার হিসাবে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সাতটি আসনে জেতার কথা। সমাজবাদী পার্টির জেতার কথা তিনটি আসনে। কিন্তু বিজেপি এখানে আটজন প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে।

সোমবার দুপুর নাগাদ স্পষ্ট হয়ে যায়, উত্তরপ্রদেশে অন্তত পাঁচজন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে। অখিলেশ জানান, তৃতীয় আসনে লড়াইটা ছিল সমাজবাদী পার্টির কাছে পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে, কারা কারা অনগ্রসর, দলিত, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আছেন, কারা তাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

সোমবার রাতে দলের বিধায়কদের নৈশভোজে ডেকেছিলেন অখিলেশ। উদ্দেশ্য ছিল, দলের সব বিধায়ককে সঙ্গে রাখা। কিন্তু সেখানে দলের মোট আটজন বিধায়ক যাননি। তারা বিজেপি-র দিকে ভোট দিলে তাদের অষ্টম প্রার্থীও জিতে যাবেন। এই ধাক্কাটাও অখিলেশকে দিতে চায় বিজেপি।

অখিলেশ জানিয়ে দিয়েছেন, কেউ দলের নির্দেশ অমান্য করে বিজেপি-কে ভোট দিলে শাস্তি পেতে হবে। অখিলেশ শাস্তি দিলে তারা তখন বিজেপি-তে যোগ দিতেই পারেন।

দিন কয়েক আগেই কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি জানিয়েছিল, তারা জোট করে লোকসভা নির্বাচনে লড়বে। কংগ্রেস ১৭টি আসনে ও সমাজবাদী পার্টি ৬২টিতে। তারপর আগ্রায় রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন অখিলেশ। এরপরই বিজেপি অখিলেশের দল ভাঙলো।

হিমাচল ও কর্ণাটকের কাহিনি

হিমাচলে একজন প্রার্থীই রাজ্যসভায় জিতবেন। কংগ্রেস সেখানে ক্ষমতায়। তাদেরই আসনটি জেতা উচিত। তা সত্ত্বেও বিজেপি সেখানে প্রার্থী দিয়েছে। হিমাচলে রাজ্যসভার ভোট শেষ হওয়ার পরেই বিজেপি দাবি করেছে, কংগ্রেসের নয়জন বিধায়ক তাদের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।

কর্ণাটকে চারটি আসনের জন্য ভোটাভুটি হচ্ছে। প্রার্থী পাঁচজন।  বিজেপি ও জেডি ইউ একসঙ্গে লড়ছে। তারা একজন বেশি প্রার্থী দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস থেকে কয়েকজন বিধায়ক তাদের পার্থীকে ভোট দিতে পারেন বলে বিজেপি শিবিরের দাবি।

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া দাবি করেছেন, কংগ্রেসের সবাই দলের প্রার্থীদের ভোট দেবে। বিজেপি থেকে বরং কয়েকটি ভোট কংগ্রেস পেতে পারে।

অন্য দল থেকে বিজেপিতে

সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা অশোক চৌহান বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তামিলনাড়ুর কংগ্রেস নেত্রী বিজয় ধরণী সম্প্রতি বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। জব্বলপুরের মেয়র জগত সিং-ও রাহুল গান্ধীর দল ছেড়ে বিজেপি-কে বেছে নিয়েছেন।

সোমবারই উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের সহ সভাপতি উপেন্দ্র সিং যোগীর দলে যোগ দিয়েছেন।

এছাড়া মায়াবতীর বিএসপি ছেড়ে বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন আম্বেডকরনগরের সাংসদ রীতেশ পাণ্ডে।

তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকে-র  ১৫ জন সাবেক বিধায়ক বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন।

'চেনা ছবি'

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''লোকসভা ও বিধানসভা ভোট এবং  রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে চেনা ছবিটা আবার দেখা যাচ্ছে। বিরোধী দল ভেঙে নেতাদের বিজেপি-র দিকে যাত্রা শুরু হয়েছে। রাজ্যসভা নির্বাচনে ক্রস ভোটিং হচ্ছে। এরপর সরকার ফেলার প্রচেষ্টাও শুরু হতে পারে।''

শরদের মতে, ''এই ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়, তা সত্ত্বেও ভারতে এরকম ঘটনা আগেও হত, এখনো হচ্ছে। প্রতিটি লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই হয়ে থাকে। প্রতিবার রাজ্যসভা নির্বাচনের সময় এই ছবিটাই দেখা যায়। এবারও যাচ্ছে।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)