ইউরো ২০২২: অজেয় জার্মানিকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের ইতিহাস
ওয়েম্বলিতে জার্মানিকে হারিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিয়েছে ইংল্যান্ড৷ শেষ মুহূর্তের গোলে এই জয়কে দেশটির নারী ফুটবলে নতুন যুগের সূচনা হিসাবে দেখছেন অনেকে৷
রেকর্ড দর্শক উপস্থিতি
নারী-পুরুষ মিলিয়ে ইউরো কাপের কোনো ম্যাচে ইতিহাসে এত দর্শক হয়নি৷ ২০২২ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দর্শক উপস্থিতি ভাঙলো অতীতের সকল পরিসংখ্যানের রেকর্ড৷ টানটান উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচটি সরাসরি উপভোগ করতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রোববার জড়ো হয়েছিলেন ৮৭ হাজার ১৯২ জন দর্শক৷
শুরুর আগেই শেষ
জার্মানির শুরুটাই ছিল বেশ মন খারাপের৷ ফাইনাল ম্যাচের কিক অফের কিছুক্ষণ আগে খেলা থেকে সরে দাঁড়ান জার্মান অধিনায়ক আলেক্সান্ডার পপ৷ দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুশীলনের সময় পেশীতে আঘাত পাওয়ায় তিনি ফাইনালে অংশ নিতে পারছেন না৷ পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফ্রমে থাকা পপের উপস্থিতিই মাঠে নিজের দলের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস এবং প্রতিপক্ষ শিবিরে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷
সমানে সমান
পুরো ম্যাচে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখাতে পারেনি কোনো দলই। ম্যাচ ইংল্যান্ড জিতলেও বল দখলে এগিয়ে ছিল জার্মানি। এমনকি গোলের জন্য ইংল্যান্ডের ১৩টির বদলে জার্মানি নিয়েছে ১৬ টি শট। তবে গোলের লক্ষ্য বরাবর শটে জার্মানির (৭টি) চেয়ে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড (৮টি)।
ফাউল-কার্ডের আধিপত্য
এবারের ইউরো কাপ আসরে সবচেয়ে বেশি ফাউল করেছে জার্মান দল৷ জার্মানির ৮২টি ফাউলের বিপরীতে ইংল্যান্ড পুরো আসরে ফাউল করেছে ৬০টি৷ ফাইনাল ম্যাচেও প্রতিপক্ষকে ঠেকাতে জার্মানি আগ্রাসি ভূমিকায় মাঠে থাকবে, ধারণাই করা হচ্ছিলো৷ ডিফেন্ডার লেনা ওবারডর্ফের নেতৃত্বে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে জার্মানি৷ কেবল প্রথমার্ধেই দুই দল মিলিয়ে ফাউল হয় ১৪টি, হলুদ কার্ড দেখেন তিনজন খেলোয়াড়৷ ওবারডর্ফ নিজেও একটি হলুদ কার্ড পেয়েছেন৷
হয়নি শেষ রক্ষা
প্রথমার্ধে জালে বল জড়াতে পারেনি কোনো পক্ষই৷ দ্বিতীয়ার্ধে ৫৬ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসাবে মাঠে নেমে প্রথম গোল করেন ইংল্যান্ডের এলা টুন৷ আনন্দ বেশিক্ষণ টেকেনি৷ ৭৯ মিনিটের মাথায় খেলায় সমতা ফেরান জার্মানির লিনা মাগুল৷ নির্ধারিত সময়ে খেলার জয়-পরাজয় মীমাংসা না হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে৷ অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ১১০ মিনিটে ইংল্যান্ডের আরেক বদলি খেলোয়াড় ক্লোয়ে কেলি দুইবারের চেষ্টায় গড়েন ইতিহাস৷
অজেয় জার্মানির পতন
জার্মানিকে এবারের কাপে দেখা হচ্ছিলো অজেয় এক শক্তি হিসাবে৷ ইংল্যান্ডকেও ফেবারিট মানা হলেও পরিসংখ্যান এবং শক্তি ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই৷ সবশেষ ২০০৯ সালেপ ইউরো ফাইনালে ৬-২ গোলে ইংলিশদের উড়িয়ে দিয়েছিল জার্মানরা৷ কিন্তু এবার নিজেদের মাঠে ইংলিশ নারী ফুটবলের ইতিহাস নতুন করে রচনার সুযোগ হাতছাড়া করেনি সিংহীরা৷