ইরানেও বিক্ষোভ, কিন্তু সরকারি চাপ অনেক বেশী
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১আরব বিশ্বে এখন সব কর্তৃত্বমূলক সরকারই বিক্ষোভ, মিছিল, জমায়েত, এ'কথাগুলিতেই ভয় পান৷ এবং তেহরান সরকারও তার ব্যতিক্রম নন৷ তেহরানের পথে হাজার হাজার পুলিশ নামানোটাই প্রমাণ করে, প্রেসিডেন্ট আহমদিনেজাদের সরকার ঠিক কতোটা নার্ভাস৷
হাফ্ৎ-ই তির চত্বর, করিম খান এ্যাভেনিউ, ফেরদৌসি চত্বর এবং হাফেজ'এ অন্তত এক হাজার পুলিশ৷ ইমাম হুসেন চত্বরের আশেপাশে আরো এক হাজার৷ অপরদিকে বিক্ষোভকারীরা যেন শুধু পথে নেমেই তাদের প্রতিবাদ ঘোষণা করতে চাচ্ছেন৷ ছোট ছোট দলে তাদের নীরবে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে ইমাম হুসেন চত্বর থেকে এনঘেলাব'এর দিকে৷ বাকিরা জড়ো হচ্ছেন যেখানে পারছেন৷
পুলিশ বিরোধী নেতা মির হোসেইন মুসাভি'র বাড়ি প্রথম থেকেই অবরোধ করে রেখেছে৷ মুসাভির বাড়ি থেকে আসা-যাওয়ার পথ বন্ধ৷ সেখানে পুলিশের ভ্যান এবং অন্যান্য গাড়ি দাঁড়িয়ে৷ শোনা যাচ্ছে, তাঁর বাড়ির সব টেলিফোন লাইন, এমনকি মুসাভি ও তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনও কেটে দেওয়া হয়েছে৷
মুসাভি এবং অপর বিরোধী নেতা মেহদি কারুবি টিউনিশিয়া এবং মিশরে আরব বিদ্রোহের সমর্থনে সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন৷ এবং সরকারিভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অনুমতিও চেয়েছিলেন৷ সে আবেদন নাকচ হয়েছে এই বলে যে, বিরোধীরা স্বচ্ছন্দে আরব সংহতিমূলক সরকারি বিক্ষোভে যোগদান করতে পারতো৷ এখন ইরানের বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী এবং বাসিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী, উভয়েই বিরোধীদের হুমকি দিয়েছে৷ বাসিজ কমান্ডার রেজা নাঘদি বলেছেন, পশ্চিমি গুপ্তচররা ইরানেও টিউনিশিয়া এবং মিশরের মতো একটি বিদ্রোহের আগুন জ্বালাতে চায়৷
২০০৯ সালের ডিসেম্বরে তেহরানে ঠিক কায়রোর মতোই সব দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছিল৷ কিন্তু তেহরানের শাসকবর্গ তাদের পেটোয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে পথে নামিয়ে নির্মমভাবে সেই বিক্ষোভ দমন করেছিলেন৷ আটজন মানুষের প্রাণ যায় সেই বিক্ষোভে৷ পরে আরো দু'জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ কারাদণ্ড হয় আরো অনেকের৷ এবারও কি তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে? এই হল আসল প্রশ্ন৷
এবার বোধহয় বিরোধীরা এই নৃশংস নিপীড়নের সরাসরি মুখোমুখি হতে চাইবেন না৷ তবে এই যে সোশাল নেটওয়ার্কিং বিপ্লব, ফেসবুকের পাতায় তার অস্তিত্ব থেকে যাবে৷ এবং সেখান থেকেই সে আবার জন্ম নেবে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা