ইন্দিরা গান্ধীর ২৭-তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
৩১ অক্টোবর ২০১১নতুন দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রমুখ৷
১৯৮৪-র আজকের দিনে দেহরক্ষীর গুলিতে শহীদ হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী৷ তাঁর মৃত্যুর ২৭-তম বার্ষিকীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশ আজ তাঁকে স্মরণ করে সশ্রদ্ধচিত্তে৷ মূল অনুষ্ঠান হয় আজ সকালে যমুনা নদীর পাড়ে ইন্দিরা গান্ধীর সমাধি শক্তিস্থলে৷ পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা দেবি সিং পাটিল, উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, লোকসভার স্পীকার মীরা কুমার, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী,রাহুল গান্ধী ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা৷ আয়োজিত হয় সর্বধর্ম প্রার্থনাসভা ও ভক্তিগীতির অনুষ্ঠান৷
জাতীয় সংহতি ও পরিবেশরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মোহন ধারিয়ার হাতে ইন্দিরা গান্ধী স্মারক পুরস্কার তুলে দেন সোনিয়া গান্ধী৷
প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনবার ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৭ এবং ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ সাল অবধি৷ঐ বছরেই তিনি নিজের দেহরক্ষী বিয়ান্ত সিং এবং সতবন্ত সিং-এর গুলিতে প্রাণ হারান৷ ঐ বছরেই পাঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে অপারেশন ব্লুস্টার-এর আদেশ দিয়েছিলেন তিনি৷ আত্মগোপন করে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ধরতে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরে হানা দেয় সেনা৷ সম্ভবত তারি বদলা নিতে শিখ দেহরক্ষীরা তাঁকে হত্যা করে৷
অপর দেহরক্ষীদের গুলিতে নিহত হয় হত্যাকারী বিয়ান্ত সিং৷ ধরা পড়ে সতবন্ত সিং৷ বিচারে তাঁর আর তাঁর সহযোগী চক্রী কেহার সিং-এর ফাঁসি হয় ৮৯ সালে৷ ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড ভারতের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়৷
ইন্দিরার জন্ম ১৯১৭ সালে৷ ৩৮-এ যোগ দেন অবিভক্ত কংগ্রেস দলে৷ বিয়ে ১৯৪২-এ সাংবাদিক ও রাজনীতিক ফিরোজ গান্ধীকে৷ বিয়ের পরই জেলে যান ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে৷ ইন্দিরা গান্ধীর ব্যক্তিত্ব ছিল কোমলে কঠোরে অনন্য৷ বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধে তাঁর ভূমিকার কথা দুই বাংলার মানুষ চিরদিন মনে রাখবে৷ শিল্পোন্নয়নে ইন্দিরা গান্ধীর নীতি ছিল নেহেরু অনুসৃত সমাজতান্ত্রিক পথ৷ দেশে খাদ্যাভাবের মোকাবিলা করতে আনেন সবুজ বিপ্লব৷ নিরাপত্তার স্বার্থে ভারতকে পরমাণু শক্তিধর করতে প্রথম পরমাণু পরীক্ষা চালান ১৯৭৪ সালে৷
দেশে জরুরি অবস্থা জারি ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রিত্বের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়৷ তাঁর জনপ্রিয়তা পড়ে যায় দ্রুত৷ স্বৈরাচারী ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় নিন্দিত হন সর্বস্তরে৷ তা সত্ত্বেও তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যকাল আজ পর্যন্ত বিশ্বে দীর্ঘতম৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক