ইউনূসের প্রেরণায় ব্রাজিলে চলছে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান
১৬ মার্চ ২০১১ব্রাজিলের নারী আলেজান্ড্রা ফ্রান্সা৷ বয়স ২৫ বছর৷ চল্লিশ শতাংশ দরিদ্র মানুষের সেই দেশে তিনি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন৷ এক বছর আগে ফ্রান্সা সরোকাবা শহরে একটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যে প্রতিষ্ঠানটি মূলত গরিব তরুণ-তরুণীদের ঋণ দিয়ে থাকে৷
ফ্রান্সা তাঁর প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, যেমন দুই চাকার একটি গাড়ি কিনতে একজন তহবিল থেকে ২৪০ ডলার ঋণ নিতে পারেন৷ তিনি বলেন, তাঁর বয়স যখন ষোলো বছর ছিল, তখন তিনি বাংলাদেশের ড.মুহাম্মদ ইউনূসের কথা পড়েছিলেন৷ বলেন, ‘‘মুহাম্মদ ইউনূস গরিবের ব্যাংকার৷ গরিব কৃষক এবং গ্রামবাসীদের ক্ষুদ্রঋণের আওতায় এনে দারিদ্র্য বিমোচনে যে কাজ করা যায় তার পথ দেখিয়েছেন ইউনূস, যে কারণে তিনি ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন৷''
কিশোরী বয়সে ঐ ধারণা তাঁকে মুগ্ধ করেছিল৷ এরপর তিনি এমবিএ করেন এবং তাঁর সমাজে এই ধরণের একটি বিষয় নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায় সে ব্যাপারে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন৷ ফ্রান্সা বলেন,‘‘ মানুষের জন্য আমি সবসময় কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখি৷ আমি ভাবি এমন কিছু কেন করব না যা মানুষের উপকারে আসবে৷''
এখন তাঁর ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানটিতে চুয়াল্লিশ জন উপকারভোগী আছে৷ তাঁদের বয়স আঠারো থেকে পঁয়ত্রিশ বছর৷ তাঁরা এ পর্যন্ত তেত্রিশ হাজার ডলার ঋণ নিয়েছেন৷ তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার ডলার পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়, সাত মাসের মধ্যে যা ফেরত দিতে হয়৷ এইজন্য মাসে চার শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়৷ সুদের এই হার ইউরোপ বা অ্যামেরিকার ব্যাংকগুলোর চেয়ে বেশি হলেও ব্রাজিলে এটা খুবই কম৷ কেননা, সেদেশের সাধারণ ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিতে হলে মাসে চৌদ্দ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি হারে সুদ দিতে হয়৷
নতুন একটি দোকানের মালিক ইভেলিন গার্সিয়া৷ তিনি বলেন, ‘‘এভাবে ঋণ দিয়ে মানুষের বড় উপকার করা হচ্ছে৷ যদি আপনি একটা ব্যবসা শুরু করার স্বপ্ন দেখেন বাস্তব পরিস্থিতিতে এই ঋণের বিকল্প নেই৷''
ফ্রান্সা বলেন, গোটা ব্রাজিলে এখন এরকম তিনশ'টি ক্ষুদ্রঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তবে দেশটির আয়তন এবং জনসংখ্যার তুলনায় এটা খুব কম বলেই মনে করেন তিনি৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন