আরশাদ শরিফ : পালিয়েও বাঁচতে না পারা পাকিস্তানি সাংবাদিক
তাকে সবাই চিনতেন সেনাবাহিনীর সমালোচক সাংবাদিক হিসেবে৷ একটা সাক্ষাৎকারের জন্য দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে৷ কেনিয়ায় নিহত আরশাদ শরিফের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
আরশাদ শরিফ কে?
আরশাদ শরিফ ছিলেন পাকিস্তানের এআরওয়াই টেলিভিশনের সাংবাদিক৷ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য সুপরিচিত ৫০ বছর বয়সি এ সাংবাদিকের জীবনে বিপর্যয় নিয়ে আসে একটি সাক্ষাৎকার৷
তোলপাড় সৃষ্টি করা সেই সাক্ষাৎকার
গত আগস্টে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের চিফ অফ স্টাফ শাহবাজ গিল-এর (ওপরের ছবিতে মাঝে) সাক্ষাৎকার নেন আরশাদ শরিফ৷ সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে শাহবাজ পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের প্রতি ‘অন্যায় নির্দেশ’ না মানার আহ্বান জানান৷ এআরওয়াই টেলিভিশন সেই সাক্ষাৎকার প্রচার করার পরই শুরু হয়ে যায় তোলপাড়৷
মৃত্যু এড়াতে দেশান্তরী
সাক্ষাৎকার প্রচারের পর শাহবাজ গিলকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ সাংবাদিক আরশাদ শরিফের জন্যও জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা৷ নানাভাবে হত্যার হুমকিও আসাতে থাকে৷ ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, তারপর সেখান থেকে কেনিয়ায় চলে যান আরশাদ শরিফ৷
পাকিস্তানের সাংবাদিক কেনিয়ায় নিহত
গত ২৪ অক্টোবর কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে পুলিশের গুলিতে মারা যান তিনি৷ কেনিয়ার পুলিশের দাবি, তারা তখন গাড়ি চোরদের ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছিলেন৷ গাড়ি তল্লাশির জন্য ছোট ছোট ইট ফেলে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়া হয় কিন্তু আরশাদ শরিফের গাড়ি সেই ব্যারিকেড অতিক্রম করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায়৷ থামতে বললেও না থামায় পুলিশ গুলি চালায় এবং সেই গুলিতে আহত আরশাদ পরে হাসপাতালে মারা যান৷
তদন্ত দাবি
আরশাদ শরিফের মৃত্যুকে অনেকেই কেনিয়ার পুলিশের ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে’ মৃত্যু বলে মানতে পারছেন না৷ তারা মনে করেন, আরশাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে৷ আরশাদ শরিফের আইনজীবী শোয়েব রাজ্জাক বলেন, ‘‘ সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পর সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাকে অন্য দেশে চলে যেতে বলেছিল৷ বলা হয়েছিল না গেলে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে৷ আমরা এ ঘটনার তদন্ত দাবি করছি৷’’ ছবিতে নাইরাবির হাসপাতালের কফিনে আরশাদ৷
অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
মঙ্গলবার পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট এক বিবৃতির মাধ্যমে আরশাদ হত্যার ঘটনায় নতুন করে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেয়৷ বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সংবাদ মাধ্যম এবং জনগণের মধ্যে ব্যাপক হতাশা এবং দুশ্চিন্তার কারণে স্বপ্রণোদিত হয়েই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷