ইসরায়েলি সৈন্যের মুক্তির সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০২০০৬ সালে গাজায় ইসরায়েলি সৈন্য গিলাত শালিত'এর অপহরণের পর থেকে যে সঙ্কট শুরু হয়েছিল, গোটা অঞ্চলের পরিস্থিতির উপর তার প্রভাব এখনো কাটে নি৷ শালিত'এর মুক্তির জন্য এতদিন জার্মানির বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘বিএনডি' ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতা চালিয়ে আসছিল৷ জার্মানির ‘ডেয়ার স্পিগেল' পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ দাবি করছে, সেই প্রচেষ্টা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে৷ হামাসের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মাহমুদ আল সহর ‘স্পিগেল'কে তাঁর পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন৷
গোটা ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের শুরুতে, যখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু ‘বিএনডি'র কাছে গিলাদ শালিত'এর মুক্তির উদ্দেশ্যে হামাসের সঙ্গে মধ্যস্থতার অনুরোধ জানান৷ গোটা অঞ্চলে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার যে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি রয়েছে, ইসরায়েল তা কাজে লাগাতে চেয়েছিল৷ ‘বিএনডি' সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে৷ গত ডিসেম্বর মাসে দুই পক্ষই এক সমঝোতা সম্পর্কে ঐক্যমতে পৌঁছয়৷ গিলাদ শালিত'এর মুক্তির বদলে ইসরায়েল প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে সেদেশের কারাগার থেকে মুক্তি দিতে তখন রাজি হয়েছিল৷ নেতানিয়াহুর দূত হাগাই হাদাস এক্ষেত্রে সরকারের সম্মতির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন৷ মাহমুদ আল সহর জানান, তিনি সিরিয়ায় গিয়ে এই বোঝাপড়া সম্পর্কে হামাস নেতা খালেদ মাশাল'এর সম্মতি আদায় করতে গিয়েছিলেন, যা মোটেই সহজ ছিল না৷
কিন্তু তারপর নেতানিয়াহু ও মন্ত্রীসভায় নিরাপত্তা কমিটি আচমকা ঐ বোঝাপড়া বাতিল করে দেয়৷ তারপর নেতানিয়াহু নতুন এক ‘চূড়ান্ত' প্রস্তাব পেশ করেন, যা আগের প্রস্তাবের তুলনায় অনেক কম আকর্ষণীয় ছিল৷ ফলে ‘বিএনডি'র জন্য পরিস্থিতি প্রবল অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে৷ এমনকি হামাসের মধ্যে আল সহরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন৷ তাছাড়া গাজায় হামাসের অনেকটা বাস্তববাদি নেতৃত্বও এই প্রশ্নে দুর্বল হয়ে পড়ে৷ অন্যদিকে সিরিয়ায় নির্বাসিত হামাসের কট্টরপন্থী নেতৃত্ব নেতানিয়াহুর আচরণের ফলে আরও কড়া মনোভাব গ্রহণ করে৷ এই পরিস্থিতিতে গিলাদ শালিত'এর ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম