আলেপ্পো রণক্ষেত্র
২৭ জুলাই ২০১২আলেপ্পো শহরে সংঘর্ষের জের ধরে বিশাল সংখ্যক সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ বিরোধীদের সূত্র অনুযায়ী শহরের বিভিন্ন এলাকায় বোমারু হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী৷ এদিকে আলেপ্পো প্রদেশের সংসদ সদস্য ইখলাস আল বাদাউই তুরস্কে পালিয়ে গেছেন৷ সেখানে পৌঁছে তিনি বাশার আল-আসাদ প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন৷
চলমান বিদ্রোহ, গোটা দেশ জুড়ে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ ও প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও আসাদ প্রশাসনের দ্রুত পতনের সম্ভাবনা দেখছেন না অনেক বিশেষজ্ঞ৷ গত শতাব্দীর আশির দশকে প্রতিবেশী দেশ লেবাননে যেমন দীর্ঘ সময় ধরে সংকট চলেছিল, সিরিয়ার ক্ষেত্রেও তেমন অচলাবস্থার আশঙ্কা করছেন অনেকে৷ তাছাড়া খোদ আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হলেই যে সমস্যা মিটে যাবে, এমনটা আশা করা কঠিন৷ এমনকি সাবেক ইয়ুগোস্লাভিয়ার মতো জাতিগত ভিত্তিতে দেশটি কয়েকটি অংশে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে৷ উত্তরে কুর্দি জনগোষ্ঠী, দক্ষিণে দ্রুজ, উত্তর পশ্চিমে আসাদের আলোওয়াইট সম্প্রদায় নিজস্ব এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পারে৷ বাকি অংশ নিয়েই সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি সম্প্রদায়কে সন্তুষ্ট থাকতে হবে৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মন্তব্যের ভিত্তিতে এমন কিছু সম্ভাব্য পরিস্থিতির রূপরেখা তুলে ধরেছে৷
পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটার আগে প্রেসিডেন্ট আসাদ তাঁর নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে সিরিয়া ছেড়ে চলে যাবেন, এমন সম্ভাবনাও আপাতত ক্ষীণ বলে মনে করছেন অনেক পর্যবেক্ষক৷ তাছাড়া তাঁর আমলে সরকারি বাহিনীর এত হিংসাত্মক কার্যকলাপের ফলে নির্বাসনেও স্বস্তি পাবেন না তিনি৷ বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে৷
তবে যে বিষয়টি নিয়ে বিশেজ্ঞরা চিন্তিত, তা হলো মরিয়া হয়ে আসাদ প্রশাসন কী করতে পারে৷ জাতিসংঘ যাতে সিরিয়ার কোনো অংশে ‘নো ফ্লাই জোন' ঘোষণা করতে না পারে, সে কারণে সরাসরি বিমান হামলার বদলে বোমারু হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে সেনাবাহিনী৷ রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের হুমকিও শোনা গেছে৷ তুরস্ক, সৌদি আরব বা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সিরিয়া এই অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে৷ অথবা রাষ্ট্র হিসেবে সরাসরি এমন হামলা না চালিয়ে লেবাননে হেজবোল্লাহ'র মাধ্যমে ছায়া যুদ্ধ শুরু করতে পারে সিরিয়া৷
এসবি / ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)