ইটালির ফ্যাশন মঞ্চে বাংলাদেশি নারীসহ অভিবাসীরা
দেশ ছেড়ে এসেও কোথাও যেন ঘর খুঁজে পেয়েছেন মানুষগুলো। তারা মেতেছেন সৃজনশীলতার আনন্দে। ইটালির ফ্যাশন জগতে নিজেদের জায়গা খুঁজে নিতে চাইছেন কয়েকজন অভিবাসী।
রোমের ফ্যাশন শো-তে বাংলাদেশি নারী
ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাওয়া ১৯ জন অভিবাসীর ছয় মাসের একটি কোর্স শেষ হলো গত শনিবার। তারই সমাপ্তি অনুষ্ঠান ছিল জমজমাট। ইটালির 'রিফিউজিস লাইভ ফ্যাশন শো'-তে অংশ নেন বাংলাদেশি নারী ফিরদৌসী বেগম। হিজাব পরে মঞ্চে হেঁটেছেন এই ফ্যাশন ডিজাইনার।
নতুন উদ্যমে বাঁচা
দুই বছরেরও কম সময় আগে ৩৫ বছর বয়সি ইউলিয়া দোব্রোহুরস্কা ইউক্রেনীয় শহর কোনোটোপে রুশ বোমা হামলায় প্রাণ হারানোর ভয় পেয়েছিলেন। দেশ ছেড়ে আশ্রয় নেন ইটালিতে। সেখানেই 'ফ্যাশন জুয়েলার্স' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান এখন। রোমের একটি গয়নার দোকানে শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ শুরু করবেন ইউলিয়া।
ক্যাটওয়াকেও শরণার্থী
পেশাদার মডেলের পাশাপাশি রোমের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘রিফিউজিস লাইভ ফ্যাশন শো‘-র ক্যাটওয়াকের মঞ্চে পা মেলান ইউলিয়া। শরণার্থীদের দ্বারা তৈরি আটটি পোশাক এবং নানারকম নকশার গয়না পরেছিলেন ইভেন্টের মডেলরা।
সৃজনশীলতায় মুক্তি
যুদ্ধ, সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা মানুষদের মুক্তির দরজা খুলে দিয়েছিলো এই ফ্যাশন ইভেন্ট। গাম্বিয়ার অভিবাসী এবং গয়না ডিজাইনার ওউসমান থর্প অনুষ্ঠানের শেষে দর্শকদের কৃতজ্ঞতা জানান।
গয়না তৈরির কৌশল
রোমের মায়ানি ফ্যাশন একাডেমি আয়োজিত কোর্সের সময় ইউলিয়ার মতোই গয়না তৈরির প্রাথমিক খোদাইয়ের কাজ, মোম ঢালাই এবং এমবোসিং কৌশল (ছবি বা নামও যেখানে ধাতুর সাহায্যে খোদাই করা যায়) শিখেছিলেন ওলেনা জাবহোরোদনিয়াও। তিনি ইউক্রেনীয় এক শরণার্থী।
ইটালির সমাজে একাত্ম হওয়া
মায়ানি একাডেমি ১১০টি সংস্থার একটি নেটওয়ার্কের অংশ। শিল্পের মাধ্যমে ৯৫টি দেশের আশ্রয়প্রার্থী এবং শরণার্থীদের কর্মসংস্থানে একীভূতকরণের কাজ করে তারা। সংস্থাটি মনে করে, "সংস্কৃতিই স্বাস্থ্য।" মায়ানির এই কোর্সের ফলে অভিবাসীরা ইটালীয় সংস্কৃতিতে একীভূত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া ভাষা শেখারও সুযোগ ছিল। ইউক্রেনের ইয়ানা কসলভস্কাও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এখানে। তিনিও একজন জুয়েলারি ডিজাইনার।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সৃজনশীলতা
জনকার্লো সান্তোনে নামের এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রোমের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কাজ করেন। তারা ইভেন্টটি আয়োজন করে। তিনি বলেন, "এই ইভেন্টের ফলে আমরা সন্তুষ্ট কারণ যুদ্ধ এবং চরম সহিংসতার শিকার হওয়া অভিবাসীদের স্বাস্থ্যের উপর যে কেমন প্রভাব পড়তে হতে পারে, সেটা জানি।" (প্রতীকী ছবি)