ইয়াঙ্গনের বাইরে সু চি শুরু করলেন রাজনৈতিক সফর
১৪ আগস্ট ২০১১ঘটনাস্থল উত্তর মিয়ানমারের বাগো শহর৷ সেই শহরের কাছেই থা নাট পিন নামের একটি জায়গায় এক নামজাদা প্যাগোডা বা বৌদ্ধমন্দিরে মোটের ওপর ছয় সাতশো মানুষের সামনে প্রথমে একটি লাইব্রেরির উদ্বোধন করে, কিছু বক্তব্য রাখলেন আং সাং সু চি৷ বললেন, সকলকে এক জায়গায় আসতে হবে৷ তা না হলে দেশকে গড়ে তোলা যাবে না৷ সোজা ভাষায় জাতীয় ঐক্যের সমর্থনেই শোনা গেল গণতন্ত্রপন্থী, শান্তিতে নোবেল বিজয়িনী এই বার্মিজ নেত্রীর বক্তব্য৷ ৬৬ বছরের জীবনের অনেকটাই যাঁর কেটেছে গৃহবন্দি অবস্থায়৷ মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা তিনি নির্বাচনে জিতলেও ১৯৯০ সালে তাঁর এন এল ডি দলকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি৷
গত নভেম্বরে তিনি মুক্তি পেয়েছেন গৃহবন্দি দশা থেকে৷ তারপর এর মাঝে মাত্র একবার ব্যক্তিগত তীর্থভ্রমণের জন্য ইয়াঙ্গনের কাছেই বাগান নামের একটি শহরে গিয়েছিলেন সু চি৷ সেটা ছিল নেহাতই সাধারণ সফর৷ কোন ভাষণ সেবারে শোনা যায়নি৷
এবারেও হয়তো তেমনটা হতনা৷ তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রশাসন৷ কারণ, অতীতে, ২০০৩ সালে এমনই এক রাজনৈতিক সফরে সু চি বেরোনোর পর তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলা চালিয়েছিল সশস্ত্র দুর্বৃত্তেরা৷ ধারণা করা হয়, প্রাক্তন সেনা শাসকদের সঙ্গে সম্পর্কিত কোন গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছিল৷ সে সময়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এই ঘটনায়৷ যে কারণে, ফের সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়৷ এবং তাঁর এবারের রাজনৈতিক সফর নিয়েও নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলেছিল প্রশাসন৷
তবে, সু চি-র এবারের সফরে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷ এই জনপ্রিয় নেত্রীকে একবার মাত্র চোখের দেখা দেখতে তাঁর তিন গাড়ির গাড়িবহরের পথের দুপাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়েছিল কয়েক হাজার মানুষ৷ ধ্বনি উঠেছে বারবার এই নেত্রীর দীর্ঘজীবন কামনা করে৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, সর্বশেষ নির্বাচনের পর মিয়ানমারের পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলেছে৷ এবং সেই পরিবর্তনে সু চি-র ব্যক্তিত্ব এবং জনপ্রিয়তা আর তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চলেছে অদূর ভবিষ্যতে৷
প্রতিবেদন : সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: জাহিদুল হক