উদ্বাস্তু সংকটে ইসলাম বিরোধী
৬ অক্টোবর ২০১৫পেগিডা, এই শব্দটি যে জার্মান কথাগুলির আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি, সেগুলি জড়ো করলে তার মানে দাঁড়ায়: প্রতীচ্যের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়রা৷ বছর খানেক আগে কয়েক'শ মানুষের ‘‘সোমবারের পদচারণ'' দিয়ে যে বিক্ষোভ আন্দোলনের শুরু, তা যে আজ এই পরিমাণ মানুষকে তাদের বহিরাগত বিদ্বেষী সমাবেশে টানতে পেরেছে, তার একটি কারণ সম্ভবত ইউরোপ তথা জার্মানির চলমান উদ্বাস্তু সংকট৷
আগুনে ঘি ঢালে সোমবার সকালে জনপ্রিয় জার্মান ট্যাবলয়েডে প্রকাশিত একটি খবর: এ বছর নাকি জার্মানিতে পনেরো লাখ উদ্বাস্তু আসতে চলেছেন, যদিও জার্মান সরকার এ যাবৎ আট লাখ উদ্বাস্তুর কথাই বলেছেন৷ খবরটা সঙ্গে সঙ্গে জার্মানিতে – এবং সেই সঙ্গে বিদেশে – ছড়িয়ে যায়৷
ড্রেসডেনের ব়্যালি অনেকেই দেখেছেন এবং রেকর্ড করেছেন৷
উদ্বাস্তুদের প্রতি ম্যার্কেলের মুক্ত দুয়ার নীতি থেকে যার শুরু, পরে তা এই বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুর থাকা-খাওয়া ও দেখাশোনার প্রশ্নে পরিণত হয় – সেই সঙ্গে জার্মানির ‘‘অভ্যর্থনা সংস্কৃতি'' নিয়ে টানাপোড়েন৷ উদ্বাস্তুদের প্রতি জার্মান জনগণের মনোভাব যে বদলাতে চলেছে, তার একাধিক লক্ষণ দেখা দিয়েছে – যা সর্বাগ্রে পরিলক্ষণ করেছেন রাজনীতিকরা৷ এই রাজনীতিকদের মধ্যে প্রথমেই আছেন, সিডিইউ দলের জোড়োয়া সিএসইউ দলের রাজনীতিকরা, যেহেতু বলকান রুটের উদ্বাস্তুরা প্রথমে সিএসইউ-এর কর্মক্ষেত্র বাভারিয়াতেই পদার্পণ করছেন৷ কিন্তু ম্যার্কেলের নিজের দল সিডিইউ-তেও উদ্বাস্তুদের সংখ্যা সীমিত করার দাবি উঠেছে৷ জোট সহযোগী সামাজিক গণতন্ত্রীরাও তা নিয়ে প্রকাশ্যে চিন্তাভাবনা করছেন৷ যেমন ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডিটমার ভয়েডকে দাবি তুলেছেন: ম্যার্কেলকে উদ্বাস্তুদের সংখ্যা কমাতে হবে৷
ইউরোপীয় উদ্বাস্তু সংকট এমন এক আকার ধারণ করছে যে, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তায় এই প্রথম আঁচড় পড়েছে; ওদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানকে ব্রাসেলসে মুশকিল আসান হিসেবে স্বাগত জানানো হচ্ছে৷ এর্দোয়ান যে এই উদ্বাস্তু সংকটে ইউরোপকে হিমশিম খেতে দেখে বিদ্রুপ করেছেন, তার কারণ আছে বৈকি৷ ২০১১ থেকে আজ অবধি সিরিয়া থেকে পলাতক উদ্বাস্তুদের মাত্র সাত শতাংশ এসেছেন ইউরোপে, তার মধ্যে তিন শতাংশ জার্মানিতে৷ সে তুলনায় তুরস্ক নিয়েছে উদ্বাস্তুদের সিংহভার: মোট ৪২ শতাংশ৷
এসি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, ডিডাব্লিউ)