কারণ, জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে সীমান্তে কোনো বাধা দেয়া বা শুল্ক আদায় করা হয় না৷ তবে, ইইউর উপর থেকে জোটের বাইরের অন্য দেশে বা অঞ্চলে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে নানা নিয়ম রয়েছে৷
ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে থাকার সুবিধা অনেক৷ জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে থাকা দেশগুলো এক বা একাধিক দেশের উপর দিয়ে কোথাও পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে আলাদা কোনো নিয়ম-কানুন অনুসরণ করতে হয় না৷ কারণ, এই জোটের অন্যতম মিশনই হচ্ছে জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অবাধে পণ্য, সেবা এবং বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা৷
পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে সীমান্তে কোনো বাধা বা বাড়তি শুল্ক না থাকলেও ইইউভুক্ত কিছু দেশের মহাসড়ক, সুরঙ্গ কিংবা সেতু ব্যবহারেরক্ষেত্রে টোল রয়েছে৷ দেশ অনুযায়ী সেই টোল প্রদান করতে হবে৷
তবে ইইউ জোটের ভেতর থেকে বাইরের কোনো দেশ যদি পণ্য পরিবহণ করতে চায় সেক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ অনুসরণ করতে হয়৷ সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার উপরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে কালিনিনগ্রাদে দেশটির পণ্য পরিবহণ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল৷
বাল্টিক উপকূলে লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত কালিনিনগ্রাদ রাশিয়ার একটি প্রদেশ৷ কিন্তু রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এটি সংযুক্ত নয়৷ ফলে সেখানে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে লিথুয়ানিয়াকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে রাশিয়া৷ মস্কোর প্রতিবেশী এই দেশটি ইইউভুক্ত৷
ইউক্রেনযুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইইউ৷ তখন সেসব পণ্য ট্রানজিট হিসেবে রাশিয়া কালিনিনগ্রাদে পাঠাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে শুরু হয় বিপুল বিতর্ক৷
ইইউ শেষমেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, কালিনিনগ্রাদে ইইউ ভুখণ্ডের মধ্য দিয়ে সড়ক পথে নয়, তবে রেল পথে সামরিক সরঞ্জাম ছাড়া নিষেধাজ্ঞার ভেতরে থাকা অন্যান্য পণ্য পাঠাতে পারবে রাশিয়া৷ লিথুয়ানিয়া অবশ্য অসামরিক পণ্য পরিবহণও ঠেকাতে চেয়েছিল৷ কিন্তু ইইউ তাতে সায় দেয়নি৷
কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানের ক্ষেত্রে ইইউর নীতি হচ্ছে জোটভুক্ত সব দেশের তাতে সম্মতি থাকতে হবে৷ সেই সম্মতি না থাকা অবধি জোটের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া যায় না৷