ইবোলার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে আশার আলো
২৮ নভেম্বর ২০১৪চূড়ান্ত ভ্যাকসিন তৈরিতে অবশ্য এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা৷ প্রথম ধাপে ইবোলার ভ্যাকসিন তৈরিতে যেসব ফলাফল পাওয়া গেছে, তাতে খারাপ ধরনের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ এছাড়া যেসব ব্যক্তির উপর পরীক্ষা করা হয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই পাওয়া গেছে৷ সেপ্টেম্বরে এই পরীক্ষা শুরু হয় এবং ২০ জন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির ওপর ঐ ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয় বলে খবর৷ এঁদের মধ্যে কয়েকজনকে উচ্চ মাত্রার এবং কয়েক জনকে নিম্ন মাত্রার, অর্থাৎ লোয়ার ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল৷
পরীক্ষায় দেখা গেছে যাঁদের উচ্চমাত্রার ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল, তাঁদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি৷ অর্থাৎ উচ্চ মাত্রার ডোজ গ্রহণকারীদের দেহে বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়েছে৷
এছাড়া কম মাত্রা গ্রহণকারী দুই ব্যক্তি এবং বেশি মাত্রা গ্রহণকারী সাত ব্যক্তির মধ্যে এমন এক ধরনের অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়েছে, যাকে বলা হয় বিরল অ্যান্টিবডি, বিজ্ঞানের ভাষায় যা সিডি৮টি নামে পরিচিত৷ এ ধরনের অ্যান্টিবডির গুণ হলো, যে কোনো ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা এদের অনেক বেশি৷
জানা গেছে, এই ভ্যাক্সিন গ্রহণের ফলে সৃষ্ট অ্যান্টিবডির লড়াই হবে ইবোলার জীনগত বৈশিষ্ট্যের উপর৷ অর্থাৎ এটি ইবোলা রোগীর জেনেটিক কোডকে ভেঙে দেবে৷ ফলে কারো দেহে ইবোলা প্রবেশ করলে সংক্রমিত হওয়ার আগেই অ্যান্টিবডিগুলো জেনেটিক কোডকে ভেঙে দুর্বল করে দেবে৷ বুধবার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে এই ফলাফল প্রকাশিত হয়৷
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেস বা এনআইএআইডি-র পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফাওসি বলেন, ‘‘সবচেয়ে আশার বিষয় হলো যাঁদের ওপর এটা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাঁদের দেহে বড় ধরনের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি৷ মাত্র দু'জনের ক্ষেত্রে ইনজেকশন দেয়ার ২৪ ঘণ্টা পর জ্বর এসেছিল৷''
তিনি জানান, চূড়ান্ত সাফল্যের জন্য এখনো অনেক কাজ করতে হবে৷ তবে আগামী বছরের শুরুতেই সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, আবারো নতুন একটি পরীক্ষা করা হবে এবং ৪৮ সপ্তাহ ধরে ভ্যাকসিন দেয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণ করা হবে৷
মৃতের সংখ্যা
ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন৷ এর মধ্যে অধিকাংশই পশ্চিম আফ্রিকার লাইবেরিয়া, গিনি ও সিয়েরা লিওনের বাসিন্দা ছিলেন৷
বলা বাহুল্য, ইবোলা শুধুমাত্র পশ্চিম আফ্রিকাতেই সীমাবদ্ধ নেই৷ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে আফ্রিকার বাইরেও কয়েকজন মারা গেছেন৷
এপিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)