1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আর্থিক সংকটের চেয়েও বড় ইস্যু জলবায়ু পরিবর্তন

হাফসা হোসাইন২৮ অক্টোবর ২০০৮

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সমস্যা হচ্ছে সেগুলো চলমান আর্থিক সংকটের চেয়েও বেশি ভয়াবহ৷ এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ নিকোলাস স্টার্ন৷

https://p.dw.com/p/FjFR
গলছে বরফ, বাড়ছে উচ্চতাছবি: AP

এদিকে জার্মান বিজ্ঞানীরাও সতর্ক করে দিয়েছেন, ধারণার চেয়েও আরো বেশি বাড়তে পারে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা৷

হংকং-এ কার্বন ও জলবায়ু সংক্রান্ত এক সম্মেলনে ব্রিটিশ রাজস্ব বিভাগের সাবেক অর্থনীতিবিদ নিকোলা স্টার্ন বলেছেন, চলমান আর্থিক সংকটের কারণে বিশ্ব নেতারা যদি জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি এড়িয়ে যান তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করবেন৷ ২০০৬ সালেই স্টার্ন এক রিপোর্টে আশংকা করে বলেছিলেন, পরিবেশ দূষণের জন্য জলবায়ুর যে পরিবর্তন হচ্ছে তা এক সময় গভীর নিম্নচাপের মতোই বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট বয়ে আনতে পারে৷

দুবছর আগের সেই আশংকার আঁচ যে বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়ছে তার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্বকে রক্ষায় এখনই আন্তরিক হতে হবে৷

জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আগামী বছরের শেষ নাগাদ কোপেনহাগেনে বসছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন৷ তবে পরিবেশ বাঁচাতে দূষণ কমানোর ব্যাপারে বিশ্ব নেতারা একমত হবেন কি-না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়৷ অবশ্য ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নির্গমনের মাত্রা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনার ব্যাপারে শিল্পোন্নত দেশগুলো আন্তরিক হবে বলে আশা করছেন স্টার্ন৷ তাঁর মতে, বর্তমান এই সংকটের মধ্যে প্রচলিত প্রযুক্তির পরিবর্তে জৈব প্রযুক্তির দিকে মনোযোগী হওয়ার সুযোগ এসেছে৷ সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে পরিবহনের ক্ষেত্রেও৷ আর এতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের মাত্রাও অনেক কমে যাবে৷

একই ধরনের কথা বলছে পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার গ্রিনপিস আন্দোলনও৷ এর নেতারা বলছেন, আর্থিক এই সংকটটাকে ধরে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করার সময় এসেছে৷ সম্প্রতি বার্লিনে এ ব্যাপারে একটি সমীক্ষা রিপোর্টও প্রকাশ করেছে গ্রিনপিস এবং ইউরোপিয়ান রিনিউয়্যাবল এনার্জি কাউন্সিল বা ইআরইসি৷

সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকারগুলো যদি নবায়ণযোগ্য শক্তি ও জ্বালানী উত্‌পাদনে বিনিয়োগ করে ৩৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের শিল্প গড়ে তোলে তাহলে তা দিয়ে বিশ্বের অর্ধেক বিদ্যুত্‌ শক্তি উত্‌পাদন সম্ভব হবে৷

Sinkender Wasserspiegel im Toten Meer
জার্মান বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন, ধারণার চেয়েও আরো বেশি বাড়তে পারে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাছবি: AP

আর এ কারণেই পরিবেশবাদীরা বলছেন, চলমান এই আর্থিক সংকটের সময় নবায়ণযোগ্য প্রযুক্তির পেছনে বিনিয়োগ করা হবে ফলটা হবে উইন-উইন-উইন৷ অর্থাত্‌ জ্বালানীর ক্ষেত্রে যেমন আসবে নিশ্চয়তা, তেমনি অর্থনীতিতেও সুফল আসবে৷ সর্বোপরি ভালো হবে বিশ্ব জলবায়ুর জন্যও৷

এদিকে জার্মান বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ করেছেন৷ তা হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা যে হারে বাড়ছে বলে এতদিন ধারণা করা হচ্ছিল আসলে তা বাড়ছে আরো অনেক বেশি পরিমাণ এবং আরো দ্রুত গতিতে৷ বিজ্ঞানীদের আশংকা, এই শতকেই সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে পারে ১ মিটার৷ এর আগে বলা হচ্ছিল, সমৃদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৮ থেকে ৫৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে৷

জার্মানির পোটসড্যাম ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ এর প্রধান ইউয়াখিম শেলনহুবার এবং আবহাওয়াবিদ ইয়োখেম মারোত্‌জকে দীর্ঘদিন ধরে সমৃদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা নিয়ে গবেষণার পরই এই আশংকার কথা জানিয়েছেন৷ তাঁরা বলছেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা যদি কমপক্ষে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমিয়ে আনা যায় তাহলে হয়তো এই ভয়াবহ পরিণতি এড়ানো সম্ভব৷