1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঈদের মধ্যেই নির্বাচনের প্রচার শুরু হলো মিশরে

৮ নভেম্বর ২০১১

এবছর আরব বিশ্বের বেশ কিছু জায়গায় ঈদ উল আজহা’র তাৎপর্যই আলাদা৷ যেমন মিশরে একই সঙ্গে শুরু হচ্ছে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রচার অভিযান৷ কিন্তু ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশার আলো দেখছে না অনেকেই৷

https://p.dw.com/p/136Tc
কায়রোয় প্রতি বছরের মতো ঈদের উৎসব জমে উঠেছেছবি: picture-alliance/dpa

কায়রোয় প্রতি বছরের মতো ঈদের উৎসব জমে উঠেছে৷ রাজপথের উপরেই গরু, ছাগল, ভেড়া জবাই করা হচ্ছে৷ মসজিদের সামনে চত্বরে চলছে প্রার্থনা৷ কিন্তু এক বছর আগের তুলনায় মানুষের চাহিদা বদলে গেছে৷ এক ইমামের কণ্ঠে শোনা গেল এবছরের বাণী৷ তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহ সিরিয়ায় আমাদের মুসলিম ভাইবোনদের রক্ষা করুন৷ আল্লাহ ইয়েমেনে আমাদের মুসলিম ভাইবোনদের রক্ষা করুন৷ যেখানেই মুসলিমরা নিজেদের স্বাধীনতা ও ন্যয়ের জন্য লড়াই করছে, সেখানে আল্লাহ তাদের রক্ষা করুন৷''

এক বছর আগে রাষ্ট্রীয় মসজিদে ইমামরা ঈদের সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণের কামনা করতেন৷ কিন্তু মুবারক গদি হারিয়েছেন৷ মিশরের বিপ্লবের প্রায় ৯ মাস পর নভেম্বর মাসের শেষে সংসদ নির্বাচন৷ সময় খুব কম৷ ফলে ঈদ উল আজহা ও নির্বাচনী প্রচারাভিযান একই সঙ্গে শুরু হয়েছে৷

মুস্তফা মাহমুদ মসজিদের পাশে মুসলিম ব্রাদারহুড'এর লম্বা দাড়িওয়ালা সদস্যরা একটি গরু ও ৩টি ভেড়া জবাই করেছে৷ রক্তের ধারা নালার দিকে এগিয়ে চলেছে৷ মাংসের বড় বড় টুকরো রান্না করে গরিব-দুঃখীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে৷ তাদেরই একজন বললো, ‘‘উৎসবের এই দিনগুলিতে যাদের কিছুই নেই, তাদের আমরা খাবার দিচ্ছি৷ পরম করুণাময় আল্লাহ ও ইসলাম ধর্ম আমাদের এই শিক্ষাই দেয়৷''

Fastenbrechen in Ägypten Flash-Galerie
ঈদ উল আজহা ও নির্বাচনী প্রচারাভিযান একই সঙ্গে শুরু হয়েছেছবি: DW

পরিস্থিতি সত্যি বদলে গেছে৷ বহু দশক পর মুসলিম ব্রাদারহুড'এর সদস্যরা প্রকাশ্যে ঈদ পালন করতে পারছে এবং দলের হয়ে প্রচারও চালাতে পারছে৷ তারাও এই সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছে৷ একবাটি গরম ভাত হাতে এক গরিব ব্যক্তির কণ্ঠে শোনা গেল ব্রাদারহুড'এর প্রতি কৃতজ্ঞতার সুর৷ সে বললো, ‘‘আমি মুসলিম ব্রাদারহুড'কেই ভোট দেব৷ মুসলিম ব্রাদারহুড'এর দলই এখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবে৷ তারা দুর্নীতি করে না, তাদের হাত পরিষ্কার৷ এরাই মিশরের গণতান্ত্রিক ও ইসলামি ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করে তুলবে৷''

নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের অনুমান, এবারের নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুড সংসদে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আসন পেতে পারে৷ তবে নির্বাচনের প্রচারে তারা একা নেই৷ ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীও তাদের অনুগামীদের দিয়েও জোরালো নির্বাচনী প্রচারের কাজ চালাচ্ছে৷ তারা রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে অবকাঠামোর উন্নতির ঝুরিঝুরি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে৷ গিজে'র গভর্নর ড.আবদেল রহমানও তাদের মধ্যে রয়েছেন৷ আগামী বছর মিশর আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে বলে পূর্ববাণী করছেন তিনি৷

মুবারকও ঠিক এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিতেন৷ নতুন সামরিক সরকারও দেশের রাজনৈতিক বাস্তব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ সামরিক জেনারেলরা মুসলিম ব্রাদারহুড সহ অনেক রাজনৈতিক দলকে ময়দানে নামতে দিচ্ছে বটে, কিন্তু বেসামরিক কোনো সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে তাদের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই৷ ঈদের উৎসব আর কয়েক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে৷ কিন্তু যারা বিশাল ঝুঁকি নিয়ে তাহরির চত্বরে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের আনন্দ করার মতো বিশেষ কোনো কারণ আর থাকবে কি না, তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে৷ এমনই একজন বললো, ‘‘আমরা যাকে বলে শেষ অবস্থায় এসে পৌঁছেছি৷ বাস্তবে কিছুই বদলায় নি৷ জানি না, দেশ কোনদিকে এগোচ্ছে৷ কিন্তু কোনোকিছু ভাল ঠেকছে না৷''

প্রতিবেদন: মার্টিন দুর্ম / সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য