1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ওবায়দুল কাদের ‘দেখেন’ আপোষ, যুক্তরাষ্ট্র চায় অবাধ নির্বাচন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৪ অক্টোবর ২০২৩

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘তলে তলে আাপোষ’ হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন৷ অথচ যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখনো আসছে অন্যরকম ইঙ্গিত৷ বাস্তবতটা আসলে কী?

https://p.dw.com/p/4X6he
Bangladesch | Obaidul Quader
ছবি: DW

গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বৈঠকেও বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷

ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার সাভারের আমিনবাজারে এক সমাবেশে বলেন, ‘‘কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি, তলে তলে সবার সঙ্গে আপস হয়ে গেছে৷ নির্বাচন হবে, খেলা হবে৷ অক্টোবর থেকে খেলা শুরু৷ আগামী মাসে সেমিফাইনাল, জানুয়ারিতে ফাইনাল৷”

তিনি আরো বলেন, ‘‘এক সেলফি দিল্লিতে আরেক সেলফি নিউ ইয়র্কে৷ শেখ হাসিনা আর পুতুলের সঙ্গে জো বাইডেনের সেলফিতে দিল্লিতে বাজিমাত, এরপর নিউ ইয়র্ক৷ অ্যামেরিকারও দিল্লিকে দরকার৷ দিল্লির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আছে৷ আমরা দিল্লির সঙ্গে আছি৷ প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের মাধ্যমে ভারসাম্য করে ফেলেছেন৷”

রাজনীতির গুণগত মান নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে: মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান৷ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর, ২০২৩) দুপুরে হোয়াইট হাউসের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক সমন্বয়কারী জন কারবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয় নিয়ে কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করেছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়ন নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে৷”

ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান মনে করেন, ‘‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) যে ধরনের বাক্য চয়ন করেছেন একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তাতে আমাদের রাজনীতির গুণগত মান নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে৷  আন্তর্জাতিক কূটনীতি এই ধরনের ভাষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷”

তার কথা, ‘‘তিনি তার রাজনৈকি কর্মীদের ওই কথা বলে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন হয়তো৷ কিন্তু আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আমরা আন্তর্জাতিক সার্ভিলেন্স-এর মধ্যে আছি৷ সেলফি, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক আর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এইভাবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির হিসাব হয় না৷ এখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বহুমাত্রিক৷ সম্প্রতি ক্যানাডা ও ভারতের বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দেখলেই তা বোঝা যায়৷ আমাদেরও বাস্তবতা বুঝতে হবে৷ হোয়াইট হাউজের নিয়মিত ব্রিাফিংয়ে ঘুরে ফিরে বারবার বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসছে৷”

তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ঘিরেই বাংলাদেশের ওপর চাপ৷ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় স্বার্থ মাথায় রেখেই এই চাপ দিচ্ছে৷ কিন্তু আমরা তো সেই সুযোগ করে দিচ্ছি৷ যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, তাহলে তা আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে৷ তারা আরো চাপ দেয়ার সুযোগ পাবে৷”

আমি তো তলে তলে আপসের কোনো বিষয় পাচ্ছি না: মো. হুমায়ুন কবির

সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘আমি তো তলে তলে আপোষের কোনো বিষয় পাচ্ছি না৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথার তো কোনো পরিবর্তন দেখছি না৷ কারণ, গতকালই (মঙ্গলবার) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের বৈঠকের ব্যাপারে কথা বলেছে৷ তাতে তো ওই অবাধ , সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথাই বলা হয়েছে৷ আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কথা তো জো বাইডেনেরই কথা৷”

তিনি বলেন, "ওবায়দুল কাদের সাহেব পলিটিক্যাল কথা বলেছেন৷ তবে এই ধরনের কথায় কনফিউশন তৈরি হয়৷ এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অহেতুক জটিলতার সৃষ্টি হয়৷ এ ধরনের কথাবার্তা সম্পর্ক স্বাভাবিক এবং সাবলীল রাখার জন্য সহায়ক নয়৷”
‘‘সবাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করছে৷ তাই সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো তদবিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সন্তুষ্ট হবে এমনটা মনে হচ্ছে না," বলেন এই কূটনীতিক৷

তার কথা, ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা প্রয়োজন তা না করে এরকম কথা বলে একটি নির্বাচন করে ফেললে যে আন্তর্জাতিক চাপ চলে যাবে তেমন নয়৷ এরকম করলে ভবিষ্যতে তিক্ততা আরো বাড়বে৷’’

এদিকে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান