1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সফল রকেট উৎক্ষেপণ

১৩ ডিসেম্বর ২০১২

টেলিভিশন ঘোষিকার মুখে বড় এক বিজয়ের খবর: রকেট উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া৷ কিন্তু এ খবর ক্ষুব্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ বহু দেশকে৷ শঙ্কিত এ দেশগুলো উত্তর কোরিয়ার প্রতি আরো কঠোর হতে বলছে জাতিসংঘকে৷

https://p.dw.com/p/171Op
FILE - In this April 8, 2012 file photo, a North Korean soldier stands in front of the country's Unha-3 rocket, slated for liftoff between April 12-16, at Sohae Satellite Station in Tongchang-ri, North Korea. Rocket sections are apparently being trucked into North Korea's northwest launch site, but some analysts are asking whether it's just a calculated bluff meant to jangle the Obama administration and influence South Korean voters ahead of Dec. 19 presidential elections in three weeks. (Foto:David Guttenfelder, File/AP/dapd).
ছবি: AP

উত্তর কোরিয়ার যে এমন পরিকল্পনা আছে তা জানাই ছিল৷ সে অনুযায়ী সফলভাবেই রকেট উৎক্ষেপণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু বলে পরিচিত এই দেশটি৷ উত্তর কোরিয়ার শত্রুতা বা বৈরি মনোভাবটা প্রথমত দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধেই৷ পঞ্চাশের দশকে (১৯৫২-৫৩) ভয়াবহ এক যুদ্ধ হয়েছিল দুই কোরিয়ার মধ্যে৷ সেখানে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়াকে৷ উত্তর কোরিয়ার পক্ষে ছিল তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের কিছু দেশ৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন আর নেই৷ বিশ্বরাজনীতির ভোল পাল্টে দেয়া এই পরিবর্তনের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য আরো অনেক ঘটনাই ঘটেছে এই বিশ্বে৷ বার্লিন প্রাচীর মাটিতে মিশেছে, পূর্ব আর পশ্চিম জার্মানি এক হয়ে আবার হয়েছে জার্মানি৷ কিন্তু কোরিয়া এক হয়নি৷ মাঝে সীমান্তরেখা রয়েছে৷ এ বিভাজন রেখার এক পাশে উত্তর আর অন্য পাশে দক্ষিণ কোরিয়া৷ ভীষণ বৈরি দুটি দেশ৷ বুধবার উত্তর কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপণে সাফল্য বৈরিতা কি আরো বাড়ালো?

দক্ষিণ কোরিয়া মনে করছে তাদের প্রতিবেশি দেশটির এ কাজ উস্কানিমূলক৷ তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ যুক্তরাষ্ট্রেরও একই বক্তব্য৷ দুটি দেশই এ নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছে৷ সেখানে উঠেছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি৷ যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, রকেট উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া বুঝিয়ে দিলো প্রযুক্তিগতভাবে তারা এখন আণবিক অস্ত্র তৈরি করে যে কোনো লক্ষ্যস্থলে আঘাত হানতে সক্ষম৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার পেছনে ইরানও রয়েছে৷ রকেট উৎক্ষেপণের আগে ইরানের একটি বিশেষজ্ঞদল উত্তর কোরিয়া ঘুরে এসেছেন বলে খবর বেরিয়েছিল পাশ্চাত্যের বেশ কিছু সংবাদপত্রে৷ ইরান এবং উত্তর কোরিয়া খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছিল৷

তবে ইরান যে উত্তর কোরিয়ার বন্ধুদেশ, এ নিয়ে সন্দেহের কোনো সুযোগ নেই৷ রকেট উৎক্ষেপণ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ব্রিটেন এমনকি জাতিসংঘও যখন উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ, তখন ইরান বলেছে উল্টো কথা৷ এমন সাফল্যের জন্য উত্তর কোরিয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছে তারা৷ ইরানের সামরিক বাহিনীর উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ জাজায়েরি সে দেশের এক পত্রিকাকে বলেছেন, ‘‘সফলভাবে রকেট উৎক্ষেপণের জন্য উত্তর কোরিয়ার জনগণকে অভিনন্দন৷ যুক্তরাষ্ট্রের মতো আধিপত্যবাদী দেশগুলো চাইলেও স্বাধীন কোনো রাষ্ট্রের অগ্রগতিতে বাধা দিতে পারে না৷''

এ সময় উত্তর কোরিয়ার এই সাফল্যকে তাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য খুব প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন ইরানের সামরিক কর্মকর্তা৷ উত্তর কোরিয়াও বলছে, তারা গবেষণা কাজের সুবিধার জন্যই রকেট উৎক্ষেপণ করেছে, কোনো রকমের যুদ্ধের প্রস্তুতি এটা নয়, কারো জন্য হুমকি তৈরির উদ্দেশ্যও তাদের নেই৷ দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ব্রিটেন তা মানছে না৷ দেশগুলোর দাবি, জাতিসংঘকে উত্তর কোরিয়ার প্রতি আরো কঠোর হতে হবে৷ এক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার বন্ধুরাষ্ট্র বলে পরিচিত চীনকেও সঙ্গে পেয়েছে তারা৷ উত্তর কোরিয়া রকেট উৎক্ষেপণ করায় চীনও অসন্তুষ্ট৷ উত্তর কোরিয়ার এ কাজের জন্য দুঃখিতও তারা৷

উত্তর কোরিয়ায় কারো অবশ্য দেশের বাইরে কে কী বলছে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই৷ বুধবার রকেট উৎক্ষেপণের পর থেকেই দেশের সব পত্রিকা এবং টেলিভিশন চ্যানেলে এটাই সবচেয়ে বড় খবর৷ টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বারবার বাজানো হচ্ছে দেশাত্ববোধক গান৷ একটি গানের প্রথম কলি, ‘‘উত্তর কোরিয়া যা বলে, তা করে দেখায়৷''

এসিবি/এআই (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য