1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাত কী দূর হবে ?

৫ অক্টোবর ২০০৪

গাজা ভূখন্ডের উত্তরাংশে অব্যাহত ইসরায়েলী সামরিক অভিযান নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মাঝে ইসরায়েল আর প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষ সংঘাত প্রশমিত করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে৷ ইতিমধ্যে অবশ্য এই ইসরায়েলী অপারেশনে বহু মানুষ হতাহত৷

https://p.dw.com/p/DPzx
ছবি: AP

আন্তর্জাতিক মহল থেকে ইসরায়েলের প্রতি নিজেকে বিরত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী কলিন পাওয়েল এই আশা প্রকাশ করেন যে ইসরায়েল দ্রুত তার এই জোরালো সামরিক অপারেশনের অবসান ঘটাবে৷ এ অপারেশনে ইতিমধ্যে রক্তক্ষয় ঘটে গেছে ব্যাপকভাবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনবিধি মান্য করার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে৷ এই প্রেক্ষাপটে গতকাল ইসরায়েলী সামরিক তত্ পরতা বন্ধ করার লক্ষ্যে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার হয়ে ওঠে৷

ইসরায়েলী নিরাপত্তা সূত্র থেকে বলা হয়, কোন মধ্যস্থের মাধ্যমে এই অপারেশন বন্ধ করার ব্যাপারে একটা ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চলেছে৷ তবে এই মধ্যস্থ কে বা কারা সে সম্পর্কে কিছু বলা হয় নি৷ তবে জানানো হয়েছে, উর্দ্ধতন ইসরায়েলী ও ফিলিস্তিনী নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে গোপনে গোপনে যোগাযোগ ঘটেছে৷ বলা হয়েছে , আগামী দিনগুলোতে এই আলাপ-আলোচনা আরো জোরদার হবে৷ তবে ইসরায়েলী নিরাপত্তা কর্মকর্তারা চান, দক্ষিণ ইসরালের বসতিগুলোর দিকে তাক করে ফিলিস্তিনী জঙ্গীদের তরফ থেকে কাসেম রকেট ছোঁড়া বন্ধ হোক আগে৷ তারপর ইসরায়েলী অপারেশন প্রত্যাহার করা যেতে পারে,বলছেন তাঁরা৷

প্যালেস্টাইনের মন্ত্রী সায়েব এরেকাত বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে কোন রকম সরাসরি যোগাযোগের খবর তাঁর জানা নেই৷ তবে তিনি বলেন : প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষকে ধ্বংস না করে বরং তার সঙ্গে আলোচনা করার যে-কোন ইসরায়েলী পদক্ষেপকে তিনি স্বাগত জানাবেন৷ প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত এক বেতার ভাষণে এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে ফিলিস্তিনীদের ওপর হামলা চালানোর কোন ওজর না পায় ইসরায়েলী দখলদার শক্তি৷

এই রক্তক্ষয়ী ইসরায়েলী হানায় গাজা অন্চলে শত শত বাড়ি বুলডজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ছিন্ন হয়েছে বিদ্যুত্ আর জলের লাইন৷ ধ্বংস হয়েছে ফসলের মাঠ৷ পরিকাঠামো হয়েছে সাঙ্ঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ৷ এক মানবিক সংকটের জোর আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে৷ ফিলিস্তিনী ভূখন্ডে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা মনিটর করে আসছে এরকম একটি ইসরায়েলী মানবাধিকার গ্রুপ জানিয়েছে, ইসরায়েলী অপারেশনে নিহতদের মধ্যে ৩১ জনই অসামরিক মানুষ এবং তাদের মধ্যে ১৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে৷

গতকাল মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারক টেলিভিশনে প্রচারিত জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, মিসর প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল সংকট মোচনে নতুন করে উদ্যোগী হবে৷ একই সঙ্গে চেষ্টা করবে ইরাকে শান্তি ফিরিয়ে আনতে৷ মুবারক অবশ্য তাঁর ভাষণে গাজা ভূখন্ডের উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের চলতি আক্রমণ-অভিযান সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেন নি৷ তবে তিনি দু পক্ষকেই শান্তি অর্জনের আন্তর্জাতিক সমর্থন পুষ্ট রোড ম্যাপ-এর প্রতি তাদের অঙ্গীকার মান্য করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ হোসনি মুবারক এই অভিমতও আবার নতুন করে ব্যক্ত করেছেন যে গণবিধ্বংসী অস্ত্রমুক্ত এক মধ্যপ্রাচ্যের যে ডাক দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে ইসরায়েলকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত৷ তিনি বলেন, এই অন্চলের প্রয়োজন অভিন্ন মানদন্ড যা কিনা কোন ব্যতিক্রম ছাড়া সব দেশগুলোর জন্যই প্রযোজ্য হবে৷ ওদিকে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ আবুল ঘেইত বলেছেন : তিনি মনে করেন, গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েলী সামরিক অভিযানের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর অব্যাহত নীরবতা প্রকারান্তরে ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে ঐ অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে ইসরায়েলকে৷

আব্দুল্লাহ আল ফারূক