আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে গ্রেপ্তার চিদাম্বরম
২১ আগস্ট ২০১৯২০০৪-২০০৮ ও ২০১২-২০১৪ সালে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা পালানিয়াপ্পান চিদাম্বরম৷
২০০৬ সালে অর্থমন্ত্রী থাকার সময় তাঁর পুত্র কার্তির হয়ে ‘আইএনএক্স মিডিয়া' কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম৷ বলা হয়, উচ্চপদের সুযোগ নিয়ে পুত্রের ব্যবসার সুবিধার জন্য জেনেশুনেই ভারতের একাধিক মিডিয়া সংস্থায় ‘ফরেন ইনভেস্টমেন্ট' বা বিদেশি লগ্নি এনে দেন চিদাম্বরম৷
পরে আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডের তদন্ত শুরু হলে বারবার উঠতে থাকে সাবেক অর্থমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদাম্বরমের নাম৷ সংসদে চিদাম্বরমের পদত্যাগ দাবি করেন তৎকালীন বিরোধী দলের সদস্যরা৷ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার তখন উড়িয়ে দেয় অর্থমন্ত্রীর দুর্নীতির সম্ভাবনা৷
কিন্তু সরকার বদলের পর মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার হলেন চিদাম্বরম৷
আইএনএক্স মিডিয়া মামলা বিষয়ে বিচারপতি সুনীল গৌর বলেন যে, চিদাম্বরমই আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডের ‘কিংপিন' বা মূল ষড়যন্ত্রী৷ এরপর নিজেকে নিরাপরাধ দাবি করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন চিদাম্বরম৷ কিন্তু বুধবার এই মামলায় চিদাম্বরমের আগাম জামিনের আজ খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ অথচ, পুলিশের ‘এফআইআর’র কোথাও নেই চিদাম্বরমের নাম৷
প্রতিহিংসা না কেলেঙ্কারি?
এর মধ্যে, ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টোরেট (ইডি) জারি করেছিল চিদাম্বরমের জন্য ‘লুকআউট নোটিশ', কিন্তু চিদাম্বরমের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন ইডি-কর্তারা৷ এরপর, সিবিআই বা সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের কর্তারা বাড়িতে গিয়ে তাঁকে না পেলে, বাড়ির বাইরে আরেকটি নোটিশ টাঙিয়ে দেয়৷ সেই নোটিশ পাওয়ার দু'ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রীকে৷ এরপর, নাটকীয় কায়দায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন চিদাম্বরম৷
বাড়ির দেওয়াল টপকে ঢুকতে হয় সিবিআই কর্তাদের৷ কারণ, সেই সময়, নেতার গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন কংগ্রেস সমর্থকরা৷ নাটকীয় ভঙ্গিতে সাবেক মন্ত্রীর গ্রেপ্তার টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করে বহু ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল৷
গোটা বিষয়টিকেই কংগ্রেস নেতৃত্ব দেখছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসাবে৷ এই নিয়ে রাহুল গান্ধী বেশ কয়েকটি টুইটও করেছেন৷
সুপ্রিম কোর্টে চিদাম্বরমের প্রতিনিধিত্ব করছেন কংগ্রেসের দুই নেতা ও সাবেক মন্ত্রী কপিল সিবাল ও অভিষেক মনু সিঙভি৷ শুক্রবার আদালতে হবে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির প্রক্রিয়া৷
এসএস/কেএম (এএনআই, পিটিআই)