এইচআইভি এইডস এখনও চীনবাসীদের অনেকের কাছে ট্যাবু
৩১ জুলাই ২০১০বেইজিং এ সংক্রামক রোগের চিকিৎসার জন্য রয়েছে সরকারি হাসপাতাল ইউ আন৷ সেখানে নার্সরা এমন তাড়াহুড়ো করে নিচে হলের দিকে এগিয়ে যান, দেখলে মনে হয় যেন রোগীরা ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছে৷ আর নিচতলার পেছনের একটি ঘরে বিশাল একটি পোস্টারের সামনে বসে ছিলেন দুয়ানওয়াই৷ ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে ২৮ বছর বয়সি দুয়ান একজন৷ এরা ‘কোয়ায়েট গার্ডেন' নামের এক প্রকল্পের আওতায় এইচআইভি সংক্রমিতদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷
দুয়ান বলেন, ‘মানুষ যখন এইচআইভি পরীক্ষার জন্য কিংবা পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করেন তখন এখানে বসে কিছু খেতে পারেন কিংবা এইচআইভি নিয়ে শুধু কথাও বলতে পারেন৷ আসলে এটা ছাড়া অন্য কোনো জায়গাও নেই যেখানে কথা বলা যায়৷ একমাত্র এখানেই আমরা আমাদের তথ্য ও অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান করতে পারি৷'
দুয়ান নিজেও এইচআইভি পজিটিভ৷ ৪ বছর আগে তিনি সেটা জানতে পারেন৷ তিনি চান অন্যান্যরা এইডস এর ব্যাপারে সচেতন হোক৷ অথচ এখন পর্যন্ত তার নিজের মা-বাবাকেই বলেননি যে তিনি এইচআইভিতে আক্রান্ত৷ তিনি বলেন, ‘এই কলঙ্ক বয়ে বেড়ানো খুবই কষ্টকর৷ সময় আসলে আমি তাদের জানাবো৷ তারা এটা জানলে আমার চেয়ে বেশি কষ্ট পাবে৷ যতদিন পারি এই কষ্ট থেকে তাদের দূরে রাখতে চাই৷'
গত বছর ইউএন এইডস এর একটি সমীক্ষায় চীনে এইডস রোগীদের সম্পর্কে মানুষের যে মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে তা দুঃখজনক৷ চীনে এই কর্মসূচির পরিচালক মার্ক স্টিলিং বলেন, ‘দেশটিতে এইডস রোগী ও এইচআইভি আক্রান্তদের এখনও একঘরে করে রাখা হয়৷ তারা চাকরি হারায় ও তাদের সঙ্গে সামাজিকভাবে ব্যবধানও সৃষ্টি করা হয়৷'
তিনি আরও বলেন, শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ মানুষের এইডস সম্পর্কে ভুল ধারণা আছে৷ তারা এইডস বা এইচআইভি রোগীদের চপস্টিক ব্যবহার করতে চাননা৷ তাদের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকেন৷ এমনকী তাদের হাতও স্পর্শ করেননা৷ কিন্তু তারা জানেননা তাদের এই ধারণা ভুল৷
তবে এর মানে এই নয়যে, বেইজিং এ এইডস রোগীদের জন্য কিছুই করা হয়নি৷ এই কয়েক বছর আগেই চীনের জাতীয় টিভিতে এ নিয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান দেখানো হয়৷ বতর্মানে চীন কর্তৃপক্ষ এই রোগটিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক