এক নজরে জার্মানির বই-বাজার
বর্তমান বিশ্বে বিপন্ন বই পড়ার প্রবণতা৷ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যদিও অনলাইনে বই পড়তে আগ্রহী, কিন্তু বাজার কী বলছে? ছবিঘরে দেখুন জার্মানির বই-বাজারের হালচাল...
কেমন জার্মানির বই-বাজার?
২০১৮ সালে জার্মান সংস্থা ‘বুখরিপোর্ট’ একটি সমীক্ষায় জানিয়েছে, গত এক বছরে বই বিক্রি কমেছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ৷ অন্যদিকে বইয়ের গড় দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ৷ এখানে উল্লেখ্য, যদিও বইয়ের দোকানগুলি ২০১৭ সালে মোট নয় বিলিয়ন ইউরোর ব্যবসা করেছে, এই অঙ্কের বেশির ভাগই এসেছে কম্পিউটার ও ভিডিও গেমস বিক্রি থেকে৷
প্রকাশিত বই কী বলে?
২০১৭ সালে মোট ৮২, ৬৩৬টি বই প্রকাশিত হয় জার্মানিতে৷ এক দশক আগেও এর চেয়ে অনেক বেশি বই প্রকাশিত হতো৷ কিন্তু সংখ্যার এই তারতম্য থেকে মোটেও সম্পূর্ণ ধারণা মিলবে না৷ কারণ, এই হিসেবে বাদ পড়েছে অনলাইনে প্রকাশিত বইগুলি৷ এ ছাড়াও বাদ পড়েছে নিষিদ্ধ হওয়া ও পুনর্মুদ্রণ না হওয়া বই৷
ক্রেতারা কী কিনছেন?
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ক্রেতাদের মন এখনো পড়ে আছে ‘হার্ডকভার’ বইয়ের দিকেই৷ অন্যদিকে, অনলাইন সংস্করণের ছড়াছড়িতে হারিয়ে যেতে বসেছে ‘পেপারব্যাক’ বই৷ বাড়ছে ‘অডিওবুক’ বা শ্রাব্য-বইয়ের কদর৷
ই-বুক, না ছাপা বই?
ধারণা করা যাচ্ছিল যে, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়বে ই-বুক-এর বিক্রি৷ কিন্ত সমীক্ষায় উঠে এসেছে অন্য তথ্য৷ জার্মানিতে ই-বুক-এর তুলনায় এখনো এগিয়ে ছাপা বইয়ের বিক্রি৷ ২০১৭ সালে মোট বিক্রির মাত্র ৪ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল ই-বুক-এর দখলে, যা ছাপা বইয়ের তুলনায় বেশ কম৷
কোন বইয়ের বিক্রি বেশি?
জার্মানিতে বিক্রি হওয়া বইয়ের মোট ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ সাধারণত গল্প বা উপন্যাস৷ এর মধ্যে পাঠকের বেশি আগ্রহ রহস্য-রোমাঞ্চ বা ভূতের কাহিনীর প্রতি৷ তুলনায় হাস্যকৌতুক বা শিশুসাহিত্যের কদর কমই৷
বহির্বিশ্বে জার্মান বই
এখনো সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইংরেজিতে লেখা বইগুলি৷ ফলে যে যে দেশে ইংরেজি সাহিত্যের চর্চা বেশি, সেই দেশের বই-ব্যবসাই লাভের মুখ দেখে৷ এই হিসাবে জার্মানি অনেকটাই পিছিয়ে৷ তবুও ২০১৭ সালে জার্মানি থেকে প্রকাশিত মোট ৭, ৮৫৬টি বই অন্যান্য ভাষায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে৷
দোকানের কী অবস্থা?
বই পড়ার প্রচলিত ধারণাগুলি আস্তে আস্তে পুরোনো হলেও বইয়ের দোকানগুলি অতটা বিপন্ন নয়৷ জার্মানিতে এখনো রমরমিয়ে চলে বইয়ের দোকান এবং অনলাইনে ‘আমাজন’ প্রভৃতি ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বাড়ার ফলে বইয়ের দোকানের সংজ্ঞাও দ্রুত বদলাচ্ছে৷ প্রচলিত বইয়ের দোকানদাররাও তাই আজকাল ওয়েবসাইটের সাথে নানা প্রকল্পে জড়াচ্ছেন৷ এতে লাভবান হচ্ছেন দুই পক্ষই৷