1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইউক্রেন

আরো বেসামরিক মানুষের দেহ উদ্ধার ইউক্রেনে

৭ এপ্রিল ২০২২

কিয়েভের কাছে হস্টমেলের একটি গ্যারাজ থেকে উদ্ধার ১১টি দেহ। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া 'যুদ্ধাপরাধ' ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

https://p.dw.com/p/49ZOW
ইউক্রেন
ছবি: Raphael Lafargue/abaca/picture alliance

ফের একাধিক দেহ উদ্ধার হলো কিয়েভের অদূরে হস্টমেল থেকে। মঙ্গলবারই ওই অঞ্চলের প্রাশনিক কর্তা জানিয়েছিলেন, প্রায় ৪০০ মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বুধবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, একটি গ্যারাজ থেকে ১১ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। বুচায় যেমন হাত বাঁধা অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়েছিল, এখানেও দেহগুলি সেভাবেই ফেলে রাখা ছিল বলে অভিযোগ। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, রাশিয়ার সেনাই এ কাজ করেছে। এছাড়াও বুচায় বেশ কিছু হস্টমেলের বেসামরিক মানুষের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ। আশপাশের অঞ্চলে তাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

বুচার ঘটনায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি

দিনকয়েক আগেই কিয়েভ এবং সংলগ্ন শহরতলী থেকে রাশিয়ার সেনা ফিরে গেছে। তারপরেই একের পর এক মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে। বুচা, হস্টমেলের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিল মৃতদেহ। বুচায় উদ্ধার হয়েছে গণকবর। এরপর হস্টমেলের গ্যারাজ থেকেও ১১ জনের দেহ উদ্ধার হলো। অভিযোগ, যাদের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তারা কেউ সেনা নয়, লড়াইয়েও অংশগ্রহণ করেননি। রাশিয়ার সেনা সাধারণ মানুষকেও ছাড়েনি।

জেলেনস্কির অভিযোগ

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অভিযোগ, রাশিয়া ইউক্রেনে যে যুদ্ধাপরাধ করেছে, তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। টেলিগ্রামের নিজস্ব চ্যানেলে প্রাত্যহিক বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, 'রাশিয়ার সেনা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তারা যে অঞ্চলগুলি এখনো দখল করে রেখেছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহগুলি।'

জেলেনস্কির অভিযোগ, রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ, বুচার ঘটনার পর গোটা বিশ্ব যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, রাশিয়া তা নিয়ে চিন্তিত। তারা জানে, আরো বহু শহরে একইধরনের যুদ্ধাপরাধ তারা করেছে। ইতিমধ্যেই তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। ফলে দ্রুত দেহ লোপাট করার চেষ্টা হচ্ছে। জেলেনস্কির অভিযোগ, গোটা ইউক্রেন জুড়ে কয়েক হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ।

জাতিসংঘের ভোট

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে ভোট হওয়ার কথা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়াকে আর থাকতে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। বুচার ঘটনার পর অ্যামেরিকা এই ভোটের আবেদন জানায়। এখনো পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘে যত ভোট হয়েছে, প্রতিটিই রাশিয়ার বিরুদ্ধে গেছে। বৃহস্পতিবারের ভোটও তেমন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এবং সেক্ষেত্রে জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে রাশিয়াকে সরে যেতে হবে।

জাতিসংঘের সাধারণ সভা ৪৭টি দেশকে চার বছরের বছরের জন্য এই মানবাধিকার কাউন্সিলে মনোনীত করে। রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশেরই সময় শেষ হবে ২০২৩ সালে। বিশেষজ্ঞদের অন্য অংশের বক্তব্য, ভোটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাব পাশ করাতে হবে। ফলে অন্য ভোটের থেকে এই ভোট অনেক কঠিন বলে মনে করছেন তারা।

সমস্যায় রাশিয়ার সাধারণ মানুষ

গোটা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা আসলে রাশিয়ার সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলছে, মন্তব্য করেছেন অ্যামেরিকায় থাকা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। সম্প্রতি রাশিয়ার দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঙ্কের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অ্যামেরিকা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্ক স্বারব্যাঙ্ক এবং চতুর্থ বৃহত্তম আলফা ব্যাঙ্ক। অধিকাংশ রাশিয়ানের সম্পত্তি এই দুই ব্যাঙ্কে গচ্ছিত বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত। অ্যামেরিকা জানিয়েছে, ওই দুই ব্যাঙ্কের সঙ্গে কোনোরকম সংযোগ রাখবে না অ্যামেরিকা। বিদেশে তাদের সম্পত্তি ফ্রিজ করা হবে। এর ফলে রাশিয়ার সাধারণ মানুষ বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানিয়েছেন অ্যামেরিকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত।

নেতাদের পরিবারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের পরিবারের সদস্যদের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অ্যামেরিকা। বিদেশে তাদের সম্পত্তিও এবার ফ্রিজ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও একাধিক রাশিয়ার প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)