প্রেমের শহর প্যারিস
৯ জুলাই ২০১৫ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীতে শঁজেলিজে – কিংবদন্তির সেই এলিসিয়ামের প্রান্তর, যেখানে গ্রিক শূরবীরদের আত্মা শান্তি পেতো – অথবা প্যারিসের শঁজেলিজে বিশ্বের একটি সর্বাধিক পরিচিত রাজপথ হয়ে ওঠে৷
নাৎসিদের হাত থেকে প্যারিস মুক্ত হবার পর শার্ল দ্য গোল স্বয়ং এই বুলেভার্ড দিয়ে কুচকাওয়াজ করে গিয়েছিলেন৷ ফ্রান্সের জাতীয় দিবস, চোদ্দই জুলাইতে আজও এই শঁজেলিজে বরাবর মিলিটারি প্যারেড হয়৷ ত্যুর দ্য ফ্রঁস সাইকেল রেস শেষ হয় এই শঁজেলিজে-তে৷ ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স যখন ফুটবল বিশ্বকাপ জেতে, তখন ফ্যানরা এই শঁজেলিজে-তেই আনন্দোৎসব করেছিলেন৷
পুরো পথটি দেখতে হলে প্লাস দ্য লা কঁকর্দ থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে৷ প্রথমে আসবে দু'পাশের বাগান৷ তারপর শুরু হবে বিশ্বখ্যাত সেই শপিং প্যারাডাইস, যার নাম শঁজেলিজে৷ পথের শেষে রয়েছে আর্ক দ্য ত্রিয়ুম্ফ নামধারী বিজয়তোরণ৷
আলোছায়া
টুরিস্ট গাইড আদ্রিয়ঁ স্টাল্টার-এর কাছে শঁজেলিজে-র নেতিবাচক দিকটিও সুস্পষ্ট৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে, শঁজেলিজে তার নিজস্বতার অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে৷ বড় বড় লেবেলগুলো এখানে দোকান খোলে, কেননা এখানে দোকান না রাখলে চলে না৷ বিশ বছর আগেও এখানে নানা ধরনের দোকান ছিল৷''
কথাটা ঠিক৷ টুরিস্টদের কাছে শঁজেলিজে একটি ‘মাস্ট', পরম দর্শনীয় বস্তু৷ সেই সঙ্গে ‘‘লাদুরে'' দোকানটির পেস্ট্রি – এখানকার ‘মাকারঁ'-গুলি বিশ্বখ্যাত, এক একটি রং মানে এক এক রকমের স্বাদ৷ কিন্তু টুরিস্টরা বড় বড় লেবেলের দোকান থেকেও কিনতে আসেন৷ ছোট ছোট দোকানের পক্ষে শঁজেলিজে-র ভাড়া চোকানো আজ আর সম্ভব নয়৷
খানিকটা প্রেস্টিজের ব্যাপারও বটে৷ বহু ফরাসির কাছে শঁজেলিজে-র শেষে আর্ক দ্য ত্রিয়ুম্ফ বা বিজয়তোরণটি হল ‘গ্রঁ নাসিয়োঁ' – ‘মহান ফরাসি জাতির' আসল প্রতীক৷ তরুণ ফরাসিরা হয়তো ঠিক সেরকম ভাবেন না৷