1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিইউক্রেন

ইউক্রেন: ইউরেনিয়াম অস্ত্র নিয়ে বিতর্ক কেন?

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

অ্যামেরিকা জানিয়েছে, তারা এবার ইউক্রেনকে ইউরেনিয়াম বর্জ্য থেকে বানানো ট্যাংক বিধ্বংসী গোলা দেবে।

https://p.dw.com/p/4W5kb
ইউরেনিয়াম বর্জ্য থেকে তৈরি গোলা। এটা নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে।
ইউরেনিয়াম বর্জ্য থেকে তৈরি গোলা। এটা নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। ছবি: STAN HONDA/AFP

অ্য়ামেরিকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাশিয়া বলেছে, এই সিদ্ধান্ত অমানবিক। এর ফলে মানুষ, প্রাণি ও পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়বে, সেবিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নন।

অ্যামেরিকা জানিয়েছে, আগামী জানুরায়িতে তারা ইউক্রেনকে ৩১টি আবরাম কামান দেবে। তার সঙ্গে তারা ইউরেনিয়াম বর্জ্য থেকে বানানো গোলাও দিচ্ছে। ইউক্রেনকে তারা ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের যে নতুন অস্ত্র প্যাকেজ দিচ্ছে, তার মধ্যে এই গোলা দেয়ার বিষয়টি আছে।

ইউরেনিয়াম যুদ্ধাস্ত্র কী?

ইউরেনিয়ামকে সমৃদ্ধ করার পর তার থেকে বর্জ্য পাওয়া যায়। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামে ইউ ২৩৫ আইসোটোপ প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে লাগে এবং যা দিয়ে পরমাণু অস্ত্রতৈরি হয়।

আর ইউরেনিয়াম বর্জ্যে থাকে ইউ ২৩৮ আইসোটোপ, যা অনেক কম তেজস্ক্রিয়। এই বর্জ্য দিয়েই কামানের গোলা তৈরি হয়। অন্য অস্ত্র বা গোলা-গুলি তৈরির কাজে লাগে। এর জন্য ইউ ২৩৮ আইসোটোপকে টাইটেনিয়ামের মতো ধাতুর সঙ্গে মেশাতে হয়।

এই ধরনের গোলা শক্ত ধাতুর আবরণ ভেদ করতে পারে। তাই ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র হিসাবে এটা খুবই কার্যকর। তাছাড়া অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলেই গোলায় থাকা ইউরোনিয়াম রিলিজ হয়ে যায় এবং ট্য়াংকের ভিতরে থাকা সেনারা পুড়ে মারা যান। কোনো ট্যাংক বা সাঁযোয়া যানে যদি অস্ত্র বা জ্বালানি থাকে, তাহলে সেখানে বিস্ফোরণও হয়।

ইরাক, আফগানিস্তানে ব্যবহার হয়েছে

আজ ২১টি দেশের হাতে এই ধরনের অস্ত্র আছে। অ্য়ামেরিকা স্বীকার করেছে, ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও সাবেক যুগোস্লাভিয়ায় তারা এই অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ইরাকে ২০০৩ সালে এই ধরনের গোলা বা অস্ত্র শয়ে শয়ে ব্যবহার করেছে অ্যামেরিকার সেনা।

প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?

সাধারণ ইউরেনিয়ামের তুলনায় এই ধরনের ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা ৪০ শতাংশ কম। তিন ফুট দূর থেকে তা মানুষের পোশাক বা চামড়া ভেদ করতে পারে না।

কিন্তু খুব কাছ থেকে বা দীর্ঘদিন ধরে এর সংস্পর্শে থাকলে তা মানুষের দেহকে প্রভাবিত করে এবং যার জেরে ক্যান্সার হতে পারে।

এই অস্ত্র কতটা ক্ষতিকর তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ আছে। ইন্টারন্য়াশনাল ফিজিসিয়ানস ফর প্রিভেনশন অফ নিউক্লিয়ার ওয়েপনস-এর মত হলো, এটা মানুষের  যথেষ্ট ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে।

কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আইএইএ মনে করে, এই অস্ত্র একেবারেই ক্ষতিকর নয়। ইউরোপীয় কমিশনের রিপোর্টও বলছে, পরিবেশের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাবের কোনো প্রমাণ পাওয়া য়ায়নি।

তবে মাটি ও ভূগর্ভস্থ জলের উপর এই অস্ত্রের প্রভাব কতটা পড়বে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে অ্যমেরিকাই প্রথম নয়, এর আগে ব্রিটেনও ইউক্রেনকে এই ধরনের গোলা দেয়ার কথা বলেছে।

থমাস ল্যাটশান/জিএইচ/ডিডাব্লিউ